পিএসজির ছিনতাইয়ের শিকার বার্সেলোনা

বার্সেলোনাকে ঝামেলায় ফেলে দিয়েছে পিএসজি।ছবি: রয়টার্স

জর্জিনিও ভাইনালডম বার্সেলোনায় যাচ্ছেন। গত দুই সপ্তাহে দলবদলের বাজারে এটাকেই সত্য বলে মেনে নিয়েছিল সবাই। আর্থিক দুরবস্থার মধ্যে ভালো খেলোয়াড় দলে টানতে মোক্ষম উপায় বেছে নিয়েছে বার্সেলোনা। চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে এমন একের পর এক খেলোয়াড়কে দলে টানছে তারা। প্রথমে ম্যানচেস্টার সিটি থেকে ৩৩ বছর বয়সী সের্হিও আগুয়েরো যোগ দিয়েছেন বার্সেলোনায়।

এরপর সিটি থেকে যোগ দিয়েছেন ২১ বছর বয়সী ডিফেন্ডার এরিক গার্সিয়া। মুফতে এ দুজনের সঙ্গে এ সপ্তাহেই নাম লেখানোর কথা ছিল ভাইনালডমের। লিভারপুলের এই ডাচ মিডফিল্ডারের সঙ্গে কথা–পাকাপাকিও করে ফেলেছিল বার্সেলোনা। কিন্তু এখন শোনা যাচ্ছে, সেই ভাইনালডমকে ছিনতাই করে নিয়েছে পিএসজি। কাতালান রেডিও আরএসিওয়ান নিশ্চিত করেছে এ খবর।

জর্জিনিও ভাইনালডম।
ছবি: রয়টার্স

৩০ বছর বয়সী ভাইনালডমের সঙ্গে লিভারপুলের চুক্তি জুনেই শেষ হচ্ছে। বর্তমান বেতনে (বছরে ৪০ লাখ ইউরোর কম) আর লিভারপুলে থাকতে রাজি হচ্ছিলেন না তিনি। এরই মধ্যে বার্সেলোনা এগিয়ে যায় তাঁকে পেতে। বার্সেলোনা অবশ্য তাঁকে লিভারপুলের চেয়ে বেশি বেতন দিতে রাজি হয়নি। কিন্তু ডাগআউটে রোনাল্ড কোমানের উপস্থিতি ভাইনালডমকে আগ্রহী করে তুলেছিল। বার্সেলোনার কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগে নেদারল্যান্ডস দলের দায়িত্বে ছিলেন কোমান। সে সুবাদেই ভাইনালডমের এমন কোমান-প্রীতি।

গত সপ্তাহেই কোমানকে আরও এক বছর বার্সার ডাগআউটের রাখার খবর নিশ্চিত করে দেওয়া হয়েছে। এরপর কোমানের বার্সায় যাওয়ার প্রায় নিশ্চিত বলেই জানা গিয়েছিল। মৌখিকভাবে সব পাকা থাকায় মেডিকেল সেরে ফেলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল। বর্তমানে জাতীয় দলের সঙ্গে ইউরোর জন্য ব্যস্ত থাকা ভাইনালডমের মেডিকেল নেদারল্যান্ডস ক্যাম্পেই করা হতো।

কোমানের উপস্থিতি ভাইনালডামের বার্সেলোনায় যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিয়েছিল।
ছবি: টুইটার

মাঝে হঠাৎ হাজির পিএসজি। বার্সেলোনায় কোমানের কোচিংয়ে খেলার জন্য জন্য নাকি লিভারপুলের চেয়েও কম বেতন নিচ্ছিলেন ভাইনালডম। সেই মিডফিল্ডারকে বার্সেলোনার চেয়ে দ্বিগুণ বেতনের প্রস্তাব দিয়েছে পিএসজি। সে সঙ্গে পিএসজি কোচ মরিসিও পচেত্তিনো বারবার ফোন করে তাঁকে প্যারিসে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। ২০১৬ সালে লিভারপুলে যাওয়ার আগে টটেনহামে পচেত্তিনোর অধীনে খেলার সব ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন ভাইনালডম। কিন্তু টটেনহাম সেবার আর্থিক কারণে তাঁকে নিতে পারেনি। সে সুবাদে লিভারপুল তাঁকে টেনে নিয়ে গেছে।

পচেত্তিনোর এখন আর হাত বাধা নেই। পিএসজির দায়িত্বে থাকা এই কোচ এখন পছন্দের খেলোয়াড়ের জন্য হাত খুলে খরচ করতে পারেন। আর পিএসজিরও ভাইনালডমের মতো একজন মিডফিল্ডার দরকার। নেইমার-এমবাপ্পেদের এই দলে কোনো দুর্বলতা যদি থেকে থাকে, সেটা মাঝমাঠেই। সে দুর্বলতা দূর করতে ভেরাত্তির সঙ্গে আরেকটি ইঞ্জিন যোগ করতে চাইছে তারা। আর সে কারণে ভাইনালডমকে বার্ষিক ৭৫ লাখ ইউরো বেতনের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বার্সেলোনা তাঁকে এর অর্ধেক বেতন দেওয়ার কথা ভাবছিল। তিন বছরের জন্য ভাইনালডমের সঙ্গে চুক্তি করা হবে।

এই দলবদল সম্পন্ন হলে বার্সেলোনা-পিএসজির সম্পর্ক নিশ্চিতভাবেই আরও খারাপ হবে। ২০১৭ সাল থেকেই দুই ক্লাবের মধ্যে সাপ-নেউলে সম্পর্ক চলছে। প্রথমে বারবার মানা করার পরও পিএসজি থেকে মার্কো ভেরাত্তিকে কেনার চেষ্টা করছিল বার্সেলোনা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পিএসজি উল্টো নেইমারকেই বার্সেলোনায় টেনে নিয়ে যায়। আবার ২০১৮ সালে আয়াক্স থেকে ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংকে প্রায় টেনেই নিয়েছিল পিএসজি। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বার্সেলোনা এই মিডফিল্ডারকে দলে টানে।