প্রতিশোধ নিয়ে কুতিনিওর কথা মনে করিয়ে দিলেন ‘সার্বিয়ান মেসি’

রোনো ক্লাব বেনফিকার বিপক্ষে গোলের পর অধিনায়কের সঙ্গে উদ্‌যাপন পিএওকের সার্বিয়ান ফুটবলার আন্দ্রিয়া জিভকোভিচের (বাঁয়ে)।ছবি: রয়টার্স

'সার্বিয়ান মেসি' হিসেবে বেশ পরিচিতি পেয়েছিলেন তিনি। সার্বিয়ার ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন। সার্বিয়ার অন্যতম জনপ্রিয় ক্লাব পার্টিজান বেলগ্রেডের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ অধিনায়কও ছিলেন এই তরুণ। আর্সেনাল, লিভারপুল, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, বায়ার্ন মিউনিখ, ইন্টার মিলানের মতো বড় বড় অনেক ক্লাবই চেয়েছিল এই উঠতি তারকাকে।

বলা হচ্ছে আন্দ্রিয়া জিভকোভিচের কথা। নতুন মেসি হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার পর কেটে গেছে প্রায় অর্ধযুগ। দেশ ছেড়ে যোগ দিয়েছিলেন পর্তুগালের ক্লাব বেনফিকায়। আর দশটা 'নতুন মেসি'র ক্ষেত্রে যা হয়, তাই হয়েছিল জিভকোভিচের সঙ্গেও। আস্তে আস্তে ফর্ম হারিয়ে কোচদের কাছে ব্রাত্য হয়েছেন। শেষমেশ বিনামূল্যেই বেনফিকা ছেড়েছেন সপ্তাহখানেক হলো। যোগ দিয়েছেন গ্রিক ক্লাব পিএওকে-তে। সেখানে যা করলেন, তা দেখে কদিন আগে বার্সেলোনার ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার ফিলিপ কুতিনিওর কথা মনে পড়তে বাধ্য।

আন্দ্রিয়া জিভকোভিচ যখন বেনফিকায়।
ছবি: টুইটার

কুতিনিও কী করেছিলেন? ওই যে, গত মৌসুমে বার্সেলোনা থেকে ধারে খেলতে গিয়েছিলেন বায়ার্ন মিউনিখে। উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে সেই বার্সেলোনার বিপক্ষেই বদলি হয়ে খেলতে নেমেছিলেন, করেছিলেন দুই গোল, এক গোলে সহায়তাও ছিল। নিজেদের ইতিহাসের অন্যতম বাজে দিন কাটিয়েছিল বার্সেলোনা, হেরেছিল ৮-২ গোলে। বায়ার্নের হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ সহ ট্রেবলও জিতেছেন এই তারকা। মোটামুটি একই ধরনের কাজ করেছেন জিভকোভিচও।

চার বছর পর গত জুনে যখন বেনফিকা ছাড়লেন, তাঁর পারফরম্যান্স মোটেও ফরোয়ার্ডসুলভ ছিল না। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে একটা ক্লাবের হয়ে ৮৮ ম্যাচ খেলে কেউ ৪ গোল করলে তাঁকে যে কেউ প্রথম দেখায় রক্ষণভাগের খেলোয়াড়ই মনে করবে, জিভকোভিচের অবস্থা এতটাই খারাপ হয়েছিল। রুই ভিতোরিয়া কিংবা ব্রুনো লাগে, বেনফিকার কোনো ম্যানেজারই পরে আস্থা রাখতে পারেননি এই তারকার ওপর। যে ফর্ম দেখিয়ে 'সার্বিয়ান মেসি' ডাকনাম পেয়েছিলেন, তা তত দিনে দূর অস্ত।

চলতি মাসের আট তারিখেই বেনফিকা ছেড়ে ফ্রি ট্রান্সফারে যোগ দিয়েছিলেন পিএওকে-তে। এসেই কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছেন, খেলতে হবে সাবেক ক্লাবের বিপক্ষে। তাও যেমন-তেমন ম্যাচ নয়, একদম চ্যাম্পিয়নস লিগের তৃতীয় কোয়ালিফাইং রাউন্ডে নামিয়ে দেওয়া হলো তাঁকে। বেনফিকার বিপক্ষে মাঠে নেমে আগের চার বছর ধরে তাঁর ওপর চলে আসা সকল অবজ্ঞা ও তুচ্ছতাচ্ছিল্যের কথা মনে হচ্ছিল কী তাঁর? হবে হয়তো। না হয় অমন দুরন্ত খেললেন কী করে?

সাবেক ক্লাবের বিপক্ষে জয়সূচক গোল করে দলকে জিতিয়েছেন। ম্যাচটি ২–১ গোলে জিতে প্লে–অফ রাউন্ডে উঠেছে পিএওকে। আর চ্যাম্পিয়নস লিগের স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে বেনফিকার। মধুর প্রতিশোধ বুঝি একেই বলে!

ঠিক কয়েক দিন আগে কুতিনিও যা করেছিলেন বার্সার বিপক্ষে!