বাংলাদেশের ভয়ের কারণ ভারতের যে পাঁচ তারকা
শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে শুভ সূচনা করেছে বাংলাদেশ। আজ নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ প্রতিবেশী ভারত। মালের জাতীয় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময়ে ম্যাচটি শুরু হবে বিকেল ৫টায়। ম্যাচে পরিষ্কারভাবে ফেবারিট র্যাঙ্কিংয়ে ৮২ ধাপ এগিয়ে থাকা ভারত। এখন বাংলাদেশ কোনো অঘটন ঘটাতে পারে কিনা, প্রশ্ন সেটিই। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে ভারতের এই পাঁচ খেলোয়াড়।
সুনীল ছেত্রী (স্ট্রাইকার)
সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামলে যে নামটি বাংলাদেশের ফুটবলারদের আচ্ছন্ন করে রাখে, তিনি সুনীল ছেত্রী। ভারতীয় জাতীয় দলের হয়ে তাঁর ৭৫ গোলের ৫টি বাংলাদেশের বিপক্ষে। বাংলাদেশকে বারবার হতাশ করেছেন এই স্ট্রাইকার। ২০১৩ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের জয়ের স্বপ্ন শেষ করে দেন শেষ মুহূর্তের ফ্রিকিক গোলে। এর পর ২০১৪ সালে গোয়ায় আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই গোল করে আবারও জয় বঞ্চিত করেন বাংলাদেশকে। সর্বশেষ গত জুনে কাতারে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ড্রয়ের স্বপ্ন দেখা বাংলাদেশ আবার হতাশায় ডুবেছে ছেত্রীর জোড়া গোলে। শেষ মুহূর্ত জোড়া গোল করে ছিনিয়ে নেন ম্যাচটা।
উদান্ত সিং (রাইট উইঙ্গার)
ভারতের সবচেয়ে গতিশীল উইঙ্গার বলা হয় তাঁকে। ঘণ্টায় ৩৪ কিলোমিটার গতিতে দৌড়াতে পারেন তিনি। গতির সঙ্গে বলের নিয়ন্ত্রণও দারুণ। উইং দিয়ে ওপরে উঠে মাপা ক্রসও করতে পারেন এই উইঙ্গার। বাংলাদেশের লেফটব্যাক ইয়াসিন আরাফাতকে যথেষ্ট সতর্ক থাকতে হবে উদান্তের বিপক্ষে।
গুরপ্রীত সিং (গোলকিপার)
শুধু দক্ষিণ এশিয়া নয় এশীয় মানের গোলকিপার বলা হয় তাঁকে। নরওয়ের ক্লাব স্টায়েবেকের হয়ে ইউরোপা লিগের বাছাইপর্বে খেলারও অভিজ্ঞতাও আছে তাঁর। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ভারতের দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন গুরপ্রীত। শুধু গোল ঠেকানো নয়, গোলকিক কিংবা লম্বা করে বাড়িয়ে দেওয়া তাঁর বল গুলো ভারতের আক্রমণেও দারুণ সহায়ক।
গ্লেন মার্টিনস (মিডফিল্ডার)
বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ২০১৯ সালে কলকাতার ম্যাচটিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে কোনো হোল্ডিং মিডফিল্ডার না খেলিয়ে যে ভুলটা করেছিলেন ইগর। গত জুনে দোহায় ডিফেন্স ও মিডফিল্ডের মাঝে দুজনকে রেখে সেই ভুলটা শোধরান ভারতের ক্রোয়াট কোচ। তাঁদের মধ্যে একজন এফসি গোয়ায় খেলা গ্লেন মার্টিনস। ক্লাব ফুটবলে তাঁকে কেন ‘তিন ফুসফুসের খেলোয়াড়’ বলা হয়, দোহায় জাতীয় দলের হয়ে দ্বিতীয় ম্যাচে খেলতে নেমেই দারুণ পরিশ্রম করে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। গ্লেনের মতো নির্ভরযোগ্য মিডফিল্ডার থাকলে আক্রমণভাগে সুনীল ছেত্রী, মানভির সিংরা প্রজাপ্রতির মতো উড়ে বেড়াতেই পারেন।
অনিরুদ্ধ থাপা (মিডফিল্ডার)
ভারতের অন্যতম সেরা মিডফিল্ডার অনিরুদ্ধ থাপা। বক্স টু বক্স মিডফিল্ডার বলা হয় তাঁকে। রক্ষণ থেকে শুরু করে আক্রমণভাগ পর্যন্ত সব জায়গায় তাঁর বিচরণ। পুরো ম্যাচ জুড়ে দৌড়াতে দেখা যায় তাঁকে। প্রতিপক্ষের পা থেকে বল কেড়ে নেওয়া থেকে শুরু করে আক্রমণ গড়া, সব কাজেই জুড়ে মেলা ভার তাঁর। গত মাসে নেপালের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে গোলও করেছেন অনিরুদ্ধ।
এই পাঁচ ফুটবলার আতঙ্ক ছড়াবেন বাংলাদেশ শিবিরে—এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে কোচ অস্কার ব্রুজোন নিশ্চয়ই এই পাঁচ তারকাকে নিয়ে আলাদা করেই ভাবছেন। এঁদের ঠেকানোর কৌশলটা নিশ্চয়ই তিনি বাতলে দেবেন তপু বর্মণ, তারিক কাজী, ইয়াসিন আরাফাতদের। ব্রুজোনের কৌশলের সার্থক প্রয়োগ ঘটিয়ে ভারতের বিপদজনক এই পাঁচ তারকাকে বাংলাদেশি ফুটবলাররা বোতলবন্দী করবেন—এটা আশা করাই যায়।
ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে যে কখনোই ছেড়ে কথা বলে না বাংলাদেশ।