নেইমারকে দুই কথা শুনিয়ে দিলেন সেই খেলোয়াড়

গোটা ম্যাচেই 'লড়েছেন' নেইমার-গঞ্জালেজ।ছবি : রয়টার্স

আক্ষরিক অর্থেই গত রাতে যুদ্ধ হলো প্যারিসে। এমনিতেই পিএসজি-মার্শেইয়ের ‘শত্রুতা’ আজকের নয়। ফ্রান্সে এ দুই দলের লড়াই ক্লাসিকো হিসেবেই পরিচিত। দর্শকহীন সেই ক্লাসিকোই উত্তাপ ছড়াল প্রচণ্ড। নেইমার সহ লাল কার্ড দেখেছেন পাঁচজন। মারামারি করে ১৭ হলুদ কার্ড দেখেছিলেন দুই দলের খেলোয়াড়েরা। ম্যাচ শেষে বর্ণবাদের দায়ে প্রতিপক্ষ খেলোয়াড় আলভারো গঞ্জালেজকে দুষেছেন নেইমার। গঞ্জালেজ আবার জবাব দিয়েছেন সেটার। পাল্টা টুইটে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন তিনি।

ম্যাচ শেষে সতীর্থদের সঙ্গে একটা ছবি তুলে সেটা পোস্ট করে ক্যাপশনে এই স্প্যানিশ ডিফেন্ডার লিখেছেন, ‘বর্ণবাদের জায়গা নেই কোথাও। আমার ক্যারিয়ার বিতর্কহীন, অনেক সতীর্থের সঙ্গে খেলেছি, অনেক বন্ধুর সংস্পর্শে এসেছি প্রতিদিন। কখনো কখনো আপনাকে শিখতে হবে কীভাবে হারতে হয়, কীভাবে হার মেনে নিতে হয়। অসাধারণ তিন পয়েন্ট পেয়েছি আজ। পরিবার ও মাধ্যমিকে ধন্যবাদ।’

প্রথমার্ধ থেকেই দুজনের মধ্যে খিটমিট লেগেই ছিল। বিরতির সময়ও নেইমারকে টিভিতে “বর্ণবাদ” শব্দটি ব্যবহার করতে শোনা গেছে। দ্বিতীয়ার্ধে গঞ্জালেজের মাথায় পেছনে চড় মেরে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছেড়েছেন নেইমার। রেফারির চোখে প্রথমে সে ব্যাপারটা পড়েনি, নেইমারকে মাঠ থেকে বের করে দেন ভিএআরের পরামর্শে। ম্যাচ শেষে নেইমার দাবি করেছেন মাঠে আলভারো নেইমারের দিকে বর্ণবাদী মন্তব্য ছুড়ে দিয়েছেন। টুইট করে তার শাস্তি চেয়েছেন নেইমারের। গঞ্জালেজকে উদ্দেশ করে টুইটারে লিখেছেন, ‘আমার একমাত্র আফসোস ওই বদমাশটার মুখে ঘুষি মারতে পারিনি।"

পরে আরেক টুইটে নেইমার লিখেছেন, ‘আমি হিংস্র আচরণ করেছি কি না, ভিএআর দিয়ে সেটা বিচার করা সহজ। তাহলে যে বর্ণবাদী আমাকে মাঠে বাঁদর বলে গালি দিল তার ছবিটাও সামনে আসুক। আমি রেইনবো ফ্লিক করলে তো ঠিকই আমাকে শাস্তি দেওয়া হয়। আমি চড় দিলে মাঠ থেকে বের করে দেওয়া হয়। ওদের কী হবে? এখন ওদের কী হবে?’

গঞ্জালেজের সঙ্গে লড়েছেন পিএসজির আরও অনেকেই।
ছবি: রয়টার্স

ওদিকে আলভারো গঞ্জালেজের ম্যানেজার আন্দ্রে ভিলাস বোয়াসও নেইমারের জাতিবিদ্বেষী অভিযোগ মানতে পারেননি। তাঁর দাবি একজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় এমন ভুল করতে পারেন না, ‘আমার মনে হয় না (এমন কিছু ঘটেছে), কারণ আলভারো অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। ফুটবলে জাতিবিদ্বেষের কোনো স্থান নেই কিন্তু আমার মনে হয় না এটা ঘটেছে। নেইমার ম্যাচের শেষের ওই ঘটনায় একটু বিরক্ত বলে এমন বলছে। আমি আশা করব সবার মনোযোগ এ জয় থেকে সরে যাবে না। আমরা তো ডি মারিয়াকেও দেখলাম আমাদের এক খেলোয়াড়ের গায়ে থুতু মারতে। এটা ক্লাসিকো ছিল এবং আমাদের উচিত অলিম্পিক মার্শেইয়ের এই ঐতিহাসিক জয় মনে রাখা।’

দেখা যাক, নেইমার-গঞ্জালেজের এই 'দ্বৈরথ' আরও কতদূর গড়ায়!