‘পরের ছেলে’ মেসিকে নিয়ে ভাবনা নেই পচেত্তিনোর
দলবদলের সময় এগিয়ে আসছে দ্রুতই। ইউরোপের ফুটবল আকাশে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গুঞ্জন ডালপালা মেলছে। এসব গুঞ্জনের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত লিওনেল মেসির ভবিষ্যতের বিষয়টি। বার্সেলোনার সঙ্গে তাঁর বর্তমান চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে এ বছরের জুনে। কিন্তু এখনো নতুন চুক্তি করার উদ্যোগ নেই আর্জেন্টিনার ফরোয়ার্ডের। নতুন চুক্তি নিয়ে নাকি বার্সেলোনার সঙ্গে আলোচনাই শুরু করেননি মেসি!
স্বাভাবিক কারণেই গুঞ্জন চলছে—বার্সেলোনায় আর থাকছেন না আর্জেন্টিনার অধিনায়ক। কী হতে পারে মেসির পরবর্তী ঠিকানা, ফুটবল বিশ্বে আলোচনা এখন এটা নিয়েই। সংবাদমাধ্যম, ফুটবল পণ্ডিত থেকে শুরু করে সাধারণ ফুটবলপ্রেমী—বেশির ভাগ মানুষেরই ধারণা, মেসির পরবর্তী ঠিকানা হতে যাচ্ছে প্যারিস। মানে সব আলোচনার অবসান ঘটিয়ে স্বদেশি কোচ মরিসিও পচেত্তিনোর দল পিএসজিতেই নাম লেখাতে পারেন মেসি!
শুধু ধারণা করে চুপ করে থাকলেও চলত। বিষয়টি কতটা এগিয়েছে, তা অনুমান করতে মেসির দলববদলবিষয়ক নানা প্রশ্ন পচেত্তিনোকে মাঝেমধ্যেই করে থাকেন সাংবাদিকেরা। এমনই একটি প্রশ্ন সম্প্রতি স্পেনের রেডিও কাদেনা সের করেছিল পিএসজির আর্জেন্টাইন কোচ পচেত্তিনোকে। ৩৩ বছর বয়সী মেসির পিএসজিতে নাম লেখানোর গুঞ্জন নিয়ে কী বলবেন—এমন প্রশ্নের উত্তরে পচেত্তিনো বলেছেন, একজন স্বদেশি হিসেবে আর্জেন্টিনার অধিনায়ক মেসির সঙ্গে তাঁর কথা হয়। তবে মেসির দলবদলের বিষয় নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি পচেত্তিনো।
মেসির দলবদল নিয়ে আবার প্রশ্ন করা হলে পচেত্তিনো বলেছেন, বার্সেলোনার সঙ্গে পিএসজির চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচ খেলার সময় মেসির সঙ্গে কথা হয়েছিল তাঁর, ‘আমরা একে অপরের কুশলাদি জিজ্ঞেস করেছি। সেই সময় জর্দি আলবা, নেইমার আর রাফিনিয়াও ছিল। আমাদের মধ্যে অনেক সময় ধরে ভালো একটি আড্ডাও হয়েছিল। আমি নিশ্চিত যে মেসির ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা শিগগিরই জানতে পারব।’
এরপর হঠাৎই কূটনীতিক ঢঙে কথা বলতে শুরু করেন পচেত্তিনো, ‘আমার খেলোয়াড় নয়, অন্য দলের খেলোয়াড়, এমন কাউকে নিয়ে আমি কথা বলতে পছন্দ করি না। অনেক গুঞ্জন চলছে। এটা সত্য যে পিএসজি প্রতিবছরই নিজেদের দলকে আরও ভালো এবং শক্তিশালী করতে চায়। এবার সেই কাজ শুরু করার বাকি খুব বেশি সময় নেই।’
তা মেসিকে একপ্রকার ‘পরের ছেলে’ই বলে দিয়েছেন পচেত্তিনো। এই ‘পরের ছেলে’কে নিয়ে না ভেবে পিএসজির কোচ ‘ঘরের’ দুই ছেলে কিলিয়ান এমবাপ্পে ও নেইমারকে নিয়েই ভাবতে চান এই মুহূর্তে। গুঞ্জন এ দুজনকে নিয়েও কম ডালপালা মেলছে না। দুজনেরই পিএসজির সঙ্গে বর্তমান চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে আগামী বছরের জুনে। এখনো দুজনের কেউই নতুন চুক্তি করেননি ক্লাবের সঙ্গে। নেইমার অবশ্য ঘোষণার মতো করেই বলেছেন, তিনি পিএসজিতে সুখেই আছেন। ইউরোপের ফুটবল আকাশে একটা খবরও ঘুরছে যে নেইমার ২০২৬ সাল পর্যন্ত পিএসজিতেই থাকবেন।
এখনো কিছু চূড়ান্ত না হলেও নেইমারের কথা শুনে পিএসজি স্বস্তি পেতে পারে যে ঘরের ছেলে ঘরেই থাকছে! কিন্তু এমবাপ্পেকে নিয়ে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, রিয়াল মাদ্রিদ তাঁকে চাইছে আর তিনিও রিয়ালে যেতে চান! মূল ঘটনাটা কী? নেইমার ও এমবাপ্পেকে নিয়ে কী বলবেন পচেত্তিনো? তাঁর কথা একটাই, এই মুহূর্তে মেসিকে নিয়ে না ভেবে নেইমার ও এমবাপ্পেকে নিয়েই ভাবছেন তিনি। আরও অনেক বছর এ দুজনকে পিএসজিতে রেখে দিতে চান আর্জেন্টাইন কোচ।
নেইমার ও এমবাপ্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে করা প্রশ্নে স্পেনের রেডিও কাদেনা সেরকে পচেত্তিনো বলেছেন, ‘লক্ষ্য তো একটাই—সেরা খেলোয়াড়দের ধরে রাখা। ক্লাব চ্যাম্পিয়নস লিগ জিততে চায়। একই সঙ্গে ক্লাব চায় অনেক বছরের জন্য নেইমার ও এমবাপ্পেকে ধরে রাখতে।’ নেইমার ও এমবাপ্পের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক যে খুব ভালো, সেটাও বলেছেন পচেত্তিনো, ‘তিন মাসে আমাদের মধ্যে ভালো একটি সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। দুই খেলোয়াড়ই ক্লাবের জন্য নিজেদের উজাড় করে দিচ্ছে। আমি আশাবাদী যে ওরা এখানেই থাকবে।’
ক্লাব তো দুজনকে ধরে রাখতে চায়ই। নেইমারও বলেছেন তিনি পিএসজিতেই থাকতে চান। এর আগে অনেকবারই বলেছেন, পিএসজিতে তিনি সুখেই আছেন। আর পচেত্তিনো তো বললেনই, নেইমার-এমবাপ্পে দুজনের সঙ্গেই তাঁর সম্পর্ক বেশ ভালো। সেই সম্পর্কের টানেই দুজনের কাউকেই ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবতেও পারেন না পচেত্তিনো। গুঞ্জনটা যেহেতু বেশি হচ্ছে এমবাপ্পেকে নিয়ে, তাই পচেত্তিনো তাঁর বিষয়টি নিয়ে আরও একবার বলেছেন, ‘কিলিয়ানের সঙ্গে তিন মাস ড্রেসিংরুম ভাগাভাগির পর আমি ওকে এখানে রাখতে সর্বস্ব দিয়ে লড়াই করব।’