বার্সার নাকাল হওয়াই ‘বিনা পয়সায়’ হরলান্ডের প্রেরণা
আর্লিং হরলান্ড বার্সেলোনা-পিএসজি ম্যাচটা দেখেছেন খুব মনোযোগ দিয়ে। কিলিয়ান এমবাপ্পে যে বার্সেলোনার রক্ষণ নিয়ে খেললেন, সেটি দেখে তিনি রীতিমতো রোমাঞ্চিত। ওই ম্যাচ দেখেই মনে মনে ভেবে রেখেছিলেন, সেভিয়ার বিপক্ষে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের ম্যাচে যিনি এমবাপ্পের মতোই খেলার চেষ্টা করবেন। এমবাপ্পেকে তিনি নিজের অনুপ্রেরণাই বানিয়েছেন এই নরওয়েজিয়ান।
এমবাপ্পে পরশু রাতে বার্সেলোনার বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছিলেন। হরলান্ড সেভিয়ার বিপক্ষে হ্যাটট্রিক না পেলেও করেছেন জোড়া গোল। তাঁর ২ গোলই ডর্টমুন্ডের ৩-২ গোলের জয়ে রেখেছে বড় ভূমিকা।
নিজের জোড়া গোলের প্রতিক্রিয়ায় হরলান্ডও টেনেছেন এমবাপ্পেকেই, ‘যেকোনো ম্যাচেই গোল করার অনুভূতি মধুর। আমি চ্যাম্পিয়নস লিগের খেলাগুলো দারুণ ভালোবাসি। গতকাল (পরশু) এমবাপ্পেকে যখন বার্সেলোনার বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করতে দেখলাম, তখনই ভাবছিলাম, আমিও যদি এমন কিছু করতে পারতাম। এমবাপ্পেকে ধন্যবাদ বিনা পয়সায় আমাকে অনুপ্রাণিত করার জন্য।’
২০ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকারের চ্যাম্পিয়নস লিগ-ভালোবাসার যথেষ্ট কারণ আছে। এরই মধ্যে ইউরোপসেরা হওয়ার প্রতিযোগিতায় ১৩ ম্যাচ খেলে ১৮ গোল করে ফেলেছেন তিনি। কাল রাতের ২ গোল এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগে এককভাবে সর্বোচ্চ গোলদাতা বানিয়ে দিয়েছেন হরলান্ডকে। এবারের টুর্নামেন্টে তাঁর গোল ৮টি। এমবাপ্পেকে তিনি নিজের অনুপ্রেরণা বললেও গোল করার ব্যাপারে তিনি ফরাসি তারকাকেও এক জায়গায় ছাড়িয়ে যাওয়ার পথেই আছেন। আর দুটি গোল হলেই ২১ বছর বয়স হওয়ার আগেই চ্যাম্পিয়নস লিগে সবচেয়ে বেশি গোলের কীর্তিটা পুরোপুরি নিজের করে নিতে পারবেন হরলান্ড। ২৩ বছর বয়সী এমবাপ্পে ২১ বছর বয়স হওয়ার আগেই ১৯টি গোল করেছিলেন।
২০১৮ সালে চ্যাম্পিয়নস লিগে নিজের প্রথম আবির্ভাবেই রেড বুল সালজবুর্গের হয়ে ৮ গোল করেছিলেন হরলান্ড। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে বরুসিয়া তাঁকে ২০ মিলিয়ন ইউরোতে দলে ভেড়ায়। চ্যাম্পিয়নস লিগে ডর্টমুন্ডের হয়ে ৭ ম্যাচে এখন পর্যন্ত ১০ গোল তাঁর। এর মধ্য দিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগে এক দলের হয়ে সবচেয়ে কম ম্যাচ খেলে ১০ গোল করার রেকর্ডে তিনি পাসে বসেছেন রয় ম্যাকাইয়ের। ২০০৩ ও ২০০৪ সালে ম্যাকাই বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে রেকর্ডটি করেছিলেন।
ম্যাচে অবশ্য প্রথমে এগিয়ে গিয়েছিল সেভিয়াই। হঠাৎ করেই অনেকটা সৌভাগ্যক্রমে পাওয়া সেই গোল। সেভিয়ার সুসো শট নিয়েছিলেন গোলের দিকে। কিন্তু ডর্টমুন্ডের ম্যাটস হুমেলসের পায়ে লেগে দিক পরিবর্তিত হয়ে সেটি জালে জড়ায়। হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না ডর্টমুন্ডের গোলরক্ষকের।
তবে ডর্টমুন্ড তেড়েফুড়েই ম্যাচে ফিরে আসে। ১৯ মিনিটেই দূর থেকে দারুণ এক শটে গোল করেন মাহমুদ দাহুদ। ২৭ মিনিটে হরলান্ড গোলের খাতা খুললে ডর্টমুন্ড এগিয়ে যায় ২-১ গোলে। ৪৩ মিনিটে আসে হরলান্ডের দ্বিতীয় গোলটি। ম্যাচ শেষ হওয়ার আগ দিয়ে সেভিয়ার লুক ডি ইয়ং ব্যবধান কমান।
বুন্দেসলিগায় ডর্টমুন্ডের অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। ২১ ম্যাচে ১০টি জয় পেলেও হেরেছে ৮ ম্যাচে। লিগে এখন ছয়ে আছে দলটি। চ্যাম্পিয়নস লিগে ভালো করে লিগের দুঃখটা এখন ভুলতে চায় ডর্টমুন্ড। সেটি তারা পারবে কি না, তা সময়ই বলে দেবে।