বান্ধবীকে নগ্ন করে পিটিয়ে হোটেল থেকে বের করে দিয়েছিলেন গিগস!

ইউনাইটেডে যখন খেলতেনছবি: এএফপি।

ফুটবলার হিসেবে তিনি কিংবদন্তি। কিন্তু মানুষ হিসেবে? তেমন সুবিধার যে নয়, সেটা বছরের পর বছর ধরে বিভিন্ন কাণ্ড ঘটিয়ে বুঝিয়েছেন সবাইকে। তিনি রায়ান গিগস। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তো বটেই, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগেরই অন্যতম শ্রেষ্ঠ খেলোয়াড় মানা হয় তাঁকে।


স্ত্রী স্টেসি কুকের সঙ্গে বছরের পর বছর ধরে প্রতারণা করেছেন গিগস। ভাই রড্রি গিগসের স্ত্রী নাতাশার সঙ্গে টানা আট বছর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে ছিলেন। ওয়েলশ মডেল ইমোজেন থমাসের সঙ্গেও তাঁর পরকীয়ার কথা সবার জানা। স্টেসি কুকের আর কত সহ্য হবে? তিনি গিগসকে ছেড়ে চলে গেছেন কয়েক বছর হলো। এরপর থেকে গণসংযোগ কর্মকর্তা কেট গ্রেভিলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন গিগস।

ভাবি নাতাশার সঙ্গে আট বছর পরকীয়া করেছেন সাবেক এই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তারকা।
ছবি: টুইটার

সেই কেট গ্রেভিলের সঙ্গেও কি শান্তিতে আছেন? উল্টো এই নারীর কারণেই গিগসের আরেক কাণ্ড চলে এসেছে সামনে। গ্রেভিলকে শারীরিক নির্যাতনের দায়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এই ওয়েলশ ফুটবলারকে। এর দায়ে তিনি ওয়েলস ফুটবল দলের দায়িত্ব হারিয়েছিলেন। আদালতে গড়িয়েছে সে মামলা। তার শুনানিতেই এখন একের পর এক গোমর ফাঁস হচ্ছে। বান্ধবীকে নগ্ন করে পিঠে লাথি মেরে হোটেলকক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছেন গিগস।

গ্রেভিলের সঙ্গে সম্পর্ক থাকতে অন্যান্য নারীর সঙ্গেও সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন গিগস, যা নিয়ে তাঁকে অভিযুক্ত করেন গ্রেভিল। এসব শুনেই সেই কাণ্ড ঘটান গিগস। শুধু বান্ধবী কেট গ্রেভিলই নন, কেটের বোন এমা গ্রেভিলকেও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন ৪৭ বছর বয়সী সাবেক এ ফুটবলার। হোটেল থেকে কেট ও এমার জিনিসপত্র বের করে ফেলে দিয়েছেন। যদিও ম্যানচেস্টার ক্রাউন আদালতে চলতে থাকা শুনানিতে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গিগস।

রায়ান গিগস ও স্ট্যাসি কুক। যখন একসঙ্গে ছিলেন।
ছবি: এএফপি

গিগস উল্টো জানিয়েছেন, ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত নিজের সঙ্গীর সঙ্গে কোনো বাজে আচরণ করেননি। তবে আরও বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছে গিগসের নামে। কেট যখন অন্য নারীদের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে গিগসের কাছে জানতে চাইতেন, তখন কেটকে ‘ব্লক’ করে দিতেন—যেন তাঁর সঙ্গে কেট যোগাযোগ না করতে পারেন।

কেটের বন্ধুবান্ধব ও অফিসের মানুষজনের কাছে নিজেদের যৌনবিষয়ক সম্পর্ক ও আচরণের ব্যাপারে মেইল করে জানিয়ে দেওয়ার ভয় দেখাতেন গিগস। কেট যখন সম্পর্ক রাখতে চাননি, তখন হুটহাট বাজে খুদে বার্তা পাঠিয়ে বিরক্ত করতেন গিগস। কেটের অফিস, জিম কিংবা বাসায় হুটহাট চলে গিয়ে বেপরোয়া আচরণ করতেন।

কেট গ্রেভিলের সঙ্গে গিগসের সম্পর্ক সেই ২০১৭ থেকে।
ছবি: টুইটার

গত এপ্রিলে জামিন পেয়েছিলেন গিগস। সেবার তিনি আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে লিখেছিলেন, ‘আইনের প্রক্রিয়ায় আমার পূর্ণ সম্মান আছে, অভিযোগ কতটা গুরুতর, তা-ও আমি বুঝি। আদালতে আমি নিজেকে নির্দোষ দাবি করব। অভিযোগ থেকে নিজের নাম সরিয়ে নিতে পারব বলে আশা করছি।’


আগামী ৮ অক্টোবর এই মামলার তৃতীয় শুনানি অনুষ্ঠিত হবে একই আদালতে।
১৯৯০ সালে অভিষেকের পর ২৪ বছর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডেই খেলে অবসর নেওয়া গিগস ক্লাবপির হয়ে ৬৭২ ম্যাচ খেলেছেন। ১৩টি প্রিমিয়ার লিগের পাশাপাশি জিতেছেন দুটি চ্যাম্পিয়নস লিগও। অবসরের পর প্রথমে ডেভিড ময়েস ও পরে লুই ফন গালের অধীনে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে সহকারী কোচ ছিলেন। ওয়েলসের হয়ে ৬৪ ম্যাচ খেলা গিগস ইংল্যান্ডের চতুর্থ স্তরের ক্লাব স্যালফোর্ড সিটিরও মালিকদের একজন। মালিকানায় তাঁর সঙ্গীদের মধ্যে আছেন ডেভিড বেকহাম, গ্যারি নেভিলরা।