বেঁচে থাকতে অদ্ভুত এক ইচ্ছা ছিল ম্যারাডোনার

মানুষের মনে ম্যারাডোনা চিরকালই বেঁচে থাকবেন।ছবি: রয়টার্স

ডিয়েগো ম্যারাডোনা মানুষের মধ্যে থাকতে চেয়েছেন। ভালোবেসেছেন বলকে, মানুষকে; কখনো আলাদা হতে চাননি। তাই বুঝি এমন অনুরোধ!

আর্জেন্টাইন মহানায়ক এখন মা–বাবার পাশে চিরঘুমে। কাল তাঁকে সমাহিত করা হয়েছে। কিন্তু শোকের আবহ কাটেনি। আর্জেন্টিনায় রাষ্ট্রীয় শোক চলছে। বিশ্বজুড়ে মাতম চলছে ফুটবলপ্রেমীদের। এর মধ্যে ম্যারাডোনার অদ্ভুত এক ইচ্ছার কথা জানা গেল। জীবদ্দশায় ’৮৬ কিংবদন্তি নাকি এমন অনুরোধ করেছিলেন।

করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে লকডাউন চলাকালে ম্যারাডোনা নাকি তাঁর বন্ধুদের বলেছিলেন, মারা যাওয়ার পর ভক্তদের জন্য তাঁর দেহ যেন সংরক্ষণ করে রাখা হয়। ম্যারাডোনার ঘনিষ্ঠ ও আর্জেন্টাইন দৈনিক টিওয়াইসি স্পোর্টসের সংবাদকর্মী মার্টিন আলভারো জানিয়েছেন এমন তথ্য।

টিওয়াইসি স্পোর্টসকে আলভারো বলেন, ‘প্রথমে তাঁর মূর্তি বানানোর প্রসঙ্গ উঠেছিল। কিন্তু তিনি মানা করে বলেন, না, আমি চাই ওরা দেহটা সংরক্ষণ করুক।’ আলভারো ম্যারাডোনার সঙ্গে বেশ ঘনিষ্ঠভাবে মিশেছেন। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকেও এ তথ্য জানিয়ে বলেছেন, ম্যারাডোনা ‘আমাদের সঙ্গে চিরকাল থাকতে চেয়েছিলেন’।

মৃত্যুর পর তাঁর দেহ সংরক্ষণ করে রাখা হোক, চেয়েছিলেন ম্যারাডোনা।
ছবি: রয়টার্স

আর্জেন্টিনার আধুনিক ইতিহাসে শুধু দুজন কিংবদন্তির মৃত্যুর পর তাঁদের দেহ সংরক্ষণ করা হয়েছে। আর্জেন্টিনার তিনবারের প্রেসিডেন্ট হুয়ান পেরন এবং তাঁর স্ত্রী ও ‘আর্জেন্টাইনদের আধ্যাত্মিক নেতা’খ্যাত ইভা পেরন। ব্রাজিলের কিংবদন্তি ফুটবলার গারিঞ্চার সঙ্গে ইভা পেরনের মন দেওয়া-নেওয়া ছিল বলে গুজব আছে।

ম্যারাডোনা যখন নিজের এই ইচ্ছার কথা বলেছিলেন, সেখানে উপস্থিত ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন তাঁর আইনজীবী মাতিয়াস মোরলা। ম্যারাডোনাকে এই ইচ্ছার দলিল (নোটারি) প্রস্তুতের পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি। গত ১৩ অক্টোবর এই ইচ্ছার দলিল নাকি তৈরিও করেছিলেন ম্যারাডোনা, জানিয়েছে আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম। এ নিয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তাৎক্ষণিকভাবে মোরলা কোনো জবাব দেননি।

এর আগে ম্যারাডোনার চিকিৎসকদের দিয়ে অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন মোরলা। তাঁর অভিযোগ, ম্যারাডোনার মৃত্যুর আগে ১২ ঘণ্টায় নাকি তাঁর কাছে যাননি কোনো চিকিৎসক, অ্যাম্বুলেন্স আসতেও আধা ঘণ্টার মতো দেরি হয়েছে। সবকিছুর তদন্তের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন তিনি, ‘এটা অবিশ্বাস্য যে ১২ ঘণ্টা আমার বন্ধুকে কেউ দেখতে যায়নি, কিংবা কোনো স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তাঁর আশপাশে ছিল না। অ্যাম্বুলেন্স আসতেও আধা ঘণ্টার বেশি সময় লেগেছে, যেটা শাস্তি পাওয়ার মতো বোকামি।’