বার্সার টুইটারে ফিরলেন মেসি, খেলোয়াড়দের মুখেও হাসি

বার্সেলোনায় থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন লিওনেল মেসি।ছবি: রয়টার্স

লিওনেল মেসি যেন বার্সার কেউ নন অথবা কোনো দিন ন্যু ক্যাম্পের কোনো অংশ ছিলেন না! গত ২৫ আগস্ট মেসি বুরোফ্যাক্স পাঠিয়ে বার্সেলোনা ছাড়ার ঘোষণা দেওয়ার পর ক্লাবটির ওয়েবসাইট, টুইটার বা ফেসবুকে ঢুঁ দিয়ে এমনটাই মনে হচ্ছিল। পেদ্রি, ত্রিনকাওদের মতো সদ্য যোগ দেওয়া খেলোয়াড়দের ছবি ভিডিওর স্রোতে খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছিল না মেসি সংক্রান্ত কিছু। কিছুদিন আগেও যাঁকে নিয়ে অন্তত দুই তিনটি পোস্ট থাকত, সেই মেসি ছিলেন না বার্সেলোনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কোথাও।

গতকাল পরিস্থিতি বদলেছে। মেসি আবার বার্সেলোনায় থেকে যাওয়ার ঘোষণা দিতেই তিনি ফিরে এসেছেন বার্সার ওয়েবসাইট, ফেসবুক আর টুইটারে।

বার্সেলোনা মেসিকে প্রথমে ফিরিয়ে এনেছে তাঁর সাক্ষাৎকারের চুম্বক এক অংশ দিয়ে। বার্সেলোনার জন্য ভালোবাসার কোনো কমতি হবে না, মেসির এই উক্তির সঙ্গে নতুন মৌসুমের জার্সিতে তোলা এক ছবি দিয়েছে তারা। আর মেসি যে পাকাপাকিভাবে আবার তাঁদের চিন্তায় ফিরেছেন সেটা বোঝা গেছে আজকের এক পোস্টে। মেসির প্রতি ভালোবাসা তারা ফিরিয়ে এনেছে ১১ বছর আগের এক গোলের ভিডিও দিয়ে। ১১ বছর আগে ক্লাব বিশ্বকাপে এস্তুদিয়ান্তেস লা প্লাতার বিপক্ষে ফাইনালে অসাধারণ এক গোল করেছিলেন মেসি। যোগ করা সময়ে তাঁর সেই গোলেই এস্তুদিয়ান্তেসের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে জিতে ২০০৯ ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপা নিজেদের করে নেয় বার্সা। প্রথম দল হিসেবে এক মৌসুমে ছয়টি শিরোপা জয়ের রেকর্ড গড়ে কাতালান ক্লাবটি।

একটা সময়ে মেসি তো বার্সা ছাড়বেই। যদি সুন্দর ভাবে সেটা করা যেত তাহলেই বেশি ভালো দেখাত
লুইস এনরিকে, স্পেন কোচ

মেসি বার্সেলোনায় থেকে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর ওই গোলের ভিডিওটি বার্সেলোনা তাদের টুইটার ও ফেসবুকে দিয়েছে। মেসির থেকে যাওয়ার খবরে হাসি ফিরেছে দলটির খেলোয়াড়দের মুখেও। মেসির এই সিদ্ধান্তে খুশি হওয়ার কথা বলেছেন ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং। ডাচ মিডফিল্ডার ডি ইয়ং বলেছেন, ‘লিও মেসি থেকে যাওয়ায় ব্যক্তিগতভাবে আমি খুব খুশি। সে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় আর এমন একজন খেলোয়াড় বার্সেলোনায় থাকলে খুশি হওয়ারই কথা।’

উয়েফা নেশনস লিগে খেলার জন্য জাতীয় দলের সঙ্গে থাকা ডি ইয়ংকে প্রশ্ন করা হয়েছিল মেসি আর বার্সার সঙ্গে ঝামেলা নিয়ে কিছু জানেন কি না। প্রশ্নটি এড়িয়ে গেছেন ডাচ মিডফিল্ডার। সেই এড়িয়ে যাওয়ার জন্য তিনি কাজে লাগিয়েছেন ন্যু ক্যাম্পে না থাকার বিষয়টিকে, ‘এই কয়দিন বার্সেলোনার কারও সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ ছিল না। তা ছাড়া এটা মেসি আর ক্লাবের ব্যাপার। এ ব্যাপারে আমার কিছু করার নেই।’

চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে ম্যাচ শুরুর আগে সতীর্থদের সঙ্গে বার্সার ফরোয়ার্ড লিওনেল মেসি।
ফাইল ছবি রয়টার্স

থিয়াগো আলকানতারা বহুদিন ধরেই আর বার্সেলোনার অংশ নন। ২০১৩ সালেই বার্সা ছেড়ে বায়ার্ন মিউনিখে গেছেন। সে ক্লাবের হয়ে কদিন আগেই বার্সেলোনাকে ৮-২ গোলে উড়িয়ে দিয়েছেন চ্যাম্পিয়নস লিগে। তবু নিজের শৈশবের ক্লাবের লাভটা চোখে পড়ছে আলকানতারার কাছে, ‘ক্লাবের জন্য লাভজনক বিষয় যা, সেটাই আমার কাছে ভালো। লিও অবশ্যই ক্লাবে কিছু যোগ করে। সে যে দলেই থাকুক সেই দলের জন্যই ভালো। সে ন্যু ক্যাম্পে থাকলে বার্সেলোনার জন্য ভালো হবে।’

বার্সেলোনার সাবেক কোচ লুইস এনরিকে অবশ্য বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন কূটনীতিকের মতো। নেশনস লিগে ইউক্রেনের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হয় স্পেনের বর্তমান কোচ এনরিকেকে। সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছেন, ‘এটা খুবই স্পর্শকাতর বিষয়। আমি এটা নিয়ে যা বলব তা এ রকম ক্লাব সবার ঊর্ধ্বে। লিও বার্সেলোনাকে বড় ক্লাব হতে অনেক সাহায্য করেছে। তবু এ ব্যাপারে (ক্লাব ছাড়ার সিদ্ধান্ত) সমঝোতা হলেই ভালো হতো। একটা সময়ে মেসি তো বার্সা ছাড়বেই। যদি সুন্দর ভাবে সেটা করা যেত তাহলেই বেশি ভালো দেখাত।’