বিতর্কিত পেনাল্টি গোলে লিগ শীর্ষ স্থান ধরে রাখল ম্যানচেস্টার সিটি

স্টার্লিংয়ের গোলে জয় পেয়েছে সিটিছবি: রয়টার্স

ম্যাচে দাপট দেখিয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি। ইতিহাদে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আক্রমণ যা করার, সেটা পেপ গার্দিওলার দলই করেছে। এ ম্যাচ সিটি ৩-৪ গোলের ব্যবধানে জয় পেলেও কারও আপত্তি থাকত না। কিন্তু সেই গোল তো করতে হবে কাউকে। একের পর এক সুযোগ পেয়েও গোল করতে পারছিল না সিটি। শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয়ার্ধের এক বিতর্কিত পেনাল্টি জয় এনে দিয়েছে সিটিকে। উলভসকে ঘরের মাঠে ১-০ গোলে হারিয়ে লিগের শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে ম্যানচেস্টার সিটি।

গার্দিওলার দলকে প্রায় আটকে ফেলেছিলেন উলভস কোচ ব্রুনো লাস
ছবি: রয়টার্স

এ মৌসুমেই সের্হিও আগুয়েরোকে ছেড়ে দিয়েছে সিটি। তাঁর জায়গায় একজন স্ট্রাইকার কেনার চেষ্টা করেছিল দলটি। কিন্তু মূল লক্ষ্য হ্যারি কেইনকে ছাড়তে রাজি হয়নি তাঁর ক্লাব টটেনহাম। পরবর্তী লক্ষ্য ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকেও শেষ মুহূর্তে টান দিয়ে নিয়ে গেছে নগর প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। একজন দক্ষ গোলশিকারির অভাবে নিজের কৌশলে একটু বদল এনেছেন গার্দিওলা।

বরাবরই উইং ব্যবহার করে বক্সের মধ্যে সুযোগ সৃষ্টি করে গোল বের করেছে ম্যানচেস্টার সিটি। এ মৌসুমেও উইং ব্যবহার করছেন গার্দিওলা, কিন্তু বক্সে আগুয়েরো না থাকায় ফরমেশনে দুজন ‘ফলস নাইন’ ব্যবহার করছেন। যাঁদের ক্রমাগত জায়গায় অদলবদল প্রতিপক্ষ রক্ষণে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। এর ফলে যে সূক্ষ্ম ফাঁক সৃষ্টি হয়, সেটা ব্যবহার করে কোনো উইঙ্গার বক্সের মধ্যে ঢুকে কাজটা সেরে নেন।

পেনাল্টি নিচ্ছেন স্টার্লিং
ছবি: রয়টার্স

আজ উলভসের রক্ষণ বেশ দারুণভাবে এ কৌশলকে অকেজো করে রেখেছিল। ম্যাচে ৭৩ ভাগ সময় বল দখলে ছিল সিটির, ২৩ বার শট নিয়েছেন গার্দিওলার শিষ্যরা, কিন্তু ‘ওপেন প্লে’তে গোল পাওয়া হয়নি তাঁদের। ম্যাচের ৬৬ মিনিটে গিয়ে পেনাল্টি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে না দিলে হয়তো জয় পাওয়াও হতো না। বের্নার্দো সিলভা ক্রস করেছিলেন। আর সেটা বক্সে থাকা মৌতিনিওর হাতে লেগেছিল। রেফারি জন মস পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন।

ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) রিপ্লে দেখেও সিদ্ধান্ত বদলাননি। যদিও রিপ্লে দেখে মনে হয়েছে, বল প্রথমে মৌতিনিওর গায়ে লেগে পরে হাতে লেগেছে এবং সেটাও তাঁর বাহুতে লেগেছে বলেই মনে হচ্ছিল। কিন্তু রেফারির সিদ্ধান্ত বদলানোর মতো জোরালো যুক্তি না পাওয়ায় সিদ্ধান্ত অপরিবর্তিত রাখেন ভিএআর সহকারী। আর পেনাল্টি থেকে গোল করেছেন রাহিম স্টার্লিং।

লাল কার্ড দেখেছেন হিমেনেজ (বাঁয়ে)
ছবি: রয়টার্স

ম্যাচের পাল্লা শুরু থেকেই সিটির দিকে হেলে ছিল। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে এ ম্যাচে উলভসের সব সম্ভাবনা কেড়ে নিয়েছেন দলটির সেরা খেলোয়াড় রাউল হিমেনেজ। ৪৬ মিনিটে রদ্রিকে মাঝমাঠে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেছিলেন। এর ফলে একটা ফ্রি–কিক পেয়েছিল সিটি। সেই ফ্রি–কিক ঠেকাতে বলের একদম সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন হিমেনেজ। রদ্রির ফ্রি–কিক বোকার মতো পা দিয়ে ঠেকিয়ে দিয়ে খেয়েছেন দ্বিতীয় হলুদ কার্ড। মাত্র ৩১ সেকেন্ডের ব্যবধানে এই দুই হলুদ কার্ডে ১০ জনের দলে পরিণত হয় উলভস।

এ জয়ে ১৬ ম্যাচে ৩৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই থাকল সিটি। ওদিকে ১ ম্যাচ কম খেলে ৩৪ ও ৩৩ পয়েন্ট নিয়ে দুই ও তিনে আছে লিভারপুল ও চেলসি।