নেইমারহীন পিএসজিকে টানলেন এমবাপ্পে

বড় জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে পিএসজি।ছবি : রয়টার্স

কয়েক দিন আগেই পেরুর বিপক্ষে দুর্দান্ত এক হ্যাটট্রিক করে ব্রাজিলকে জিতিয়েছেন নেইমার। পেরুর লিমায় অনুষ্ঠিত হওয়া ম্যাচটা বেশ দেরিতেই শেষ হয়েছিল, ফলে ইউরোপীয় সময়ের পার্থক্যের কারণে পিএসজির হয়ে কাল লিগের ম্যাচটিতে মাঠে নামতে পারেননি এই ব্রাজিল তারকা। তাতে পিএসজির অবশ্য বিশেষ ক্ষতিবৃদ্ধি হয়নি। কিলিয়ান এমবাপ্পের জাদুতে নিম কে ৪-০ গোলে হারিয়েছে ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা।

এবার দলবদলের শেষ দিনে বার্সেলোনা থেকে ব্রাজিল মিডফিল্ডার রাফিনিয়া আলকানতারা ও এভারটন থেকে ইতালিয়ান স্ট্রাইকার মইসে কিনকে দলে টেনেছে পিএসজি। নিমের বিপক্ষে দুজনেরই অভিষেক হয়েছে। ৪-৩-৩ ছকে গোলরক্ষক কেইলর নাভাসের সামনে দুই সেন্টারব্যাক হিসেবে ছিলেন দুই ফরাসি তারকা প্রেসনেল কিমপেম্বে ও আবদু দিয়ালো। ইতালির রাইটব্যাক আলেসসান্দ্রো ফ্লোরেঞ্জির সঙ্গে লেফটব্যাক হিসেবে খেলেছেন ডাচ ফুটবলার মিচেল বাকার।

তিন মিডফিল্ডারের জায়গায় রাফিনিয়ার সঙ্গে খেলেছেন আর্জেন্টিনার লিয়ান্দ্রো পারেদেস ও আইভরি কোস্টের ইদ্রিসা গেয়ে। আক্রমণভাগে কিনের দুপাশে ছিলেন এমবাপ্পে ও স্প্যানিশ উইঙ্গার পাবলো সারাবিয়া।

শুধু নেইমারই নন, চোট-নিষেধাজ্ঞা সবকিছু মিলিয়ে মার্কিনিওস, দানিলো পেরেইরা, আনহেল দি মারিয়া, মার্কো ভেরাত্তিদের কেউই ছিলেন না এই ম্যাচে।

ম্যাচের চতুর্থ মিনিটেই গোল করার সুযোগ পেয়ে যান এমবাপ্পে। তবে সরাসরি নিম গোলরক্ষক বাপতিস্ত রেনেঁর গায়ে মেরে বসেন। ১১ মিনিটে পিএসজির চিন্তা বাড়িয়ে দিয়ে মাঠ থেকে উঠে যান পারেদেস, চোটের কারণে। তাঁর জায়গায় নামানো হয় স্প্যানিশ মিডফিল্ডার আন্দের এরেরাকে।

১২ মিনিটে রাফিনিয়াকে বাজেভাবে ফাউল করে লাল কার্ড দেখেন নিমের ফরাসি সেন্টারব্যাক লোইক লঁদ্রে। বাকি প্রায় আশি মিনিট দশ জনের নিমের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছেন এমবাপ্পেরা।

২০ মিনিটে সহজ একটা সুযোগ নষ্ট করেন সারাবিয়া। এমবাপ্পের ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে গোল করতে পারেননি এই স্প্যানিশ উইঙ্গার। ২৪ মিনিটে সুযোগ নষ্টের তালিকায় নাম লেখান এমবাপ্পে নিজেই। রাইটব্যাক ফ্লোরেঞ্জির একটা মাপা ক্রস ঠিকঠাক হেড করতে পারেননি।

২৯ মিনিটে সারাবিয়ার ক্রসে এরেরা হেড করতে পারলেও সেটি ফিরিয়ে দেন নিম গোলকিপার রেনেঁ।

৩২ মিনিটে শুরু হয় এমবাপ্পের জাদু। উইং থেকে বল টেনে নিয়ে গিয়ে গোলরক্ষককে ড্রিবল করে গোল করেন বিশ্বকাপজয়ী ফরাসি স্ট্রাইকার। ৩৭ মিনিটে ফ্লোরেঞ্জির দূরপাল্লার এক শট আটকে দেন রেনেঁ।

এমবাপ্পেকে রোখার সাধ্য ছিল না নিমের।
ছবি : রয়টার্স

সুযোগ নষ্ট করেছেন নতুন স্ট্রাইকার কিন এবং ফরাসি সেন্টারব্যাক কিমপেম্বেও। ৬৬ মিনিটে ফ্লোরেঞ্জির দুর্দান্ত এক ভলি পোস্টে লেগে ফিরে আসে। ফ্লোরেঞ্জি নিজেকে দুর্ভাগা ভাবতেই পারেন। ইতালিয়ান রাইটব্যাকের আরেকটি দুর্দান্ত হেডও পোস্টে লেগে ফিরে এসেছে।

৭৭ মিনিটে সারাবিয়ার হেডে ব্যবধান দ্বিগুণ করে পিএসজি। দশজনের নিম বাকি ১২ মিনিটে আরও দুই গোল খেয়ে বসে।

৮৩ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে সারাবিয়ার নিখুঁত এক পাসে বল নিয়ে গোল করেন এমবাপ্পে। ৮৭ মিনিটে হেড করে পোস্টে লাগান কিন। ম্যাচের একেবারে শেষদিকে গোল করে ব্যবধান ৪-০ করে ফেলেন সারাবিয়া।

চার গোল খাওয়ার পরও গোলকিপার রেনেঁর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকতে পারে নিম। দশজন নিয়ে প্রায় পুরো ম্যাচ খেলার পরেও দলটা যে এর চেয়েও বেশি গোল খায়নি, সেই কৃতিত্ব রেনেঁরই। পোস্টও অবশ্য বেশ কবার বাধা হয়ে না দাঁড়ালে আরও বড় ব্যবধানে মাঠ ছাড়তে পারত পিএসজি।

বুধবার চ্যাম্পিয়নস লিগে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে মাঠে নামবে পিএসজি। দারুণ ফর্মে থাকা এমবাপ্পের সঙ্গে সে ম্যাচে নেইমারকেও পাবে পিএসজি!