নেইমারদের কোচ ছাঁটাই করতে ৬০ লাখ ইউরো গচ্ছা

বড়দিনের আগেই দুঃসবাদ পেয়েছিলেন টমাস টুখেল। দলকে ৪-০ গোল জেতানোর পরও ছাঁটাই হওয়ার খবর খুব কম কোচই পেয়েছেন ফুটবলে। চ্যাম্পিয়নস লিগে গ্রুপ পর্বে পিএসজিকে শীর্ষস্থান এনে দিয়েছেন। লিগে তিনে থাকলে শীর্ষে থাকা দলের চেয়ে মাত্র এক পয়েন্ট পিছিয়ে আছে প্যারিসের ক্লাবটি।

কিন্তু আপাতদৃষ্টিতে ক্লাবের আশা পূরণ করার মতো পারফরম্যান্স নয় এটি। গত ২৩ তারিখ প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে ক্লাবের বড় দুই তারকাকে সামলানো নিয়ে করা রসিকতাও পক্ষে যায়নি টুখেলের। ফলে ছাঁটাই হতে হয়েছে তাঁকে। জার্মান পত্রপত্রিকায় দাবি করা হয়েছে, বিচ্ছেদের আইনি ঝামেলাগুলোও শেষ হয়ে গেছে এবং টুখেলের উত্তরসূরি হিসেবে মরিসিও পচেত্তিনোকে নিয়োগের সিদ্ধান্তও নাকি পাকা হয়ে গেছে।

ফুটবলে সাধারণত ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার দু-এক দিনের মধ্যেই সেটা জানিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু জার্মান কোচের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাতে বেশ সময় নিচ্ছে পিএসজি। কোচ ও তাঁর আইনজীবীদের ২৩ তারিখে জানিয়ে দেওয়া হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে ক্লাব এখনো এ ব্যাপারে কিছু জানায়নি। কিন্তু টুখেলকে যে আর প্যারিসের ডাগআউটে দেখা যাবে না, সেটা নিশ্চিত করেছে জার্মান পত্রিকা বিল্ড।

বিল্ডের ফুটবল বিভাগের প্রধান ক্রিস্টিয়ান ফাল্কের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এরই মধ্যে জার্মানিতে চলে গেছেন টুখেল। বড়দিনের আগেই ছাঁটাইয়ের খবর পেয়েছেন টুখেল। পিএসজির সঙ্গে তাঁর চুক্তির ছয় মাসের বেশি বাকি ছিল। এ কারণে আইনজীবীরা পিএসজির কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করেছে। বছরে ৭৫ লাখ ইউরো বেতন পাওয়া টুখেলকে ৬০ লাখ ইউরো ক্ষতিপূরণ দেবে পিএসজি। বিল্ড দাবি করছে, এরই মধ্যে নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে ভাবতে শুরু করেছেন বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের সাবেক কোচ। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে দলবদলে প্রচুর অর্থ ব্যয় করেও সাফল্য পাচ্ছে না চেলসি। টুখেল ও চেলসিকে জড়িয়ে একটি গুঞ্জনও উঠি উঠি করছে।

ওদিকে টুখেল রেখে যাওয়া শূন্যস্থান পচেত্তিনোকে দিয়ে পূরণ করছে পিএসজি। ২০১৯ সালের নভেম্বরে টটেনহামের কোচ হিসেবে ছাঁটাই হওয়ার পর থেকেই বিশ্রামে আছেন পচেত্তিনো। আর্জেন্টাইন এই কোচ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড বা রিয়াল মাদ্রিদের মতো ক্লাবের অপেক্ষায় ছিলেন বলেই শোনা গিয়েছিল। নিজের সাবেক ক্লাব পিএসজির ব্যাপারেও আগ্রহ ছিল তাঁর। সুযোগ হাতে এসে ধরা দিতেই নাকি আর আপত্তি করেননি। দলবদলের খবর দেওয়ার জন্য বিখ্যাত ফাব্রিজিও রোমানো দাবি করেছেন, এরই মধ্যে পিএসজির সঙ্গে চুক্তি হয়ে গেছে পচেত্তিনোর।

গতকাল টুইটে রোমানো লিখেছেন, ‘ক্লাব ছাড়ার ব্যাপারে পিএসজির সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন টমাস টুখেল। এর ফলে ৬০ লাখ ইউরো খরচ হচ্ছে নাসের আল খেলাইফির। পিএসজির ম্যানেজার হওয়ার ব্যাপারে এর মধ্যেই সম্মতি দিয়েছেন মরিসিও পচেত্তিনো। চুক্তির সব খুঁটিনাটি সম্পন্ন। স্বাক্ষরও হয়ে গেছে।’ এ ব্যাপারে যেন কারও সন্দেহ না থাকে, সেটা নিশ্চিত করেছেন নিজের বিখ্যাত ক্যাচফ্রেস দিয়ে, ‘শুরু হলো!’

পচেত্তিনো নাকি এরই মধ্যে পিএসজিতে নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে শুরু করেছেন। কদিন আগেই নেইমার বলেছিলেন, আগামী মৌসুমেই মেসির সঙ্গে খেলতে চান। এত দিন এমন কথায় নেইমারকে সবাই বার্সেলোনার জার্সিতে দেখার কথা ভাবতেন। কিন্তু বার্সেলোনার বর্তমান অবস্থায় মেসির গায়েই সবাই এখন পিএসজির জার্সি দেখতে পাচ্ছেন। পচেত্তিনোও নেইমারের সেই স্বপ্ন পূরণ করায় আগ্রহী। মেসিকে কোচিং করানো যে তাঁর স্বপ্ন, এটা তো বহু আগ থেকে জানা।