বাংলাদেশ ক্লান্ত ছিল, পক্ষপাত দেখিয়েছেন ইরাকি রেফারি

ক্লান্তি ও রেফারিংকে মালদ্বীপের বিপক্ষে হারের কারণ মনে করছেন ব্রুজোনছবি: বাফুফে

মালদ্বীপের প্রবল আক্রমণের চাপ সামলাতে পারেনি বাংলাদেশ। অনেক ভুল করেছেন জামাল ভূঁইয়ারা। বল পায়ে রাখতে পারেননি তাঁরা আগের দুই ম্যাচের তুলনায়। প্রতিপক্ষের রক্ষণে এসে খেই হারিয়েছেন। ফলে গত রাতে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে মালদ্বীপের বিপক্ষে ২-০ গোলে হেরে গেছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের হারের কারণ হিসেবে কোচ অস্কার ব্রুজোন ক্লান্তিকে দায়ী করেছেন। ফুটবলাররা ক্লান্ত হয়ে না পড়লে ম্যাচের ফল অন্য রকমও হতে পারত বলে মনে করেন এই স্প্যানিশ কোচ। ম্যাচের পর স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১টায় সংবাদ সম্মেলনে এসে ব্রুজোন বলেছেন, ‘সাত দিনে আমরা তিনটি ম্যাচ খেলেছি। ফলে দ্বিতীয়ার্ধে আমরা শক্তি হারিয়েছি। ছেলেরা স্বাভাবিকভাবে খেলতে পারেনি।’

মালদ্বীপ যোগ্যতর দল হিসেবেই বাংলাদেশকে হারিয়েছে। সবদিক থেকেই মাঠে স্বাগতিকেরা এগিয়ে ছিল এবং যোগ্যতর দল হিসেবে জিতেছে। তবে নিজেদের ভুলভ্রান্তির সঙ্গে বাংলাদেশ কোচ কাঠগড়ায় তুলেছেন ইরাকের রেফারি ইউসুফ সাইদ হাসানকেও। ক্ষুব্ধ কণ্ঠে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘রেফারি প্রথম মিনিট থেকেই পক্ষপাতদুষ্ট ছিল। এই রেফারিকে টুর্নামেন্ট থেকে বের করে দেওয়া উচিত।’

মালদ্বীপ ফুটবলারদের শৈলির কাছে বড় ব্যবধানে পরাজিত বাংলাদেশ
ছবি: বাফুফৈ

বাংলাদেশ কোচ আগের দিন বলেছিলেন, টুর্নামেন্টের সেরা আক্রমণভাগ মালদ্বীপের। তবে তাদের গোল করতে হবে টুর্নামেন্টের সেরা রক্ষণের বিপক্ষে। কিন্তু ব্রুজোনের ‘টুর্নামেন্টসেরা রক্ষণ’ আটকাতে পারেনি আলী আশফাক, আলী ফাসিরদের। ৪-২-৪ ছকে মালদ্বীপ আক্রমণে ৪ ফুটবলার নিয়ে প্রথম ৩০ মিনিট পর থেকে বাংলাদেশের ওপর চাপ বাড়িয়ে তোলে। সেই চাপ আর কাটিয়ে ওঠা যায়নি।

প্রথমার্ধে অবশ্য রক্ষণ ভালোই করেছে বাংলাদেশ। সমস্যা হয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে। ব্রুজোন সেটাই বলেছেন, ‘প্রথমার্ধে আমরা ভালোই খেলেছি। রক্ষণে ডান প্রান্তে কোনো সমস্যা হয়নি, তবে বাঁ দিকটায় একটু হয়েছে। যদিও এই অর্ধটা ৫০-৫০–ই ছিল। আসলে দ্বিতয়ার্ধে আমরা ভালো খেলতে পারিনি। রক্ষণ দুটি গোল খেয়েছে। স্থানীয় দর্শকদের প্রবল আনন্দ–উল্লাসও একটা চাপ হয়েছে আমাদের ওপর।’

মাঠে ছন্নছাড়া মনে হয়েছে বাংলাদেশ দলকে
ছবি: বাফুফৈ

ম্যাচে ৩০টি ফাউল করে ৫টি হলুদ কার্ড দেখেছেন বাংলাদেশের ফুটবলাররা—ইয়াছিন আরাফাত, ইব্রাহিম, তারিক, জামাল, জুয়েল রানা। ব্রুজোন নিজেও দেখেছেন হলুদ কার্ড। ফলে তাঁর মেজাজটা এমনিতেই বিগড়ে ছিল। যে কারণে রেফারিকে একহাত নিয়েছেন। তবে মালদ্বীপের প্রশংসা করতে ভোলেননি। বলেছেন, রেফারিকে বাংলাদেশের বিপক্ষে বাঁশি না বাজালেও চলত। ব্রুজোনের কথা, ‘আমাদের হারের কারণ রেফারিং। তবে এটা মূল কারণ নয়।’

শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে শুরু। ভারতের সঙ্গে ১০ জন নিয়েও ড্র। স্বাগতিক মালদ্বীপের কাছে হার। ৩ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট। ফাইনালে ওঠার সম্ভাবনা এখনো আছে বাংলাদেশের। ১৩ অক্টোবর শেষ ম্যাচে হারাতেই হবে নেপালকে। সে ম্যাচে ড্র করলে কোনো সম্ভাবনা থাকবে না লাল–সবুজের। বাংলাদেশ কোচ সেটা মনে করিয়ে দিয়ে আশার গানই গাইলেন সংবাদ সম্মেলনের শেষ দিকে, ‘আমরা ১৬ অক্টোবরের ফাইনাল খেলতে চাই। নেপালের বিপক্ষে আমরা জিতব, আশা করি।’

সেদিকেই এখন তাকিয়ে বাংলাদেশ।