বাংলাদেশে ফিরে প্রথম জয়ের স্বাদ পেলেন জামাল

সাইফ স্পোর্টিংকে জেতাতে নাইজেরিয়ার জন ওকোলি করেছেন জোড়া গোল।ছবি: প্রথম আলো

প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আজ গোলের মেলা বসেছিল যেন। তিন ম্যাচ মিলিয়ে মোট গোল হয়েছে ১১টি। রাতে শেষ ম্যাচে হয়েছে সবচেয়ে বেশি, ৫ গোল। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রকে ৪–১ গোলে হারিয়েছে সাইফ স্পোর্টিং। নাইজেরিয়ার জন ওকোলির জোড়া গোলের রাতে একটি করে গোল করেছেন কেনেথ ইকেচুকু ও ইয়াসিন আরাফাত। মুক্তিযোদ্ধার ব্যবধান কমানো গোলটি সজন মিয়ার।

কলকাতা মোহামেডানের হয়ে ভারতের আই লিগ শেষ করে লিগের দ্বিতীয় পর্বে সাইফে ফিরে আসেন জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। এরপর থেকে জয়ের দেখাই পাচ্ছিল না সাইফ। রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটির সঙ্গে ড্রয়ের পর টানা দুই ম্যাচে হার। সর্বশেষ ম্যাচে তো শেখ জামাল ধানমন্ডির কাছে উড়ে গিয়েছিল ৫–২ গোলে।

সতীর্থকে নিয়ে সাইফ স্পোর্টিংয়ের জন ওকোলির গোল উদ্‌যাপন।
ছবি: প্রথম আলো

অবশেষে চতুর্থ ম্যাচে এসে জয়ের দেখা পেলেন জামাল। ইংলিশ কোচ স্টুয়ার্ট হলেরও এটি প্রথম জয়। আগের ম্যাচে ৪–১–৪–১ ফরমেশনে জামালকে আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার হিসেবে খেলিয়েছিলেন হল। সেদিন রক্ষণভাগের সঙ্গে সাইফের মাঝমাঠের শৃঙ্খলাও ভেঙে পড়েছিল। আজ ৪–২–৩–১ ফরমেশনে জামালকে হোল্ডিং মিডফিল্ডার পজিশনে খেলানো হয়েছে। ফলে জন ওকোলিও ফিরতে পেরেছেন তাঁর নাম্বার টেন পজিশনে। সব মিলিয়ে সাইফের খেলাতেও ছিল ছন্দ। অন্যদিকে দুই বিদেশি ছাড়াই মাঠে নেমেছিল মুক্তিযোদ্ধা।

ওকোলি তো আজ একাই ধসিয়ে দিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদকে। প্রথম দুটি গোলই তাঁর। ১১ মিনিটে ওকোলির গোলে এগিয়ে যায় সাইফ। রহমত মিয়ার থ্রু ধরে বাঁ প্রান্ত দিয়ে বক্সে ঢুকে আলতো টোকায় গোলমুখে বল রাখেন ইকেচুকু। টোকা দিয়ে বল জালে জড়ান ওকোলি।

২৩ মিনিটে প্রতি আক্রমণ থেকে তাঁর দ্বিতীয় গোলটি বিশ্বমানের একক মুভে। নিজেদের অর্ধে প্রতিপক্ষ মোহাম্মদ সোহেলের ভুল পাস জামালের পায়ে পড়ে। জামাল বলটি দেন ওকোলিকে। মাঝমাঠের অনেক নিচে থেকে বাঁ প্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে ভোঁ–দৌড় দেন ওকোলি। রাইটব্যাক মোহাম্মদ ইমন স্লাইডিং ট্যাকল করেও থামাতে পারলেন না। সোহেল পেছন পেছন দৌড়িয়েও ওকোলির নাগাল পেলেন না। ওকোলি বক্সে ঢুকে ঠান্ডা মাথায় দূরের পোস্ট দিয়ে প্লেসিংয়ে জালে জড়িয়ে দিলেন।

সাইফ স্পোর্টংয়ের খেলোয়াড়দের গোলের উচ্ছ্বাস।
ছবি: প্রথম আলো

৪৪ মিনিটে দারুণ এক গোল করে ম্যাচটি জমিয়ে তোলেন রাইটব্যাক সজন মিয়া। বক্সের বাইরে থেকে ডান পায়ের বাঁকানো শটে সাইফ গোলরক্ষক পাপ্পু হোসেনকে বোকা বানান তিনি। বল জালে জড়ানোর পর পাপ্পুর কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা দেখেই বোঝা যাচ্ছিল, এমন কোনো কিছুর জন্য প্রস্তুত ছিলেন না তিনি। কিন্তু ওই পর্যন্তই। বিরতিতে যাওয়ার আগে আরও একটি গোল করে সাইফ। জটলার মধ্যে থেকে ভলিতে ৩–১ করেন ইকেচুকু।

৭১ মিনিটে ব্যবধান কমাতে পারত মুক্তিযোদ্ধা। সারোয়ার জামান নিপুর শটে দারুণভাবে রক্ষা করেন পাপ্পু। ৭৭ মিনিটে ৪–১ করেন সাইফের সেন্টার ব্যাক ইয়াসিন। সিরোজউদ্দিন রাখমাতুলেভের কর্নারে হেডে গোলটি করেন তিনি। গোল উদ্‌যাপনে জার্সি খুলে হলুদ কার্ড দেখতে হয় তাঁকে।

এই জয়ে ১৬ ম্যাচে ২৬ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে সাইফ। ১৫ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে ১৩ দলের মধ্যে ১১তম স্থানে মুক্তিযোদ্ধা।