বিতর্কিত পেনাল্টিতে জিতে লিভারপুলকে ধরে ফেলল ম্যান ইউনাইটেড

দারুণ সময় কাটছে ইউনাইটেডের।ছবি: রয়টার্স

অ্যাস্টন ভিলা কোচ ডিন স্মিথ যেন রাগে ফুঁসছিলেন! ভিএআর থাকার পরও এভাবে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড পেনাল্টি কীভাবে পেল, তা-ই যেন বুঝতে পারছিলেন না!

পেনাল্টিটা নিয়ে এত বিতর্ক, হয়তো সেটিই ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দিয়েছে বলে! ওই পেনাল্টি থেকে ব্রুনো ফার্নান্দেসের গোলে নিজেদের মাঠে কাল অ্যাস্টন ভিলাকে ২-১ গোলে হারিয়েছে ম্যান ইউনাইটেড। এ জয়ে ইউনাইটেডের জন্য ৩ পয়েন্টের পাশাপাশি বড় মানসিক প্রাপ্তি—পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থাকা লিভারপুলকে ধরে ফেলেছে রেড ডেভিলরা!

লিগে ১৬ ম্যাচ শেষে উলে গুনার সুলশারের ইউনাইটেডের পয়েন্ট ৩৩, শীর্ষে থাকা লিভারপুলেরও তা-ই। তবে গোল ব্যবধানে এগিয়ে এখনো লিগ শীর্ষে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন লিভারপুলই। তিনে থাকা লেস্টার সিটির পয়েন্ট ১৬ ম্যাচে ২৯।

বিতর্কিত পেনাল্টিটা ম্যাচের ৬১ মিনিটে। ভিলা বক্সে দগলাস লুইজের আলতো ধাক্কায় পড়ে যান ইউনাইটেড মিডফিল্ডার পল পগবা। রেফারি বাজান পেনাল্টির বাঁশি। সে সময় সেটিকে পেনাল্টি মনে হয়েছিল স্মিথেরও। তবে পরে ভিডিও রিপ্লে দেখে ভিলা কোচের ক্ষোভ, ‘সে সময় পেনাল্টি মনে হয়েছিল, কিন্তু ম্যাচের পর আবার দেখেছি ভিডিওটা। দেখলাম ও (পগবা) নিজে নিজেই পড়ে গেছে! (রেফারি) মাইকেল অলিভার কেন দেখলেন না ঘটনাটা, তা বুঝতে পারলাম না! ভিএআর তো এসব দেখার জন্যই এসেছে, তাই না?’

পেনাল্টি থেকে গোল ফার্নান্দেসের।
ছবি: রয়টার্স

স্কাই স্পোর্টসে ম্যাচের পর প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে পগবার পেনাল্টিটা প্রাপ্য ছিল না বলেই জানালেন ভিলা কোচ, ‘ও নিজে নিজে পড়ে গেছে। আমি ভিডিওটা আবার দেখেছি, আমার কাছে মনে হয়নি ওটা পেনাল্টি।’

জিতলে ভিলা নিজেরাই উঠে যেন পয়েন্ট তালিকার তিনে। ম্যাচটা তাই ইউনাইটেডের জন্য সহজ হবে না, বোঝাই যাচ্ছিল।

এই মৌসুমে বড় দলগুলোর বিপক্ষে ভিলার রেকর্ডও দারুণ। চ্যাম্পিয়ন লিভারপুলকে নিজেদের মাঠে ৭-২ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে, আর্সেনালকে তাদেরই মাঠে হারিয়েছে ৩-০ গোলে, চেলসির মাঠে এসে গত বৃহস্পতিবার ড্র করেছে ১-১ গোলে। কাল ইউনাইটেডকেও বেশ ভুগিয়েছে ভিলা।

দুই দলই বেশ ভালো অনেক সুযোগ পেয়েছে! প্রথমার্ধে ইউনাইটেডের আন্থনি মার্শিয়াল ভিলা গোলকিপারের পরীক্ষা নিলেন, তো কিছুক্ষণ পর ভিলার জন ম্যাকগিনের শট ফেরান ইউনাইটেড গোলকিপার দাভিদ দে হেয়া। তারপর ফ্রেড ও পল পগবা ইউনাইটেডের হয়ে দুটি ভালো সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। এর কিছুক্ষণ পর ফার্নান্দেসের শট চলে যায় বাইরে।

ইউনাইটেডের গোলের অপেক্ষা ফুরায় বিরতির পাঁচ মিনিট আগে। ডান দিক থেকে রাইটব্যাক অ্যারন ওয়ান-বিসাকার ক্রস হেড করে জালে জড়ান মার্শিয়াল।

কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে ইউনাইটেডকে চেপে ধরে ভিলা। শুরুতেই দা হেয়ার দারুণ রিফ্লেক্স বাঁচায় ইউনাইটেডকে, জ্যাক গ্রিলিশের ক্রসে ভিলা স্ট্রাইকার ওলি ওয়াটকিনসের হেড দারুণ ক্ষিপ্রতায় বারের ওপর দিয়ে উঠিয়ে দেন দা হেয়া। কিছুক্ষণ পর ভিলা উইঙ্গার আনোয়ার এল-গাজির শট পোস্ট ঘেঁষে চলে যায়।

ভিলার এত চেষ্টার পর প্রাপ্য গোলটা আসে ৫৮ মিনিটে। বাঁ দিক থেকে গ্রিলিশের ক্রস বক্সে অনেক খেলোয়াড়কে ফাঁকি দিয়ে আসে বার্ট্রান্ড ট্রায়োরের কাছে। তাঁর শট আর ফেরানো সম্ভব হয়নি ইউনাইটেড গোলকিপার দা হেয়ার। কিন্তু তিন মিনিট পর ওই বিতর্কিত পেনাল্টিতে আবার এগিয়ে যায় ইউনাইটেড।

শেষ দিকে অবশ্য ইউনাইটেড জয় আগেভাগে নিশ্চিত করার কিছু সুযোগ পেয়েছিল বটে! মার্শিয়ালের একটা শট ভিলার আর্জেন্টাইন গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্তিনেজের হাত ঝালিয়ে দিয়ে যায়। পগবা দারুণ একটা সুযোগ হাতছাড়া করেন, ফার্নান্দেসের ক্রসে পোস্টের খুব কাছ থেকে পগবার শট লাগে ক্রসবারে।

শেষ মুহূর্তে ভিলাকে সমতায় ফেরানোর সুযোগ পেয়েছিলেন ডিফেন্ডার টাইরন মিংসও। কিন্তু বেঁচে গিয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে ইউনাইটেডই!