বার্সেলোনা বাইরে থেকে একরকম, ভেতরে অন্যরকম

ম্যাথিউস ফার্নান্দেজছবি: টুইটার

ব্রাজিলিয়ানদের জন্য বার্সেলোনা দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠছে দিন দিন। প্রথমে এ খবরটা জানিয়েছিলেন দানি আলভেজ। বার্সেলোনা ছাড়ার পর থেকে সুযোগ পেলেই বিষোদ্‌গার করেছেন ক্লাবের বিপক্ষে। নেইমার তো ক্লাব ছাড়ার পর থেকেই কদিন পর পর আদালতে টানছেন বার্সেলোনাকে। অনেক আশা নিয়ে বার্সায় যোগ দেওয়া আর্থুর মেলোকে তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে জুভেন্টাসে পাঠানো হয়েছে। ক্লাবে টিকে থাকলেও ফর্ম হারিয়ে অপাঙক্তেয় হয়ে উঠেছেন ফিলিপে কুতিনিও।

সে দলে যোগ হলো আরেকটি নাম, ম্যাথিউস ফার্নান্দেজ।

এ মৌসুমে দলের বেতনের বোঝা কমাতে বেশ কিছু ফুটবলারকে বিক্রি করে দিয়েছে বার্সেলোনা। অনেককে ধারে পাঠিয়েছে। তবে ব্রাজিলিয়ান এই মিডফিল্ডারের ক্ষেত্রে এ দুই পদ্ধতিতে এগোতে চায়নি বার্সেলোনা। সরাসরি চুক্তিই বাতিল করে দিয়েছে। বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করে অবশেষে এ নিয়ে নিজের ক্ষোভ ঝাড়লেন ফার্নান্দেজ।

অনলাইন আলোচনায় বার্সাকে নিয়ে ক্ষোভ জানালেন ফার্নান্দেজ।
ছবি: টুইটার

২০২০ সালের জানুয়ারিতে পালমেইরাস থেকে ফার্নান্দেজকে কিনে নেয় বার্সেলোনা। ৭০ লাখ ইউরো খরচ করে নেওয়া মিডফিল্ডারকে এরপরই ধারেই বেশি খেলিয়েছে বার্সা। দেড় বছরে ফার্নান্দেজ মাত্র একটি ম্যাচ খেলেছেন বার্সেলোনার জার্সিতে।

তাঁর খেলায় সন্তুষ্ট হতে না পেরে তাই নতুন মৌসুমের শুরুতে তাঁকে ছেড়ে দিয়েছে বার্সেলোনা। ২০২৫ সাল পর্যন্ত চুক্তির মেয়াদ থাকায় বাকি সময়ে ফার্নান্দেজের প্রাপ্য বেতন ২৪ লাখ ইউরোও দিতে হয়েছে বার্সেলোনাকে!

এ ব্যাপারে গ্লোবোস্পোর্তের কাছে জমে থাকা ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন ২৩ বছর বয়সী মিডফিল্ডার, ‘আমার কোনো ধারণাই ছিল না (বার্সা যে চুক্তি বাতিল করছে)। যখন আমাকে এই মেসেজটা পাঠানো হলো, বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না। আমি তখন ঘরে ছিলাম। আমার স্ত্রীর সঙ্গে বাইরে বের হব, এ অবস্থায় ক্লাব থেকে মেসেজ এল। সেখানে জিজ্ঞেস করা হয়েছে, একই বার্তার মেইল পেয়েছি কি না। আমি “হ্যাঁ” বলে জানালাম যে আমি সেটা পেয়েছি। আমি ঠিকমতো বুঝিওনি। আমি আমার আইনজীবী ও এজেন্টের কাছে পাঠালাম। তাঁরাই জানালেন, আমার চুক্তি বাতিল করা হয়েছে।’

নেইমার-দানি আলভেজের বার্সা অধ্যায়ের শেষটা সুন্দর হয়নি।
ছবি: এএফপি।

ফার্নান্দেজের দাবি, সম্পর্ক ছিন্ন করার ব্যাপারে বার্সেলোনা তাঁর সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি, ‘সংবাদমাধ্যমে খবর আসার আগে কিছুটা সময় পেরিয়েছে। কিন্তু এ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি, কিছুই না। ওরা এমনকি আমাকে বিদায়বেলায় কোনো শুভকামনাও জানায়নি। এটা খুব বাজে ছিল। ক্লাবের পক্ষ থেকে খুবই নোংরা আচরণ।’

ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডারের দাবি, তাঁর সঙ্গে শুরু থেকেই বাজে আচরণ করেছে বার্সেলোনা। ছোটবেলার স্বপ্ন পূরণ করতে বার্সেলোনায় গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর সে স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে রূপ নিয়েছে।

বার্সায় মাত্র এক ম্যাচই খেলেছেন ফার্নান্দেজ।
ছবি: টুইটার

‘ছোটবেলা থেকেই বার্সেলোনায় খেলার স্বপ্ন দেখেছি। যখন সেখানে গেলাম, আমার সঙ্গে ফুটবলারের মতো আচরণ করেনি। আমি তাদের বলেছি, একজন বার্সেলোনার খেলোয়াড়ের মতো আচরণ করা হচ্ছে না আমার সঙ্গে। আমি কম বা বেশি যা-ই আয় করি না কেন, ক্লাব যা-ই করুক না কেন, আমি তো বার্সেলোনার খেলোয়াড়। আমি খেলি বা না খেলি সেটা তো আমার ওপর নির্ভর করে না। সেটা ক্লাব ও অন্য খেলোয়াড়ের ওপর নির্ভর করে। কিন্তু আমাকে অন্য খেলোয়াড়ের মতো দেখা হোক, এটাই চেয়েছি’ - ফার্নান্দেজের ক্ষোভ।

বাইরে থেকে বরাবরই বার্সেলোনার ভাবমূর্তি পরিচ্ছন্ন মনে হতো তাঁর। কিন্তু ক্লাবে যোগ দেওয়ার পর দেখলেন অন্য কিছু। তা-ই বললেন ফার্নান্দেজ, ‘আমি কিছুটা বিরক্ত ছিলাম এ নিয়ে। বাইরে থেকে এ ক্লাবকে দেখে এক রকম ভেবেছিলাম। কিন্তু সেখানে যোগ দেওয়ার পর অন্যরকম আচরণ করা হয়েছে আমার সঙ্গে। আমি জানি না সবার সঙ্গেই এমন হয় কি না। কিন্তু আমার সঙ্গে বেশ কিছু বাজে ব্যাপার ঘটেছে।’