বার্সেলোনার দেওয়া তিতকুটে স্বাদ আবার মনে পড়ল মরিনিওর

পেছনে হতাশ মরিনিও, দেখছেন বোদো/গ্লিমত খেলোয়াড়দের উল্লাসছবি : রয়টার্স

প্রায় দুই দশক ধরে জোসে মরিনিও বহু ক্লাবের দায়িত্বে ছিলেন। তারকাখ্যাতি পাওয়ার পর যতগুলো ক্লাবকে কোচিং করিয়েছেন, শক্তিমত্তা ও অর্থবিত্তের দিক দিয়ে এ এস রোমা নিঃসন্দেহে সেসব ক্লাবগুলোর মধ্যে নিচের দিকেই থাকবে। তাই বলে ছয়-ছয়টা গোল হজম করবে? এ-ও কি সম্ভব?


হ্যাঁ। সেটাই হয়েছে। জোসে মরিনিওর রোমা গত রাতে উয়েফা কনফারেন্স লিগের গ্রুপ পর্বের এক ম্যাচে ছয় গোল হজম করেছে। এমন তথ্যে চোখ কপালে উঠবে না, এ হতে পারে না। কিন্তু আরও আশ্চর্য লাগবে যখন এই ছয় গোল দেওয়া ক্লাবের নাম জানতে পারবেন! বোদো/গ্লিমত ; বিশ্বে এই ক্লাবের অস্তিত্ব আছে শুনলে পাঁড় ফুটবলভক্তেরও মাথা চুলকানোর কথা!

নিজের খেলোয়াড়দের মান নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন মরিনিও
ছবি : টুইটার

নরওয়ের এই ক্লাবই গত রাতে গুনে গুনে আধ ডজনবার বল ঢুকিয়েছে মরিনিওর রোমার জালে। জিতেছে ৬-১ গোলে।

ক্যারিয়ারে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো মরিনিও পাঁচ গোলের ব্যবধানে হারলেন। এর আগে ২০১০ সালে স্প্যানিশ লা লিগার এল ক্লাসিকোতে পাঁচ গোলের ব্যবধানে মরিনিওর রিয়াল মাদ্রিদকে হারিয়েছিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনা, সে ম্যাচের স্কোরলাইন ছিল ৫-০। ব্যবধান হিসাব না করলে এ নিয়ে প্রথমবারের মতো ছয় গোল হজম করলেন মরিনিও। জুভেন্টাস-ইন্টারের আধিপত্যে ছেদ টানার জন্য রোমায় এসেছিলেন, এসেছিলেন কিছু রেকর্ড গড়তে। তাই বলে এমন রেকর্ড হোক, অবশ্যই চাননি!

রোমার দিক থেকে হিসাব করলে ইউরোপীয় প্রতিযোগিতায় এটা তাদের ইতিহাসে তৃতীয় সবচেয়ে বড় পরাজয়। এর আগে দুবার ৭-১ গোলের ব্যবধানে হেরেছিল তাঁরা। তবে শক্তিশালী বায়ার্ন মিউনিখ আর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাছে সাত গোল খাওয়া, আর অখ্যাত বোদো/গ্লিমতের কাছে ছয় গোল খাওয়ার মধ্যে পার্থক্য তো আছেই!

মূল দলের বেশ কিছু খেলোয়াড়কে বসিয়ে বেঞ্চের খেলোয়াড় দিয়ে একাদশ সাজিয়েছিলেন রোমা। ট্যামি আব্রাহাম, লরেঞ্জো পেলেগ্রিনি, হেনরিক মিখিতারিয়ান, জর্ডান ভেরেতুত, ব্রায়ান ক্রিস্তান্তে, মাতিয়াস ভিনিয়া, জিয়ানলুকা মানচিনির মতো মূল একাদশের খেলোয়াড়দের বসিয়ে এ ম্যাচে মরিনিও সুযোগ দিয়েছিলেন ব্রায়ান রেনল্ডস, মারাশ কুমবুলা, রিকার্দো কালাফিওরি, এব্রিমা দারবো, গঞ্জালো ভিলার, বোর্হা মায়োরাল ও কার্লেস পেরেজের মতো খেলোয়াড়দের।

মূল একাদশের খেলোয়াড়দের সঙ্গে এই খেলোয়াড়দের মানে যে বিশাল পার্থক্য, সেটাই ম্যাচ শেষে জানিয়েছেন মরিনিও, ‘ম্যাচে কে কে খেলবে, সেটা আমিই ঠিক করেছিলাম। তাই এ ফলাফলের দায়ভার সম্পূর্ণ আমার। আমার উদ্দেশ্য ভালোই ছিল, কিছু খেলোয়াড়কে বিশ্রাম দিতে চেয়েছি, বেঞ্চের কয়েকজনকে সুযোগ দিয়েছি, যারা পরিশ্রম করে একাদশে আসার জন্য। আজ এমন একটা দলের সঙ্গে আমরা হেরেছি, যাদের মান আমাদের চেয়ে ভালো ছিল, অস্বীকার করার কিছু নেই।’

নিজের খেলোয়াড়দের মান নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন মরিনিও, ‘প্রতি ম্যাচে যদি একই একাদশ খেলাতে পারতাম, আমি খেলাতাম। এই দলের মূল একাদশ আর বেঞ্চের একাদশের মধ্যে বিশাল পার্থক্য রয়েছে। প্রতিটি পরাজয়ই ক্ষত সৃষ্টি করে। আমি এর মধ্যেই এ নিয়ে খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথা বলেছি। ভালো বিষয় হচ্ছে, এখন কেউ আমাকে জিগ্যেস করতে আসবে না যে আমি প্রতি ম্যাচে কেন একই একাদশ নামাই।’