‘পরে’র দাপটে ব্যর্থ শুধু রোনালদোরাই

প্রতিপক্ষের মাঠে ব্যর্থ হয়েছেন রোনালদোরা।ছবি: রয়টার্স

ঘরের মাঠ মানেই প্রবল প্রতিপত্তি। ক্রিকেটে তো ইদানীং ঘরের মাঠে বাঘ আর পরের মাঠে বিড়াল ট্যাগটা সবাই কপালে জুটিয়ে নিচ্ছে। ফুটবলে তো এ কথা সত্যি বহুদিন ধরেই। লিগের সবচেয়ে দুর্বল দলটিও ঘরের মাঠে খেলতে নামলে বদলে যায়। ক্যাম্প ন্যু, অ্যানফিল্ড, ওল্ড ট্রাফোর্ড বা বার্নাব্যু নিয়ে শত শত কল্পকাহিনি তো আর এমনি এমনি সৃষ্টি হয়নি।

এরপরই এল করোনাকাল। সংক্রামক মহামারির কারণে দর্শকহীন মাঠে খেলা। ঘরের মাঠকে দুর্গ বানানোয় সবচেয়ে বড় ভূমিকা তো এই দর্শকই রাখেন। তাঁদের উৎসাহ, চিৎকার, গর্জন দলগুলোকে যে অনুপ্রেরণা দেয়, সেটা অন্য কোনো উৎস থেকে পাওয়া সম্ভব নয়। হঠাৎ করেই তাই দুর্গগুলো আর দুর্গ থাকছে না। এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগ আবারও সেটা প্রমাণ করে দিল।

শেষ ষোলোর প্রথম লেগে এবার ঘরের মাঠ পর করে দিয়েছে দলগুলোকে। শুধু ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোরাই পারেননি পরের মাঠকে আপন করে নিতে।

বার্সেলোনার মাঠে চার গোল দিয়েছে পিএসজি।
ছবি: রয়টার্স

দ্বিতীয় রাউন্ডের প্রথম দিনটাই স্তব্ধ করে দিয়েছে সবাইকে। ক্যাম্প ন্যুতে মুখোমুখি হয়েছিল বার্সেলোনা ও পিএসজি। এই মাঠে দুই দল সর্বশেষ যেবার মুখোমুখি হয়েছিল, ম্যাচের ফল ছিল বার্সেলোনার পক্ষে ৬-১। পিএসজির মাঠে ৪-০ গোলে হারের পর বার্সেলোনার সে প্রত্যাবর্তনের স্মৃতিই বার্সার আশা বাঁচিয়ে রেখেছিল এবার। কিন্তু ঘরের মাঠে বার্সাকে উল্টো ৪-১ গোলের হারের হতাশা সইতে হলো। সে রাতেই লাইপজিগের মাঠ থেকে ২-০ গোলের জয় নিয়ে ফিরেছে লিভারপুল।

পরদিন আরেক স্প্যানিশ ক্লাবকে বার্সার ভাগ্য বরণ করতে হলো। বার্সেলোনাকে ডুবিয়েছিলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। আর সেভিয়ার সর্বনাশ করেছেন নতুন প্রজন্মের খেলোয়াড়দের মধ্যে এমবাপ্পের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী আরলিং হরলান্ড। হরলান্ডের বরুসিয়া ডর্টমুন্ড সেভিয়াকে হারিয়েছে ৩-২ গোলে। তবে সে রাতের অন্য ম্যাচে স্বাগতিকদের হাসি ফুটিয়েছে। শেষ ষোলোর ম্যাচে দেশে ফিরেছিলেন রোনালদো। কিন্তু পোর্তোর মাঠে ২-১ গোলে হেরেছে জুভেন্টাস।

প্রতিপক্ষের মাঠে চার গোল দিয়েছে বায়ার্নও।
ছবি: রয়টার্স

পরের সপ্তাহের ম্যাচগুলো প্রমাণ করেছে রোনালদোরাই ব্যতিক্রম। নিজেদের মাঠে লাৎসিওর বায়ার্নের কাছে ৪-১ গোলের হার তো অনুমিতই ছিল। গত মৌসুম থেকেই ইউরোপে দুর্দান্ত ফর্মে আছে বায়ার্ন। বার্সেলোনাকেই ৮-২ গোলে হারিয়েছিল এই বায়ার্ন। কিন্তু লা লিগায় বার্সা–রিয়ালের চেয়ে অনেক ব্যবধানে লিগ শীর্ষে থাকা আতলেতিকো মাদ্রিদ ঘরের মাঠে চেলসির কাছে হেরে যাবে, এটা কেউ ভাবতে পারেনি।

পরদিনই একই ঘটনা। আতালান্তার মাঠে কষ্টেসৃষ্টে হলেও এক গোলের জয় পেয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। ওদিকে বরুসিয়া মনশেনগ্লাডবাখকে ২-০ গোলে হারিয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি।