বাংলাদেশের ফুটবলারদের কার কত দাম

বাংলাদেশের সবচেয়ে দামী ফুটবলার কে?ফাইল ছবি

ফুটবলের দলবদলের বিশ্ব রেকর্ড কত? ইউরোপিয়ান ফুটবল নিয়ে কিছুটা আগ্রহ থাকলে অথবা ব্রাজিলের সমর্থক হয়ে থাকলে উত্তরটা হয়তো জানা আছে আপনার। ২২ কোটি ২০ লাখ ইউরো বা ২ হাজার ১৫৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা! নেইমারকে পেতে ২০১৭ সালে এ পরিমাণ খরচ করার আগে দুবার ভাবেনি পিএসজি। কিন্তু তাই বলে ২০২১ সালের শেষ দিনে ব্রাজিলিয়ান মহাতারকাকে এই মূল্যে কোনো ক্লাব কিন্তু কিনতে চাইবে না।

আজ যদি নেইমারকে কেনার সুযোগ পায় কোনো ক্লাব, তাহলে সে ক্লাবের কত অর্থ ব্যয় করা উচিত? এমন কঠিন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করে ট্রান্সফারমার্কেট। বিভিন্ন মানদণ্ড ঠিক করে দিয়ে একজন খেলোয়াড়ের জন্য সঠিক মূল্য ঠিক করে এই ওয়েবসাইট। তাদের হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফুটবলারের বর্তমান দাম এখন ৯ কোটি ইউরো বা ৮৭৫ কোটি টাকা। আর দলবদলের রেকর্ডে দুইয়ে থাকা কিলিয়ান এমবাপ্পের বর্তমান দাম এখন ১৬ কোটি ইউরো বা ১ হাজার ৫৫৬ কোটি টাকা।

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের সুবাদে এ তথ্যগুলো আজ অবশ্য অনেকেই জেনে গেছেন। কিন্তু যদি জিজ্ঞেস করা হয়, বাংলাদেশের সবচেয়ে দামি ফুটবলারের নাম কী? এই উত্তর দেওয়ার আগে একটু হলেও হয়তো ভাবতে হবে অনেককে।

বাংলাদেশের ফুটবলের ‘পোস্টার বয়’ হয়ে উঠেছেন জামাল ভূঁইয়া। জাতীয় দলের অধিনায়ক মাঝে কিছুদিন লা লিগায় ম্যাচ বিশ্লেষক হিসেবেও কাজ করেছেন জো মরিসনদের সঙ্গে। সে সুবাদে দেশের বাইরেও বাংলাদেশের ফুটবলের পতাকাবাহক হয়ে উঠেছেন এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। কিন্তু এমন তারকাখ্যাতিও জামাল ভূঁইয়াকে বাংলাদেশের সবচেয়ে দামি ফুটবলার বানাতে পারেনি। এমনকি ট্রান্সফারমার্কেটের চোখে সবচেয়ে দামি তিন ফুটবলারের মধ্যেই নেই জামাল।

চলুন দেখে নেওয়া যাক, মাঠের অবস্থানের দিক থেকে বাংলাদেশের সবচেয়ে দামি ফুটবলার কারা।
আনিসুর রহমান
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

গোলকিপার

আনিসুর রহমান
দল: বসুন্ধরা কিংস

২৪ বছর বয়সী গোলকিপার দুই মৌসুম ধরে খেলছেন বসুন্ধরা কিংসে। ক্লাবের হয়ে দুর্দান্ত ফর্ম তাঁকে জাতীয় দলের গোলপোস্টেও জায়গা করে দিয়েছে। ট্রান্সফারমার্কেটের চোখে আনিসুর শুধু বাংলাদেশের সবচেয়ে দামি গোলকিপারই নন, সবচেয়ে দামি ফুটবলারও। গত এক বছরে তাঁর মূল্য ৭৫ হাজার ইউরো বেড়ে প্রায় ২ লাখ ইউরো হয়েছে বলে জানাচ্ছে এই ওয়েবসাইট।
মূল্য: ১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা (২ লাখ ইউরো)

রাসেল মাহমুদ
দল: শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র

এই বছরই রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি থেকে শেখ রাসেলে এসেছেন এই গোলকিপার। ২৭ বছর বয়সী এই গোলকিপারের মূল্য বছরের মাঝপথে ২৫ হাজার ইউরো বাড়লেও বছরের শেষে আবার কমে গেছে।
মূল্য: ১ কোটি ২২ লাখ টাকা (১ লাখ ২৫ হাজার ইউরো)

