নাপিতসমাজকে কাঁচকলা দেখিয়ে দিব্যি চুল কাটছেন ফুটবলাররা

জার্মানিতে সেলুন বন্ধ থাকলেও ফুটবলারদের চুলের নিত্য–নতুন ছাঁট থেমে নেইছবি: টুইটার

জার্মানির নাপিতদের রেগে যাওয়াটা যুক্তিসংগত বৈকি!

করোনাভাইরাসের কারণে পেটে লাথি পড়েছে তাঁদের। দেশটায় আবারও লকডাউন শুরু হয়েছে ১৬ ডিসেম্বর থেকে। ফলে দেশের তাবৎ চুল কাটার সেলুন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, যেন ভাইরাস না ছড়ায়।

অম্লান বদনে সরকারি সিদ্ধান্তটা মেনেও নিয়েছেন দেশের নাপিতেরা। হাজার হোক, দেশবাসীর স্বাস্থ্যসুরক্ষা নিয়ে কথা। এর মধ্যে যদি তাঁরা দেখেন, খেলোয়াড়েরা ঠিকই খেলতে নামছেন নতুন চুলের ছাঁট নিয়ে, মেজাজ ঠিক থাকে?

এ জন্য জার্মান নাপিতদের সংগঠন ‘জার্মান হেয়ারড্রেসার অ্যাসোসিয়েশন’ সরাসরি চিঠি লিখে জবাব চেয়েছে জার্মান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের কাছে। লকডাউনের মধ্যেও ফুটবলাররা কীভাবে চুল কাটছেন, নিত্যনতুন হেয়ারস্টাইল পাচ্ছেন, নাপিতেরা জানতে চেয়েছেন। প্রকাশ করেছেন ক্ষোভ।

খোলা চিঠিতে তাঁরা জানিয়েছেন, ‘চরম আশ্চর্যের সঙ্গে আমরা লক্ষ করলাম, জার্মান লিগের সর্বশেষ রাউন্ডের খেলায় অনেক ফুটবলার নতুন চুলের ছাঁট (হেয়ারস্টাইল) নিয়ে মাঠে নেমেছেন। চুল কেটেছেন কেতাদুরস্তভাবে।’

নাপিতদের অ্যাসোসিয়েশনের সন্দেহ, তাঁদের দোকানপাট বন্ধ করতে বলা হলেও খেলোয়াড়েরা ঠিকই লুকিয়ে লুকিয়ে বাসায় অন্য নাপিতদের ডেকে চুল কাটাচ্ছেন, ‘যেভাবে চুল কেটেছেন, সে স্টাইলে পেশাদার নাপিত ও আধুনিক যন্ত্রপাতি ছাড়া কাটা সম্ভব না। খেলোয়াড়দের এই পদক্ষেপ আমাদের নাপিতসমাজকে চাপে ফেলেছে। এমন হওয়ার ফলে অনেক নাপিতই তাঁদের পেশার ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয়াচ্ছন্ন হয়ে পড়ছেন।’

খেলোয়াড়দের চুল কাটা দেখে সাধারণ মানুষও করোনার নিয়ম মানতে রাজি হচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন নাপিতেরা, ‘খেলোয়াড়দের চুল কাটা দেখে সবাই অসন্তুষ্ট। শুধু তা-ই নয়, খেলোয়াড়দের হেয়ারস্টাইল দেখে অনেকেই আমাদের ফোন দিচ্ছেন, চুল কাটতে চাইছেন আর করোনার নিয়ম ভাঙতে চাইছেন।’

যাঁরা লুকিয়ে খেলোয়াড়দের চুল কেটে দিয়ে আসছেন, তাঁদের কালোবাজারি হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে খোলা চিঠিতে।

নাপিতদের এই সংগঠন চাইছে করোনার মধ্যে এসব কালোবাজারির দৌরাত্ম্য কমাতে জার্মান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন যেন সাহায্য করে, ‘মহামারির মধ্যে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে বুন্দেসলিগা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তটা যথেষ্টই প্রশংসার দাবিদার। কিন্তু আশা করব জার্মান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন যেন এই ব্যাপারে আমাদের পাশে দাঁড়ায়, একাত্মতা ঘোষণা করে, কালোবাজারিদের বিপক্ষে রুখে দাঁড়িয়ে উদাহরণ সৃষ্টি করে।’

নাপিতদের এই আহ্বানে লেফানডফস্কি, হরলান্ড, নয়্যার কিংবা সানচোরা সাড়া দেন কি না, সেটাই দেখার বিষয়!