নেইমার–রোনালদোর চেয়ে যেখানে এগিয়ে লুকাকু

ক্যারিয়ারে দলবদল করে সবচেয়ে বেশি দাম পেয়েছেন লুকাকু (মাঝে)টুইটার ও ইনস্টাগ্রাম

চেলসিতে ফিরেছেন রোমেলু লুকাকু। তাঁকে ৯ নম্বর জার্সি তুলে দিয়েছে চেলসি। খরচের অঙ্কটাও অনেক। সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ৯৭ দশমিক ৫ মিলিয়ন পাউন্ড—বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ হাজার ১২৭ কোটি টাকা। লুকাকু শুধু এই অঙ্ক নয়, পেছনে ফেলে আসা পথে তাকালে নিজেকে সৌভাগ্যবান ভাবতেই পারেন। ভক্ত, সংবাদমাধ্যম থেকে দুনিয়াজোড়া খ্যাতি কুড়াচ্ছেন লিওনেল মেসি, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও নেইমার। তাতে অসুবিধারও কিছু নেই লুকাকুর। সামর্থ্য ও অর্জন বিচারে বেলজিয়ান তারকা নিজেই এই ‘ত্রিরত্ন’কে এগিয়ে রাখবেন। কিন্তু একটি জায়গায় লুকাকু চাইলেও নেইমার কিংবা রোনালদোর চেয়ে নিজেকে পিছিয়ে রাখতে পারবেন না—দামে!

পাঁচবার দলবদলে লুকাকুর মোট দাম—২৮৮ দশমিক ৮ মিলিয়ন পাউন্ড। বাংলাদেশি মুদ্রায় অঙ্কটা দাঁড়ায় প্রায় ৩ হাজার ৩৪০ কোটি ১৯ লাখ টাকা
টুইটার

না, আগেই ভ্রুকুটি না করে পুরোটা পড়ুন। দলবদলের বাজারে সবচেয়ে দামি খেলোয়াড় কে? নেইমার। প্রায় ১৯৯ দশমিক ৮ মিলিয়ন পাউন্ডে (ইউরোয় ২২ কোটি ২০ লাখ) ২০১৭ সালে বার্সেলোনা ছেড়ে পিএসজিতে যোগ দেন তিনি। এই দাম এখনো কেউ টপকে যেতে পারেনি। তবে এটি নির্দিষ্ট একটি মৌসুমে একজন খেলোয়াড়ের একবার দলবদলের অঙ্ক। যদি বলা হয়, একজন খেলোয়াড় ক্যারিয়ারে যতবার দলবদল করেছেন, সেই প্রতিটি দলবদলের অঙ্ক যোগ করলে সবচেয়ে দামি কে?
লুকাকু ঠিক এ জায়গাতেই টেক্কা দিয়েছেন নেইমার, রোনালদোকে।
বেলজিয়ান তারকা তাঁর ক্যারিয়ারে এ পর্যন্ত পাঁচবার দল বদল করেছেন। অ্যান্ডারলেখট থেকে চেলসি, চেলসি থেকে এভারটন, এভারটন থেকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে ইন্টার মিলান, এরপর ইন্টার মিলান থেকে আবারও সেই চেলসিতে। এই পাঁচবার দলবদলে লুকাকুর মোট দাম—২৮৮ দশমিক ৮ মিলিয়ন পাউন্ড। বাংলাদেশি মুদ্রায় অঙ্কটা দাঁড়ায় প্রায় ৩ হাজার ৩৪০ কোটি ১৯ লাখ টাকা। একজন খেলোয়াড়ের ক্যারিয়ার তাঁর ক্যারিয়ারে যতবার দল বদল করেছেন, এর সব কটি দলবদলের দাম একত্র করলে লুকাকুই হচ্ছেন ইতিহাসের সবচেয়ে দামি ফুটবলার।

দলবদলে এখনো রেকর্ড নেইমারের
ইনস্টাগ্রাম

বেলজিয়ান ক্লাব অ্যান্ডারলেখট থেকে ২০১১ সালে ১৮ বছর বয়সী লুকাকুকে ১৩ দশমিক ৫ মিলিয়ন পাউন্ডে কিনেছিল চেলসি। তিন বছর পর তাঁকে ৩১ দশমিক ৮২ মিলিয়ন পাউন্ড এবং এর সঙ্গে ধারে খেলানোর ফি হিসেবে আরও ৩ দশমিক ১৫ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ করে কিনে নেয় এভারটন। তিন বছর পর ৭৬ দশমিক ২৩ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ করে তাঁকে কেনে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। সেখান থেকে ২০১৯ সালে ৬৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন পাউন্ড দলবদল ফি–তে তাঁকে কেনে ইন্টার। দুই মৌসুম ইতালিতে থেকে লিগ জিতে আবারও নিজের তারকা হয়ে ওঠার ক্লাবে ফিরলেন লুকাকু।

রোনালদোর দলবদলে ক্লাবগুলো সম্মিলিতভাবে প্রায় ২ হাজার ৩৯৫ কোটি ২০ লাখ টাকা খরচ করেছে
টুইটার

দলবদলের বাজারে সাকল্যে এই মূল্যে লুকাকু ভেঙেছেন নেইমারের রেকর্ড। ক্যারিয়ারে মাত্র দুটো দলবদল দিয়েই রেকর্ডটি এত দিন দখলে রেখেছিলেন ব্রাজিলিয়ান তারকা। ২০১৩ সালে সান্তোস থেকে বার্সেলোনায় যোগ দেন ৭৯ দশমিক ৩৮ মিলিয়ন পাউন্ড দলবদল ফি–তে। এরপর পিএসজি তাঁকে কিনেছে ১৯৯ দশমিক ৮ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ করে। এ দুটি দলবদলের মোট অঙ্ক—২৭৯ দশমিক ১৮ মিলিয়ন পাউন্ড। বাংলাদেশি মুদ্রায় অঙ্কটা প্রায় ৩ হাজার ২৩০ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
রোনালদো এই তালিকায় তিনে। তিনটি দলবদলে রোনালদোর ফি হিসেবে ক্লাবগুলোর সম্মিলিত খরচ—২০৭ মিলিয়ন পাউন্ড। স্পোর্টিং লিসবন থেকে তাঁকে ১৭ দশমিক ১ মিলিয়ন পাউন্ডে কিনেছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। এরপর ইউনাইটেড থেকে ৮৪ দশমিক ৬ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ করে তাঁকে কেনে রিয়াল মাদ্রিদ। ২০১৮ সালে রিয়াল থেকে ১০৫ দশমিক ৩ মিলিয়ন পাউন্ডে তাঁকে কেনে জুভেন্টাস। বাংলাদেশি মুদ্রায় রোনালদোর দলবদলে ক্লাবগুলো সম্মিলিতভাবে প্রায় ২ হাজার ৩৯৫ কোটি ২০ লাখ টাকা খরচ করেছে।