শহীদুল আলম
দল: আবাহনী লিমিটেড

আবাহনীর গোলপোস্টে পরিচিত মুখ শহীদুল। এই গোলকিপারের দামও মার্চে ২৫ হাজার ইউরো বেড়েছিল। কিন্তু বছর শেষ করেছেন ২০২০ সালের মূল্যেই।
মূল্য: ১ কোটি ২২ লাখ টাকা (১ লাখ ২৫ হাজার ইউরো)

আশরাফুল ইসলাম
দল: শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র

বাংলাদেশ জাতীয় দলের এই গোলকিপারের মূল্যও এই বছর অপরিবর্তিত আছে।
মূল্য: ৯৭ লাখ টাকা (১ লাখ ইউরো)

মোহাম্মদ নাঈম
দল: শেখ জামাল ধানমন্ডি

চট্টগ্রাম আবাহনী থেকে এ বছর শেখ জামালে এসেছেন নাঈম। এ বছর পারফরম্যান্স দিয়ে নিজের মূল্য দ্বিগুণ করে নিয়েছেন ২৫ বছর বয়সী গোলকিপার।
মূল্য: ৯৭ লাখ টাকা (১ লাখ ইউরো)

ফুটবলার ইয়াসিন আরাফাত
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

ডিফেন্ডার

ইয়াসিন আরাফাত
দল: বসুন্ধরা কিংস

১৮ বছর বয়সী লেফটব্যাককে এই বছরই দলে টেনেছে বসুন্ধরা কিংসে। ট্রান্সফারমার্কেটের চোখে দারুণ ফর্মে থাকা এই ডিফেন্ডারের মূল্য ৭৫ হাজার ইউরো বেড়েছে। বাংলাদেশের ফুটবলারদের মধ্যে তাঁর দাম দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
মূল্য: ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা (১ লাখ ৭৫ হাজার ইউরো)

তপু বর্মণ
দল: বসুন্ধরা কিংস

বাংলাদেশের সেরা ডিফেন্ডার বলে বিবেচিত এই ২৭ বছর বয়সী সেন্টারব্যাক। ট্রান্সফারমার্কেটের হিসাবে, এই বছর তাঁর মূল্য ২৫ হাজার ইউরো বেড়েছে। ফলে দেশের তৃতীয় দামি ফুটবলার এখন তপু।
মূল্য: ১ কোটি ৪৬ লাখ টাকা (১ লাখ ৫০ হাজার ইউরো)

রহমত মিয়া
দল: শেখ রাসেল

২২ বছর বয়সী ফুলব্যাক এ বছরই যোগ দিয়েছেন শেখ রাসেলে। তাঁরও মূল্য ২৫ হাজার ইউরো বেড়েছে ট্রান্সফারমার্কেটে।
মূল্য: ১ কোটি ২২ লাখ টাকা (১ লাখ ২৫ হাজার ইউরো)

মনির আলম
দল: চট্টগ্রাম আবাহনী

৪ নম্বরেও আরেক ফুলব্যাক। ২১ বছর বয়সী মনিরও এবারের মৌসুমে পারফরম্যান্স দিয়ে নিজের মূল্য ২৫ হাজার ইউরো বাড়িয়ে নিয়েছেন।
মূল্য: ১ কোটি ২২ লাখ টাকা (১ লাখ ২৫ হাজার ইউরো)

জালাল মিয়া
দল: চট্টগ্রাম আবাহনী

এ মৌসুমে দল বদলেছেন এই ডিফেন্ডার। ২৭ বছর বয়সীর মূল্য এই মৌসুমে এক লাফে পাঁচ গুণ বেড়েছে।
মূল্য: ১ কোটি ২২ লাখ টাকা (১ লাখ ২৫ হাজার ইউরো)

বাংলাদেশের জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া
ফাইল ছবি

মিডফিল্ডার

জামাল ভূঁইয়া
দল: সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেড

বাংলাদেশের ফুটবলের পোস্টার বয়ের দাম অপরিবর্তিত আছে। এ বছরে কখনো তাঁর দাম বাড়েনি বা কমেনি।
মূল্য: ১ কোটি ২২ লাখ টাকা (১ লাখ ২৫ হাজার ইউরো)

