ফাতির ‘রোনালদিনহো’ হবেন মেসি?

জমে ওঠার আভাস দিচ্ছে আনসু ফাতি-মেসি-গ্রিজমান ত্রয়ী।ছবি: এএফপি

রোনালদিনহোর পিঠে লিওনেল মেসি, হাত নাড়িয়ে জবাব দিচ্ছেন দর্শক অভিবাদনের। ২০০৫ সালের ছবিটি হিরন্ময় হয়ে আছে ফুটবল ইতিহাসে। পেশাদার ফুটবলে বার্সেলোনার জার্সিতে মেসি প্রথম গোলের খাতা খুলেছিলেন রোনালদিনহোর পাস থেকে। লা লিগায় আলবাসেতের বিপক্ষে গোলটি করেছিলেন। এর পরেই মেসিকে পিঠে তুলে নিয়েছিলেন রোনালদিনহো।

২০০৫ সালে কলি থেকে কেবল ফুল হয়ে ফুটতে শুরু করেছেন মেসি আর রোনালদিনহো দলটির প্রতিষ্ঠিত তারকা। মেসির প্রয়োজন ছিল স্নেহ ও ভালোবাসা। তখন তাঁর পিঠে স্নেহের হাতটা রেখেছিলেন রোনালদিনহো। ব্রাজিলিয়ান ও আর্জেন্টাইন যুগল একসঙ্গে বার্সেলোনার জার্সিতে মাঠ মাতিয়েছেন ২০০৮ সাল পর্যন্ত। পরে মেসি হয়ে উঠেছেন ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়। মেসি অনেকবারই বলেছেন তাঁর জীবনে রোনালদিনহোর কতটা প্রভাব। সেই মেসি বুঝি এখন নিজে হয়ে উঠতে যাচ্ছেন ‘রোনালদিনহো’, আর তাঁর ভূমিকায় আনসু ফাতি।

কাল রাতে ভিয়ারিয়ালকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে লা লিগায় দারুণ সূচনা করেছে বার্সেলোনা। ২ গোল করে বার্সা সমর্থকদের প্রত্যাশা বাড়িয়ে দিয়েছেন ১৭ বছর বয়সী ফাতি। মেসি পরবর্তী যুগে বার্সার সবচেয়ে বড় কান্ডারি হবেন এই স্প্যানিশ তরুণ, এমনটাই আশা সমর্থকদের। সে আশার পালে কাল আরেকটু হাওয়া লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। তাঁর জোড়া গোলের দিনে মেসিও ১টি গোল পেয়েছেন। অন্যটি আত্মঘাতী। মেসির গোলটি এসেছে পেনাল্টি থেকে। সেই পেনাল্টি আবার বার্সা পেয়েছে ফাতির সৌজন্যেই। তাই অনেকেই ভাবতে শুরু করেছেন মেসির জায়গা নিতে যাচ্ছেন ফাতি আর অতীতের রোনালদিনহোর জায়গা নিতে যাচ্ছেন মেসি।

গোল করিয়ে মেসিকে পিঠে বসিয়ে নিয়েছেন রোনালদিনহো।
ফাইল ছবি

মেসির সঙ্গে ফাতির মিল আছে আরও। মেসি যেমন বার্সেলোনায় বেড়ে উঠেছেন, ফাতিও তাই। বার্সা একাডেমির ছাত্র ফাতির স্বপ্ন ছিল একাডেমির সবচেয়ে বড় আবিষ্কার মেসির সঙ্গে খেলা, ‘ছেলেবেলা থেকেই মেসির সঙ্গে খেলার স্বপ্ন ছিল এবং আমি এখন সেটাই করছি।’ গত বছরের আগস্টে বার্সেলোনার জার্সিতে অভিষেক হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ১০টি গোল করেছেন ১৭ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড।

১০—আনসু ফাতির গোল। গত মৌসুমের শুরু থেকে ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে ফাতির (১৭ বছর ৩৩২ দিন) চেয়ে কম বয়সী কেউ ১০ গোল করতে পারেননি।

মেসিকে পাশে পাওয়াটা কতটা সাহায্য করছে তাঁকে সেটিরও ব্যাখ্যা দিলেন ফাতি, ‘শুধু মাঠে নয় অনুশীলনেও তিন সব সময় আমাকে সাহায্য করেন। আমি বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়ের সঙ্গে খেলছি এবং চেষ্টা করছি প্রতিটি ম্যাচেই তাঁর কাছে থেকে যতটা সম্ভব শেখার।’

আফ্রিকান দেশ গিনি-বিসাউয়ে জন্ম নেওয়া ফাতির উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ দেখছেন বার্সেলোনার কোচ কোমানও, ‘আনসু একজন তরুণ খেলোয়াড়, যাকে ধারাবাহিকতা খুঁজে নিতে হবে। সে ভালো ছেলে। সে পরামর্শ শুনতে আগ্রহী, আগ্রহী নিজেকে এগিয়ে নিতেও। আজ সে দেখিয়েছে বার্সায় তার ভবিষ্যৎ কতটা উজ্জ্বল। ’