বার্সেলোনা এখন দল হিসেবে এমনই

কাল বায়ার্নের বিপক্ষে এত রক্ষণাত্মক হয়ে রইল বার্সেলোনা!ছবি: রয়টার্স

ক্যাম্প ন্যুতে এমন বার্সেলোনাকে শেষবার কবে দেখেছিলেন সমর্থকেরা! এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করা সহজ নয়। প্রতিপক্ষের চেয়ে মানসিকভাবে পিছিয়ে থাকা এবং রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলতে বার্সেলোনাকে যে বহুদিন দেখা যায়নি। তাই একটা প্রজন্মের ফুটবলপ্রেমীদের মানসপটেও সেই স্মৃতি থাকার কথা নয়। কিন্তু কাল বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে ৩-০ গোলে হারের ম্যাচে বিবর্ণ, বিবশ এক বার্সেলোনাকে খুঁজে পাওয়া গেল। এমন একটা দলের দেখা মিলল, যারা এরই মধ্যে ইউরোপীয় ফুটবলে ‘পাওয়ার হাউস’ খেতাব হারিয়ে বসেছে। বাস্তবতাও বলছে, এটাই হালের বার্সেলোনা, যেখানে নেই লিওনেল মেসি। একটা খেলোয়াড়ের বিদায় যে কোনো দলকে এভাবে খাদের কিনারায় দাঁড় করাতে পারে, সেটি বার্সেলোনাকে দেখে বোঝা যাচ্ছে।

জেরার্ড পিকে ব্যাপারটি বুঝতে পেরেছেন। হারের পর বাস্তবতার জমিনেই পা রেখেছেন। অযথা আশার বাণী শুনিয়ে সমর্থকদের মন ভোলাতে যাননি, ‘যেটি হওয়ার, সেটিই হয়েছে। এটাই আমাদের দল (বার্সেলোনা)। কোনো অজুহাত দিতে চাইছি না। এটিই বাস্তবতা।’

দলের বাস্তবতাটা সমর্থকদের বুঝতে বলছেন কোচ কোমান
ছবি: রয়টার্স

কোচ রোনাল্ড কোমানও সমর্থকদের বুকে পাথর বাঁধার পরামর্শ দিয়েছেন, ‘আমাদের বাস্তবতায় পা রাখতে হবে। তরুণ খেলোয়াড়েরাই আমাদের ভবিষ্যৎ। আমাদের বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় চোটে পড়েছে। সেটিও একটা বড় সমস্যা। তবে এটা ঠিক, এ ম্যাচে যা হওয়ার ছিল, হয়েছে সেটিই।’

এটা ঠিক যে গতকালকের ম্যাচে বার্সেলোনা গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়কে পায়নি—ওসমান দেম্বেলে, আনসু ফাতি, মার্টিন ব্রাথওয়েট আর সের্হিও আগুয়েরো চোটের কারণে বাইরে বসে আছেন। কোচ কোমান জানিয়েছেন, জর্দি আলবাও কাল খেলেছেন অসুস্থতা নিয়ে। কিন্তু বায়ার্ন মিউনিখও যে দুর্ধর্ষ দল, সেটি বলা যাবে না। বিবিসি তো বলছে, বার্সেলোনা কাল এমন একটা দলের সঙ্গে উড়ে গেছে, যারা নিজেদের সেরা ফর্মেও ছিল না।

কোমানকে প্রতিদিন বলতে হচ্ছে একই কথা
ছবি: এএফপি

কোমান এত কিছুর পরেও পিকের মতো কোনো অজুহাত দেখাতে চান না, ‘আমি কোনো অজুহাত দিচ্ছি না, অজুহাত খুঁজেও বেড়াচ্ছি না। তবে সবাই জানে আমাদের সমস্যা কোথায়। আমরা চোটের কারণে আক্রমণে বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়কে পাচ্ছি না। আমাদের আরও কয়েক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে। সবাই চোট থেকে ফিরলে আমরা আরও বেশি অস্ত্র নিয়ে খেলতে পারব। আক্রমণে আরও দ্রুততা সংযোজন করতে পারব।’

বার্সা এ মুহূর্তে ইউরোপীয় ফুটবলের বড় শক্তি নয়!
ছবি: রয়টার্স

আক্রমণে গতি না থাকলে কী হয়, সেটাও বার্সেলোনা খুব ভালোভাবেই বুঝেছে, ‘বায়ার্নের মতো দলের বিপক্ষে যখন মাঠে নামবেন, তখন গতিটা খুব জরুরি। গতি না থাকলে খুব বেশি সামনে এগিয়ে আক্রমণে ওঠা যাবে না। এগুলো আমাদের মেনে নিয়ে কাজ করে যেতে হবে। আমরা কেমন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলছি, সেটাও মাথায় রাখতে হবে। আমাদের চেয়ে যে তারা ভালো দল, সেটাও স্বীকার করতে হবে।’

বার্সেলোনার কোচ যেভাবে কথা বলছেন, সেটিও তো সমর্থকদের বড্ড অচেনা!