প্রিয় তারকার আওয়াজ শুনে কোমা থেকে জেগে উঠলেন তিনি

এএস রোমার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় তারকা ফ্রান্সেসকো টট্টি।ছবি : এএফপি

প্রিয় তারকার সঙ্গে একটু কথা বলতে পারলে, প্রিয় তারকার কাছ থেকে একটু শুভকামনা পেলে কিংবা ছবি তোলার সুযোগ পেলে ভক্তদের আজন্মলালিত স্বপ্ন পূরণ হয়। কিন্তু ভক্তকে নতুন করে ‘জীবন দান’ করতে পারেন ক’জনা?

ফ্রান্সেসকো টট্টি যা করেছেন, আপাতদৃষ্টিতে সেটাই মনে হতে পারে। আক্ষরিক অর্থে অবশ্যই নয়, সেটা সম্ভবও না। তবে কাকতালীয়ভাবে তো বটেই। নয় মাস ধরে কোমায় থাকার পর এক রোমাভক্ত জেগে উঠেছেন রোমার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় তারকা টট্টির ভিডিওবার্তা পেয়েই!

দুর্ঘটনার আগে ইলিয়েনা।
ছবি : টুইটার

গল্পটা ইলেনিয়া মাতিয়ির। ১৯ বছরের এই তরুণী রোমের লাৎসিও নারী দলের ফুটবল খেলোয়াড় বহুদিন ধরে। লাৎসিওতে খেললেও, লাৎসিওরই নগর প্রতিদ্বন্দ্বী রোমার পাঁড় ভক্ত তিনি। ফলে রোমার কিংবদন্তি ফ্রান্সেসকো টট্টিকে আরও দশজন রোমা সমর্থকদের মতো দেবতুল্য মানেন। গত ডিসেম্বরে নির্ঝঞ্ঝাট জীবনটা কেমন যেন ওলট-পালট হয়ে গেল ইলেনিয়ার। ইলেনিয়া সেদিন বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানোর পর রাত দুটোয় বাসায় ফিরছিলেন গাড়িতে করে। সঙ্গে ছিলেন এক বন্ধু, মার্তিনা ওরো। গাড়ি মার্তিনাই চালাচ্ছিলেন। হঠাৎ একটা গাছের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় গাড়িটার। ঘটনাস্থলেই মারা যান মার্তিনা। এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ইলেনিয়াকে নিয়ে যাওয়া হয় রোমের গেমেলি হাসপাতালে।

মাথায় চোট লেগেছিল বাজে ভাবে। সঙ্গে সঙ্গে কোমায় চলে যান এই তরুণী। বাঁচার সম্ভাবনা দিন দিন কমছিল। তাও, ইলেনিয়ার বাবা-মা আশা ছাড়েননি। রোমার প্রতি মেয়ের ভালোবাসার জন্য প্রায় প্রতিদিন ক্লাবটার সংগীত বাজাতেন শয্যাপাশে। শেষমেশ মেয়ের জন্য তাঁরা ধরনা দেন রোমার সবচেয়ে বড় কিংবদন্তি ফ্রান্সেসকো টট্টির কাছে।

সবকিছু শুনে ভক্তের জন্য একটা ভিডিওবার্তা রেকর্ড করে পাঠান টট্টি। ভক্তকে শুভকামনা জানিয়ে বলেন, 'হাল ছেড়ো না ইলেনিয়া। আমরা জানি তুমি পারবে, আবারও সুস্থ হয়ে ফিরে আসবে আমাদের মাঝে। আমরা সবাই তোমার সঙ্গেই আছি।'

কোমা থেকে জেগে ওঠার পর।
ছবি : টুইটার

কাকতালীয় ব্যাপার হলো, সে ভিডিওবার্তা শোনার পরেই জেগে উঠেছেন ইলেনিয়া, ফিরেছেন কোমা থেকে—মনটাই জানিয়েছে ইতালির সংবাদমাধ্যম লা রিপাবলিকা। মেয়েকে ফিরে পেয়ে বাবা-মাও তাই আনন্দে আটখানা। প্রিয় তারকাকে ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি তাঁরা, ফ্রান্সেসকো, তোমার অসাধারণ কণ্ঠস্বর, আবেগী বার্তা, ইলেনিয়ার প্রতি তোমার ভালোবাসা আবারও ওকে জাগিয়ে তুলেছে। ওর মুখে আবারও ওই হাসি ফিরে এসেছে। ওর চোখেমুখে আবারও ফিরে এসেছে সেই দ্যুতি।'

শুধু ধন্যবাদ জানিয়েই ক্ষান্ত হননি তাঁরা, মেয়েকে নিয়ে টট্টির সঙ্গে মুখোমুখি দেখা করার আশাও ব্যক্ত করেছেন, 'আশা করছি তোমার সঙ্গে দেখা করার। ইলেনিয়া তোমার অপেক্ষায় আছে!'