সোহেল রানা
দল: বসুন্ধরা কিংস

নতুন মৌসুমে সবচেয়ে বেশি বেতন পাওয়া এই মিডফিল্ডার এবারই আবাহনী ছেড়েছেন। যদিও ট্রান্সফারমার্কেট পুরো বছরে তাঁর মূল্য বাড়ানোর মতো কিছু খুঁজে পায়নি।
মূল্য: ১ কোটি ২২ লাখ টাকা (১ লাখ ২৫ হাজার ইউরো)

মোহাম্মদ ইব্রাহিম
দল: বসুন্ধরা কিংস

গতিশীল এই মিডফিল্ডারের দাম মৌসুমের মাঝপথে কিছুটা কমে গিয়েছিল। শেষ ভাগে আবার নিজের পুরোনো মূল্যে ফিরেছেন ইব্রাহিম।
মূল্য: ১ কোটি ২২ লাখ টাকা (১ লাখ ২৫ হাজার ইউরো)

জমির উদ্দিন
দল: সাইফ স্পোর্টিং

বাংলাদেশ পুলিশের হয়ে খেলে আলো কেড়েছেন এই মিডফিল্ডার, এই মৌসুমেই এসেছেন সাইফে। এক মৌসুমেই নিজের মূল্য বাড়িয়ে নিয়েছেন ৫০ হাজার ইউরো।
মূল্য: ১ কোটি ২২ লাখ টাকা (১ লাখ ২৫ হাজার ইউরো)

হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাস
দল: শেখ রাসেল

এ বছর নিজের দাম বাড়িয়ে নেওয়া আরেক খেলোয়াড় হেমন্ত। বছর শুরু করেছিলেন যে মূল্যে, বছর শেষ করেছেন তার দ্বিগুণ মূল্যে।
মূল্য: ৯৭ লাখ টাকা (১ লাখ ইউরো)

অনুশীলনে ফয়সাল আহমেদ
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

ফরোয়ার্ড

রাকিব হোসেন
দল: আবাহনী

চট্টগ্রাম আবাহনী থেকে আবাহনীতে যোগ দেওয়া দ্রুতগতির উইঙ্গার এবার নিজের মূল্য বাড়িয়ে নিয়েছেন ২৫ হাজার ইউরো।
মূল্য: ১ কোটি ২২ লাখ টাকা (১ লাখ ২৫ হাজার ইউরো)

সুমন রেজা
দল: বসুন্ধরা কিংস

উত্তর বারিধারার হয়ে ১০টি গোল করে জাতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছিলেন সুমন। এখন তিনি বসুন্ধরার খেলোয়াড়। এ বছরে নিজের মূল্য বাড়িয়েও নিয়েছেন ৫০ হাজার ইউরো।
মূল্য: ১ কোটি ২২ লাখ টাকা (১ লাখ ২৫ হাজার ইউরো)

মারাজ হোসেন
দল: সাইফ স্পোর্টিং

এই বছর আচমকাই লাইমলাইটে চলে এসেছেন এই স্ট্রাইকার। এ বছর নিজের মূল্য একলাফে ১ লাখ ইউরো করে নিয়েছেন মারাজ।
মূল্য: ৯৭ লাখ টাকা (১ লাখ ইউরো)

মোহাম্মদ আবদুল্লাহ
দল: শেখ রাসেল

২৪ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড সর্বশেষ প্রিমিয়ার লিগে ৫ গোল করেছেন। বাংলাদেশের আক্রমণভাগের খেলোয়াড়দের অবস্থা বিবেচনায় যা দুর্দান্ত। ট্রান্সফারমার্কেটে ২৫ হাজার ইউরো মূল্য বেড়েছে তাঁর।
মূল্য: ৯৭ লাখ টাকা (১ লাখ ইউরো)

মোহাম্মদ ফয়সাল আহমেদ
দল: সাইফ স্পোর্টিং

বয়সভিত্তিক দলে আলো ছড়ানো এই উইঙ্গার গত দেড় বছরে পেশাদার ফুটবলেও দারুণ করছেন। এবার নিজের মূল্য ট্রান্সফারমার্কেটে বাড়িয়ে নিয়েছেন ৫০ হাজার ইউরো।
মূল্য: ৯৭ লাখ টাকা (১ লাখ ইউরো)