নেইমার পাশে পাচ্ছেন পিএসজিকে

ক্লাবের সমর্থন পাচ্ছেন নেইমার।ছবি : রয়টার্স

বর্ণবাদের ঝড় বইছে ফরাসি ফুটবলে। পিএসজির তারকা নেইমার বর্ণবাদী গালি খাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। পিএসজি-মার্শেই ম্যাচেই হয়েছে এই কাণ্ড, যে ম্যাচে পিএসজি হেরেছে ১-০ গোলে। মার্শেইয়ের স্প্যানিশ ডিফেন্ডার আলভারো গঞ্জালেজের দিকেই অভিযোগের আঙুল নেইমারের। আলভারো গঞ্জালেজ কী আদৌ নেইমারকে বর্ণবাদী গালি দিয়েছেন? নেইমারের অভিযোগ কী সত্য? তা নির্ধারণের জন্য তদন্ত কমিটি বসে গেছে ইতিমধ্যে।

তবে তদন্তের ফলাফল যা-ই হোক না কেন, নিজের খেলোয়াড়ের পাশেই দাঁড়িয়েছে পিএসজি। সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে পরিষ্কার করেছে নিজেদের অবস্থান, ‘পিএসজি খুবই আন্তরিকভাবে নেইমারকে সমর্থন দিচ্ছে, তিনি বলেছেন তাঁর সঙ্গে প্রতিপক্ষের একজন খেলোয়াড় বর্ণবাদী আচরণ করেছেন। ক্লাব আবারও ব্যাপারটা পরিষ্কার করে বলতে চায়, সমাজের কোনো জায়গায় বর্ণবাদের জায়গা নেই। না ফুটবলে, না আমাদের ব্যক্তিগত জীবনে। আমরা আশা করি এই জঘন্য আচরণের প্রত্যেক প্রকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হবে সবাই।’

বর্ণবাদের বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ে শুধু পিএসজিই নয়, পিএসজির ব্যবসায়িক সঙ্গীদেরও পাশে পাচ্ছেন নেইমার, '১৫ বছর ধরে সমাজের বিভিন্ন বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে পিএসজি ও তার সঙ্গী এসওএস রেসিজমে, লিক্রা ও স্পোর্তিতিউদ। এলএফপির (ফরাসি লিগ আঁ কমিটি) শৃঙ্খলা কমিশনের তদন্ত ও সত্যতা নির্ধারণের অপেক্ষায় রয়েছি আমরা। তদন্তে যে কোনো ধরনের সহায়তার জন্য এলএফপির পাশেই আছি আমরা।’

ওদিকে পিছিয়ে নেই মার্শেইও। বর্ণবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেও নিজেদের খেলোয়াড়কে বর্ণবাদী না বলে দাবি করেছে তাঁরা, ‘আলভারো গঞ্জালেজ বর্ণবাদী নয়। এই ক্লাবে যোগ দেওয়ার পর তার দৈনন্দিন জীবনযাত্রা তার প্রমাণ বহন করে। তার সতীর্থরাও তার পক্ষে রায় দিয়েছে।’ এদিকে জানা গেছে, ব্রাজিলিয়ান মিডিয়ায় গঞ্জালেজের ব্যক্তিগত ফোন নম্বর ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেইমার-ভক্তরা গঞ্জালেজকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে বলে বিভিন্ন মিডিয়ায় খবর ছড়িয়ে পড়েছে।

নেইমার পিএসজির পাশাপাশি সঙ্গী হিসেবে পাচ্ছেন পিএসজির ব্যবসায়িক সঙ্গীদেরও।
ছবি: রয়টার্স

এলএফপি লিগ কমিটি এই ব্যাপার নিয়ে বুধবারে বৈঠকে বসবে। ম্যাচ রেফারির প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে ম্যাচে দেখানো পাঁচ লাল কার্ডের যৌক্তিকতা, নেইমার-গঞ্জালেজের দোষের মাত্রা বিবেচনা করে নিজেদের সিদ্ধান্ত জানাবেন তাঁরা।

ম্যাচে মার্শেইয়ের স্প্যানিশ সেন্টারব্যাক আলভারো গঞ্জালেজের মাথায় পেছনে চড় মেরে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছেড়েছেন নেইমার। ম্যাচ শেষে নেইমার দাবি করেছেন মাঠে আলভারো নেইমারকে উদ্দেশ করে বর্ণবাদী মন্তব্য ছুড়ে দিয়েছেন। প্রথমার্ধ থেকেই দুজনের মধ্যে খিটমিট লেগেই ছিল। বিরতির সময়ও নেইমারকে টিভিতে "বর্ণবাদ" শব্দটি ব্যবহার করতে শোনা গেছে। তবে ম্যাচের আসল মারামারি শুরু হয় একদম শেষ দিকে। যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে মার্শেইয়ের একটি গোল কিকের আগে নেইমার আর গঞ্জালেজ কথা-কাটাকাটি করছিলেন। নেইমারের ওই কাণ্ড প্রথমে না দেখলেও ভিএআরের সাহায্যে পরে নেইমারকে লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠ থেকে বের করে দেন রেফারি।

দেখা যাক, এই কাণ্ড আর কত দূর গড়ায়!