বেনজেমায় মুগ্ধ জিদান ভুলে গেলেন সতীর্থ অঁরিকে

কাল জোড়া গোল করেছেন বেনজেমা।ছবি: রয়টার্স

কোচ দিদিয়ের দেশমের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে বহুদিন ধরেই ফ্রান্স জাতীয় দল থেকে ব্রাত্য করিম বেনজেমা। হয়তো নিয়মিত খেললে জাতীয় দলের হয়েও অনেক রেকর্ড করতে পারতেন, কিন্তু সেটা আর হয়নি। কিন্তু তাতে নিজের প্রতিভা প্রদর্শনের পথ কি বন্ধ হয়ে যায়? হয় না। এখনো রিয়াল মাদ্রিদের আক্রমণভাগের অন্যতম প্রধান কান্ডারি এই পোড়খাওয়া ফরাসি স্ট্রাইকার। গত মৌসুমেই দলকে লিগ জেতাতে রেখেছেন বেশ ভালো ভূমিকা। এবারও দলকে টানছেন বলতে গেলে একাই।

গত রাতের ম্যাচের কথাটাই ধরুন। লিগের ম্যাচে অ্যাথলেটিক বিলবাওকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। করিম বেনজেমা করেছেন জোড়া গোল। দলের প্রতি বেনজেমার অবদান দেখে কোচ জিনেদিন জিদান হয়েছেন বিমুগ্ধ দর্শক। এতটাই বিমুগ্ধ হয়েছেন যে বেনজেমাকে ফ্রান্স ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম ফরোয়ার্ড বলতেও কুণ্ঠাবোধ করেননি।

জিদানের মতো একজন মানুষের কাছ থেকে এই মাপের প্রশংসা এলে একটু নড়েচড়ে বসতেই হয়, যেখানে থিয়েরি অঁরির মতো স্ট্রাইকার ফ্রান্সের ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা, আর্সেনাল ও বার্সেলোনার হয়ে ক্লাব ক্যারিয়ারটাও কাটিয়েছেন স্বপ্নের মতো। জিদানের সঙ্গে বিশ্বকাপও জিতেছেন। প্রিয় শিষ্য বেনজেমার সুনাম গাইতে গিয়ে সেই সতীর্থ অঁরিকেই ভুলে গেলেন জিদান

১০ জনের দল নিয়েও সমতা ফিরিয়েছিল বিলবাও।
ছবি: রয়টার্স

বেনজেমা ফ্রান্সের ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম ফরোয়ার্ড কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে জিদান ছিলেন নিঃসন্দেহ, ‘আমার মতে, অবশ্যই। সে প্রতিমুহূর্তে তার মান সম্পর্কে আমাদের ধারণা দেয়, আর ও মাদ্রিদেও অনেক বছর ধরে আছে। সে ৫০০ ম্যাচের অধিক খেলেছে। আর সে নিয়মিত গোল করেছে। দিন শেষে ও কী, সেটা ওর রেকর্ডই বলে দেয়। ও-ই সবার সেরা, আর এই নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।’

স্ট্রাইকারদের মতো সবার ওপরে খেলেন, জার্সি নম্বরটাও ৯। তবে বেনজেমা যে আর দশটা স্ট্রাইকারের মতো শুধু স্বার্থপরের মতো গোল করতেই পছন্দ করেন, তা নয়। পছন্দ করেন গোল করাতেও, পছন্দ করেন আক্রমণ গড়ে দিতে। এ জন্যই জিদানের এত প্রিয়পাত্র তিনি, ‘ও এখন আগের চেয়ে অনেক ভালো খেলোয়াড়। ও ঠিক প্রথাগত নাম্বার নাইন নয়। সে শুধু গোলের চিন্তা করে না, যে কারণে আমি ওকে আরও পছন্দ করি।’

ম্যাচের ১৩ মিনিটেই সাবেক আতলেতিকো তারকা রাউল গার্সিয়া লাল কার্ড দেখে মাঠ ছেড়ে চলে যান। প্রথমার্ধের একদম শেষ দিকে গোল করে রিয়ালকে এগিয়ে দেন জার্মান মিডফিল্ডার টনি ক্রুস। কিন্তু ১০ জনের দল হওয়া সত্ত্বেও আন্দের কাপার গোলে সমতায় ফেরে বিলবাও। এরপরই শুরু হয় বেনজেমা-জাদু। ৭৪ মিনিটে রাইটব্যাক দানি কারভাহাল ও ম্যাচের একদম শেষ মুহূর্তে লুকা মদরিচের সহায়তায় গোল করে দলের জয় নিশ্চিত করেন বেনজেমা।