নেইমারের পাগলামিতে বিড়ম্বনায় ব্রাজিল সতীর্থ

ব্রাজিল জাতীয় দলে নেইমারের সতীর্থ রিচার্লিসন (নেইমারের পেছনে) পড়েছেন ঝামেলায়ছবি: রয়টার্স

সব শুনে হয়তো মনে হবে, এ আর নতুন কী! নেইমার এমনই!

সময়ের ফুটবলে যে অল্প কজনকে দেখে মনে হয়, মাঠে ফুটবলটা নিজেও উপভোগ করছেন, তাঁদের একজন নেইমার। তবে নেইমার মানে শুধু তো মাঠে ফুটবল পায়ে শিশুর আনন্দে ছুটে চলা নয়, মাঠের বাইরের জীবনেও পিএসজির ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের চালচলন তেমনই। শিশুতোষ সারল্য আছে সেখানে। এই একে খোঁচাচ্ছেন, তো পরক্ষণে অন্যকে। জীবন যাঁর কাছে বিনোদনের অন্য নাম। দুষ্টুমির ভাবটা যাঁর চোখেমুখে খেলা করে সারাক্ষণ।

তবে নেইমারের দুষ্টুমি যে মাঝে মাঝে অন্যদের জন্য আপদ ডেকে আনে, সেটিই বোধ হয় এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন ব্রাজিল জাতীয় দলে নেইমারের সতীর্থ রিচার্লিসন। ইংলিশ ক্লাব এভারটনে খেলা রিচার্লিসন হয়তো এখন ভাবছেন, কোন কুক্ষণে যে নেইমারকে কল করতে গেলাম! নেইমার লাইভে ছিলেন তখন, রিচার্লিসনের কল পেয়ে ভুল করে সেটি লাইভে দেখিয়ে দেন। ব্যস, ফাঁস হয়ে যায় রিচার্লিসনের ফোন নম্বর!

ঘটনাটার মঞ্চ লাইভ গেমিং স্ট্রিমিং সাইট টুইচ। ম্যানচেস্টার সিটির আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার সের্হিও আগুয়েরো, টটেনহামের স্প্যানিশ লেফটব্যাক সের্হিও রেগিলনরা নিয়মিতই প্লেস্টেশনে গেম খেলেন, সেটি আবার টুইচে স্ট্রিমও করেন। নেইমারও নতুন করে যোগ দিয়েছেন সেখানে। আর নেইমার যেখানে, সেখানে সাড়া পড়তে আর কতক্ষণ লাগে! এরই মধ্যে ৬ লাখেরও বেশি অনুসারী হয়ে গেছে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের।

লিভারপুলের থিয়াগোর ওপর জঘন্য এই ট্যাকল করে সমালোচিত রিচার্লিসন
ছবি: সংগৃহীত

গ্লোবাল অফেনসিভ, পিইউবিজি ব্যাটলগ্রাউন্ড, অ্যামাং আস...এই গেমগুলোই বেশি খেলেন নেইমার। তা গত রোববার এমনই এক গেম খেলার সময়েই তাঁকে কল দিয়েছিলেন রিচার্লিসন। নেইমার তখন লাইভে ছিলেন, রিচার্লিসনের কল পেতেই সতীর্থকে খোঁচানোর ভূত চাপে তাঁর মাথায়।

এমনিতেই গত শনিবার মার্সিসাইড ডার্বিতে লিভারপুলের থিয়াগো আলকানতারাকে জঘন্য ট্যাকল করে বিতর্কে রিচার্লিসন। ম্যাচে লাল কার্ড দেখার পাশাপাশি আরও ৩ ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়েছেন ব্রাজিলিয়ান তারকা। পরে অবশ্য থিয়াগোর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন টুইটারে।

তা সেই রিচার্লিসন তাঁকে ফোন করেছেন, সেটি দেখাতে লাইভে নিজের মোবাইলটা ক্যামেরার দিকে দেখান নেইমার। সে সময় ২৫ হাজার মানুষ নেইমারের লাইভ দেখছিলেন। ঝামেলাটা বেঁধে গেল সেখানেই! নেইমারের মোবাইলে রিচার্লিসনের ফোন নাম্বার সেভ করা ছিল, তাই রিচার্লিসন নামটা দেখাচ্ছিল স্ক্রিনে।

কিন্তু নামের নিচে মোবাইল নম্বরও যে দেখা যাচ্ছিল! তারপর কী হলো? টুং টাং শব্দে কান ঝালাপালা হওয়ার জোগাড় রিচার্লিসনের! একের পর এক কল আর খুদেবার্তায় তখন রিচার্লিসনের মাথা পাগল হওয়ার দশা! নেইমার অবশ্য পরে রিচার্লিসনের ফোন ধরে হেসে হেসে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন, ‘আমি সম্ভবত তোমার নাম্বারটা দেখিয়ে ফেলেছি। আমি মোটেও এটা চাইনি। কসম কেটে বলছি, এটা দুর্ঘটনা ছিল।’

লাইভে রিচার্লিসনের ফোন নম্বরটা ভুল করে দেখিয়ে দিয়েছেন নেইমার
ছবি: সংগৃহীত

অতটুকু বলেই আবার নেইমারের ‘শিশুতোষ নেইমার’ বনে যাওয়া। রিচার্লিসনকে খোঁচা মেরে বললেন, ‘আমরা লাইভে আছি, সবাইকে হাই বলো। তোমার সম্ভবত এখন ফোন নাম্বারটা বদলাতে হবে।’ রিচার্লিসনও কম যান না! ভক্তদের উদ্দেশে তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘যে-ই আমাকে কল করবে তাকেই ব্লক করব! কেউ কল করবে না আমাকে!’

কিন্তু কে শোনে কার কথা! তাঁর কপট হুঁশিয়ারি যে কেউ পাত্তা দেয়নি, সেটির প্রমাণ তো রিচার্লিসনের টুইটই দিয়ে গেছে। নেইমারকে ‘জিনিয়াস’ উপাধি দিয়ে এভারটন ফরোয়ার্ডের শ্লেষাত্মক টুইট, ‘পাঁচ মিনিটও হয়নি, এর মধ্যেই ১০ হাজারের বেশি মেসেজ পেয়েছি। ধন্যবাদ, নেইমার!’

নেইমারের এক মুহূর্তের পাগলামি রিচার্লিসনের উটকো আপদ আর কী!