নেইমারকে প্যারিস ভালোবাসতে শিখিয়েছেন সোনার ছেলে

পিএসজির ‘পোস্টার বয়’ তিনি। তাঁকে কিনেই লিগ আঁর ক্লাবটি ইউরোপে ভূমিকম্প সৃষ্টি করেছিল, চিৎকার করে জানিয়ে দিয়েছিল, আর আড়ালে থাকতে রাজি নয় তারা।

পিএসজির সবচেয়ে বড় তারকা কোনো প্রশ্ন ছাড়াই নেইমার জুনিয়র। নিজেদের ইউরোপের সেরা দল হিসেবে দেখার আকাঙ্ক্ষায় নেইমারকে দলে টানা পিএসজি ২০১৭ সালের দলবদলেই নিয়েছিল কিলিয়ান এমবাপ্পেকে।

দুই তারকার মধ্যে বয়সের পার্থক্য ছয় বছরের বেশি। কিন্তু দলে যোগ দেওয়ার পর দুজনের মধ্যে সম্পর্ক দেখে সেটা টের পাওয়ার উপায় নেই। অনুশীলন বা প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ—সবখানেই একজন আরেকজনের ছায়াসঙ্গী। মাঠের খেলায় দুজনের রসায়ন দুর্দান্ত।

২০১৮ বিশ্বকাপ জিতে আসার পর প্যারিসে এমবাপ্পেকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়ার একটা আলোচনা শুরু হয়েছিল। কিন্তু নেইমারই যে তাদের মূল তারকা, সেটা বারবার পিএসজির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

দলের প্রাণভোমরা হবেন—এ আশাতেই বার্সেলোনা ছেড়ে পিএসজিতে গিয়েছিলেন নেইমার। যখন মাঠে থাকেন, পিএসজির খেলা নেইমারকেন্দ্রিকই হয়। তবে পিএসজি ফরোয়ার্ডের দাবি, তাঁর দলের সেরা অস্ত্র ওই এমবাপ্পেই।

ফ্রান্স ফুটবলের কাছে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন নেইমার। আজ রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে খেলবে পিএসজি। ঘরের মাঠে দ্বিতীয় লেগের এই ম্যাচ শুধু হার এড়াতে পারলেই ইতিহাসে প্রথমবারের মতো টানা দুইবার চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনাল খেলবে পিএসজি।

পিএসজিতে এমবাপ্পের সঙ্গে দারুণ জমেছে নেইমারের।
ছবি: টুইটার

এমন এক ম্যাচের আগে এমবাপ্পের সঙ্গে নিজের রসায়ন নিয়ে কথা বলেছেন নেইমার। সেখানেই জানালেন, পিএসজিতে নতুন দেশ আর নতুন পরিবেশ মানিয়ে নেওয়ার সময় কীভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন এমবাপ্পে, ‘ফ্রেঞ্চ হওয়ার নানা উপায়ের ব্যাপারে আমাকে শিখিয়েছে সে। সে আমাকে ফ্রেঞ্চ মানসিকতার ব্যাপারটা শিখিয়েছে। এখানে সবার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার পেছনে ওর অনেক বড় ভূমিকা। সে সুবাদে এখানে আমি যে আনন্দে আছি, তার পেছনেও ভূমিকা ওর।’

এখনো দুজনের প্রথম দেখার কথা মনে রেখেছেন নেইমার। প্রায় চার বছর আগের সে ঘটনা তাঁকে কতটা আলোড়িত করেছিল, সেটা জানিয়েছেন এমবাপ্পে, ‘প্রথম মানুষ হিসেবে ওর গুণ দেখেই প্রথমে মুগ্ধ হয়েছি। কিলিয়ান অন্যের কথা ভাবে, সব সময় হাসিখুশি, বিনয়ী এবং সদয়। খুবই ভালো মানুষ সে। এ কারণেই প্রথম যেদিন কথা হয়েছে, সেদিন থেকেই এত ভালো সম্পর্ক আমাদের। এরপর অবশ্য অনুশীলনে ওকে দেখার সুযোগও এসেছে। ওর গতি দেখেছি, ওর ড্রিবলিং করার প্রক্রিয়া দেখেছি। ওর বুদ্ধিমত্তা এবং উন্নতি করার জন্য ওর মাঝে বিনয়ও দেখেছি। তখনই আমি নিজেকে বলেছি, এই আমাদের “সোনার ছেলে।” শুধু গতি থাকলেই হয় না। সেটা সঠিকভাবে ব্যবহার করার মতো বুদ্ধিও থাকা লাগে। কিলিয়ানের সেটা আছে। সে শুধু বুদ্ধিমান আর দ্রুতগতিরই না, ওর ড্রিবলিংয়ের ক্ষমতাও অসীম।’

এই সোনার ছেলের সঙ্গে আর বেশি দিন থাকবেন না নেইমার, এমন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। পিএসজি ছেড়ে আবার নাকি বার্সেলোনায় ফেরার চেষ্টা করছেন এই ফরোয়ার্ড। পিএসজির সঙ্গে চুক্তি নবায়নের কথাবার্তা বন্ধ হয়ে গেছে, এমন কথাবার্তায় বার্সেলোনা–সমর্থকদের আশাও বেড়ে গিয়েছিল।

কিন্তু আজই খবর এসেছে। সব শঙ্কা উড়িয়ে পিএসজিতেই নাকি থাকবেন নেইমার। নতুন চুক্তিতে বিশাল অঙ্কের বোনাস পাচ্ছেন নেইমার। আর সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৬ পর্যন্ত প্যারিসের ভালোবাসায় নিজেকে আটকে রাখতে যাচ্ছেন ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার।