‘বুকের পাটা থাকলে রিয়ালে আসবেন মেসি?’

মেসির সঙ্গে মাঠের প্রতিদ্বন্দ্বিতা মুখের কথাতেও ধরে রাখলেন টনি ক্রুস।
ছবি: টুইটার

লুইস ফিগো, হ্যাভিয়ের স্যাভিওলা, মাইকেল লাউড্রপ, বার্ন সুস্টারদের পথ অনুসরণ করবেন লিওনেল মেসি?

তেমন কোনো সম্ভাবনাই নেই। এক অর্থে এমন কিছুই ভাবাই অবান্তর। ফিগো-স্যাভিওলারা বার্সেলোনা থেকে যোগ দিয়েছিলেন রিয়াল মাদ্রিদে। মেসি যেহেতু বার্সা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাই কথাটা জিজ্ঞেস করা হয়েছিল টনি ক্রুসকে। মেসির রিয়ালে আসার সম্ভাবনা দেখেন কি না? রিয়ালের এই জার্মান মিডফিল্ডার তার জবাবে পরোক্ষ খোঁচাই মারলেন মেসিকে।

নিজের ভাই ফেলিক্সের সঙ্গে ‘এইনফাখ মাল লুপেন’ পডকাস্টে ক্রুস বলেন, ‘আমার মনে হয় না সে রিয়ালে আসবে কিংবা আসার মতো (মানসিক) সামর্থ্য তার আছে। স্প্যানিশে বলতে গেলে, এ জন্য বুকের পাটা থাকতে হয়। সম্ভবত পৃথিবীর কেউ মেসি ছাড়া বার্সেলোনা কল্পনাও করতে পারে না।’ স্প্যানিশ ফুটবলে রিয়াল-বার্সা চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাব। আর তাই ২০০০ সালে বার্সা ছেড়ে ফিগো রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর ঝড় বয়ে গিয়ে তাঁর ওপর দিয়ে। বার্সা সমর্থকেরা ফিগোকে ছেড়ে কথা বলেননি। ‘এল ক্লাসিকো’য় তাঁকে শূকরের মাথা ছুড়ে মেরেছিল বার্সা ভক্তরা।

শুধু ফিগো নন স্যাভিওলা, লাউড্রপদেরও একই পরিণতি মেনে নিতে হয়েছে। শত্রু ক্লাবে যোগ দেওয়া মেনে নিতে পারেননি বার্সা সমর্থকেরা। ক্রুস সম্ভবত সে দৃষ্টিকোণ থেকেই মেসির রিয়ালে যোগ দেওয়ার সাহস নিয়ে পরোক্ষভাবে প্রশ্ন তুললেন। সে যাই হোক ৩০ বছর বয়সী বিশ্বকাপজয়ী এ মিডফিল্ডার মনে করেন, বার্সা ছাড়লে ম্যানচেস্টার সিটিই মেসির জন্য হতে পারে আদর্শ জায়গা, ‘আমার মতে এটাই সেরা বিকল্প। কারণ তাদের আছে পেপ গার্দিওলা। সে বিশ্বের অন্যতম সেরা তবে আমার কাছে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো বিশ্বসেরা।’

মেসির বার্সা ছাড়লে রিয়ালের খেলোয়াড় হিসেবে মন খারাপ হবে না ক্রুসের। বরং প্রতিদ্বন্দ্বিতার জায়গা থেকে বিষয়টিকে সুবিধা হিসেবেই দেখছেন তিনি, ‘মেসি সর্বকালের অন্যতম সেরা। তার মাপের কোনো খেলোয়াড় আপনার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর হয়ে খেলা বন্ধ করলে এটা পরিষ্কার যে সেটি খারাপ হবে না। মেসির বার্সেলোনা ছেড়ে যাওয়ার অর্থ হলো তাদের বড় একটা শক্তির ঘাটতি।’

এল ক্লাসিকোয় মেসির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ভালোই জমে ক্রুসের।
ছবি: টুইটার

বার্সা-মেসি সম্ভাব্য বিচ্ছেদ ধীরে ধীরে আরও ঘোলাটে হয়ে উঠছে। কাল বৈঠকে বসেছিলেন মেসির বাবা ও এজেন্ট হোর্হে মেসি এবং বার্সা সভাপতি জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউ। এ বৈঠক থেকে কোনো সিদ্ধান্ত বেরিয়ে আসেনি, কোনো সমঝোতাও হয়নি। দুই পক্ষ নিজেদের অবস্থানে অটল। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘মার্কা’ জানিয়েছে, এই অচলাবস্থা নিরসনে পরবর্তী পদক্ষেপ হতে পারে মেসি বার্সা ছাড়ার সিদ্ধান্ত বুরোফ্যাক্সের মাধ্যমে ক্লাবকে জানানোর পর প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে কথা বলবেন।

এদিকে অনুশীলন ও পিসিআর টেস্টে উপস্থিত না হওয়ায় তাঁকে জরিমানা করার হুমকি দিতে পারে বার্সা শিবির। এর চেয়েও চরম কিছু হতে পারে আদালতের দ্বারস্থ হলে। দুই পক্ষই যেতে পারে আদালতে। তবে মার্কার মতে, দুই পক্ষের আদালতে যাওয়ার সম্ভাবনা খুব কম।

মেসির ক্লাব ছাড়ার পথ সুগম করতে বার্সার সঙ্গে কথা বলতে কালই স্পেনে পা রেখেছেন মেসির বাবা হোর্হে মেসি। বৈঠকের আগে বার্সেলোনার বিমানবন্দরে নামার পর সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছিলেন, তাঁর ছেলের বার্সায় ভবিষ্যৎটা ‘কঠিন’। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম দেপোর্তেস কুয়াত্রো হোর্হে মেসিকে জিজ্ঞেস করেছিল, বার্সায় মেসিকে দেখেন? ‘কঠিন, কঠিন’—জবাব দেন হোর্হে মেসি।

এদিকে আর্জেন্টাইন সংবাদকর্মী মার্টিন আরেভালোর টুইটটি চমকপ্রদ। তাঁর দাবি, লিওনেল মেসির বার্সেলোনায় থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা ৯০ শতাংশ। তাঁর টুইট, ‘‘আগামীকাল লিওনেল মেসিকে নিয়ে চূড়ান্ত কিছু হতে পারে। দৃশ্যপটে আসতে পারে নতুন কিছু। বিশ্বসেরা ফুটবলারের ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত থেকে যাওয়ার নিরেট সম্ভাবনা আছে। চুক্তির মেয়াদ পূর্ণ করবেন তিনি এবং এ মুহূর্তে বিষয়টি নিয়ে তিনি ভাবছেন।’