প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ পেলেন নেইমার-সালাহ

এবার কি পারবেন নেইমার?ফাইল ছবি: রয়টার্স

২০১৮ চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল। ২০২০ চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল। দুঃস্বপ্নের দুই মঞ্চ নেইমার আর মো সালাহর জন্য। আজ চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ আটের ড্র দুজনের সামনে সুযোগ তৈরি করে দিল প্রতিশোধের।

খেলায় প্রতিশোধ শব্দটা যায় না, কিন্তু নেইমার আর সালাহর মনে একটুও কি এই শব্দটা বাড়তি তাড়না হয়ে আসবে না? আজ সুইজারল্যান্ডের নিওনে চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ আটের ড্রয়ের পর এমন প্রশ্ন আসতে বাধ্য। কেন? সালাহর লিভারপুল যে মুখোমুখি হচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদের, ২০১৮ সালের চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালের পুনর্মঞ্চায়ন। আর নেইমারের পিএসজির সামনে পড়ছে বায়ার্ন মিউনিখ—গত মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল!

এর বাইরে দারুণ আক্রমণাত্মক ফুটবলের আকর্ষণ জাগাবে আরেকটি ম্যাচও। ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে খেলবে এই মুহূর্তে ইউরোপিয়ান ফুটবলের উঠতি তারকা আর্লিং হরলান্ডের বরুসিয়া ডর্টমুন্ড। অন্য কোয়ার্টার ফাইনালে চেলসির প্রতিপক্ষ ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর জুভেন্টাসকে শেষ ষোলোতে বিদায় দিয়ে আসা পোর্তো।

কিন্তু মঞ্চটা সালাহ-নেইমারের প্রতিশোধের কেন? তা জানতে ফিরে যেতে হবে আগের যে দুই ফাইনালের কথা বলা হলো, সে দুটিতে। ২০১৮ চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে দারুণ গতিময় ফুটবলে ইউরোপ মাতিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে উঠেছিল ইয়ুর্গেন ক্লপের লিভারপুল, সালাহ-মানে-ফিরমিনোর আক্রমণভাগ তখন ইউরোপে সেরা। সেই মৌসুমেই রোমা থেকে লিভারপুলে যাওয়া সালাহ তো বিশ্বজুড়েই এক সেনসেশন হয়ে উঠেছেন। সালাহর লিভারপুলের বিপক্ষে রোনালদোর রিয়ালের ফাইনাল, আকর্ষণ জাগাতে আর কী লাগে!

কিন্তু ম্যাচের ১৮ মিনিটের সময়ে সে আকর্ষণে পানি ঢেলে দেয় রিয়াল ডিফেন্ডার সের্হিও রামোসের কড়া ট্যাকল। বল দখলের লড়াইয়ে রামোসের হাতের মধ্যে পেঁচিয়ে যায় সালাহর বাহু, কাঁধে আঘাত পান সালাহ। মাঠ ছাড়তে হয় তখনই। মাঠ ছাড়ার সময় সালাহর সেই কান্না কে ভুলতে পারে! কাঁদারই কথা, একে তো এত দারুণ খেলে ফাইনালে উঠে তাতে খেলতে না পারার কষ্ট, এর ওপর কদিন পর হতে যাওয়া রাশিয়া বিশ্বকাপে সালাহর খেলা নিয়ে শঙ্কা! শেষ পর্যন্ত লিভারপুল গোলকিপার লরিস কারিয়াসের অবিশ্বাস্য দুই ভুলের সুযোগে সেই চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালটা ৩-১ গোলে জিতেছে রিয়াল।

রামোস ও সালাহর সেই ঘটনা।
ফাইল ছবি: এএফপি

আর নেইমারের প্রতিশোধ? গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে যে অনেক করেও পিএসজিকে জেতাতে পারেনি ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড আর কিলিয়ান এমবাপ্পের জুটি। বায়ার্ন মিউনিখের কাছে ১-০ গোলে হেরে গিয়েছিল পিএসজি। এই পিএসজিকে প্রথম চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতানোর স্বপ্ন নিয়েই তো ২০১৭ সালের আগস্টে বার্সেলোনা ছেড়েছিলেন নেইমার! তারপর চোটের কারণে প্রথম দুই মৌসুমে পারেননি, গত মৌসুম চোটমুক্ত হয়ে খেললেন। তাতেই এমবাপ্পেকে সঙ্গে নিয়ে পিএসজিকে নিয়ে যান ফাইনালে, প্যারিসের ক্লাবটির ইতিহাসের প্রথম চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল! কিন্তু শেষ বাধা আর পেরোনো হলো না।

এই মৌসুমে এরই মধ্যে চোটে পড়া নেইমারকে ছাড়াই লিওনেল মেসির বার্সেলোনাকে শেষ ষোলোতে বিদায় করে দিয়ে এসেছে পিএসজি। দুই লেগ মিলিয়ে ৫-২ গোলের জয়ে পিএসজির চারটি গোলই করেছেন এমবাপ্পে, প্রথম লেগে বার্সার মাঠে দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকই করেছেন। বার্সাকে পেরিয়ে এবার রবার্ট লেভানডফস্কির বায়ার্নের বিপক্ষে হিসাব চুকিয়ে নিতে পারবে পিএসজি?