‘বোকার মতো’ খেলার মাশুল দিয়েছেন নেইমার–এমবাপ্পেরা

বোকার মতো খেলেছেন নেইমাররা!ছবি: রয়টার্স

চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের স্বপ্নে নেইমার ও কিলিয়ান এমবাপ্পেকে দলে ভিড়িয়েছে পিএসজি। গত কয়েক মৌসুমের মতো এবারও কি তাদের স্বপ্ন ভেঙে খানখান হবে? কোয়ার্টার ফাইনাল প্রথম লেগের ম্যাচ শেষে ইঙ্গিতটা তো সে রকমই। কাল রাতে ঘরের মাঠে প্রথম লেগে ম্যানচেস্টার সিটির কাছে ২-১ গোলে হেরেছে ফরাসি ক্লাবটি। আর্সেনালের সাবেক কোচ আর্সেন ওয়েঙ্গার পিএসজির হারে ক্লাবটির খেলোয়াড়দের দোষই দেখছেন। বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধে ভালো খেলতে পারেনি পিএসজি। ওয়েঙ্গারের মতে, নেইমার-এমবাপ্পেরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন।

প্রথমার্ধে তুলনামূলক ভালো খেলেছে পিএসজি। সিটির রক্ষণভাগে চাপ সৃষ্টি করেছিল তারা। বেশ কয়েকটি কর্নার পায় তারা এ সময়। এমনই এক কর্নার থেকে ১৫ মিনিটে হেডে গোল করেন পিএসজি ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার মার্কুইনহোস। কিন্তু বিরতির পর সিটি ধীরে ধীরে চাপ বাড়িয়েছে পিএসজি রক্ষণে, এই ধকল নিতে পারেনি পিএসজি। ১৪ মিনিটের ব্যবধানে দুটি গোল ও একটি লাল কার্ড হজম করে ক্লাবটি। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের কিংবদন্তি কোচ ওয়েঙ্গার মনে করেন, দ্বিতীয়ার্ধে খোলসবন্দী ফুটবল খেলে ভুল করেছে মরিসিও পচেত্তিনোর দল। এ সময় তারা ‘আবেগাক্রান্ত হয়ে বোকার মতো আগ্রাসী হয়ে ওঠার’ মাশুল দিয়েছে বলে মনে করেন ওয়েঙ্গার।

চ্যাম্পিয়নস লিগ আরও একটি স্বপ্নভঙ্গের পথে পিএসজি?
ছবি: রয়টার্স

৬৪ মিনিটে কেভিন ডি ব্রুইনা ক্রস বাড়িয়েছিলেন পিএসজির বক্সে। বাতাসে ভাসতে থাকা বল দূরের পোস্ট দিয়ে আশ্রয় নেয় জালে। পিএসজি গোলরক্ষক কেইলর নাভাস ভেবেছিলেন, ডিফেন্ডারদের কেউ বলটি ‘ক্লিয়ার’ করবেন। কিন্তু সিটির খেলোয়াড়দের কড়া পাহারায় রাখতে গিয়ে সেই কাজ সারা হয়নি পিএসজি ডিফেন্ডারদের। এরপর ৭১ মিনিটে দ্বিতীয় গোল হজমে সরাসরি দোষ দেওয়া যায় পিএসজির লিয়ান্দ্রে পারেদেস ও প্রেসনেল কিমপেম্বের ওপর। ফ্রি-কিক পেয়েছিল সিটি। ‘মানবদেয়াল’-এ দাঁড়িয়েছিলেন পারেদেস ও কিমপেম্বে। সিটি ফরোয়ার্ড রিয়াদ মাহরেজের শট পারেদেস এবং কিমপেম্বের মাঝ দিয়ে আশ্রয় নেয় জালে।

বিইন স্পোর্টসকে ওয়েঙ্গার বলেন, ‘অবশ্যই বলা উচিত, দ্বিতীয়ার্ধে পিএসজি নিজেদের বাঁচাতে খেলেছে, এগিয়ে যাওয়ার মতো কিছু করেনি। এর কারণ কি তারা শারীরিকভাবে সমর্থ ছিল না? ১-১ ব্যবধানের পর তারা পুরোপুরি ভেঙে পড়ে। আবেগাক্রান্ত হয়ে বোকার মতো আগ্রাসী হওয়ার চেষ্টা করেছে।’ মাহরেজের ফ্রি কিক থেকে করা গোল নিয়েও কথা বলেছেন ‘প্রফেসর’খ্যাত ওয়েঙ্গার, ‘ডিফেন্ডাররা শরীর বাঁচিয়েছে। (বলটা) পারেদেস ও কিমপেম্বের মাঝে ছিল। এমন খেলোয়াড়কে দাঁড় করানোর কী দরকার যে মানবদেয়াল যদি ফাঁকাই করে দেবে। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, এই পর্যায়ে দ্বিতীয় গোলটি গ্রহণযোগ্য নয়। (মানবদেয়ালে) খেলোয়াড়দের ঘুরে যাওয়া এই প্রথম নয়, সিটি এর পূর্ণ সুবিধা তুলে নিয়েছে।’

এক গোলে এগিয়ে থেকেও হেরে গেল পিএসজি।
ছবি: রয়টার্স

ওয়েঙ্গার মনে করেন, কাল রাতের ম্যাচে ঘরোয়া লিগে বাজে সময় কাটানোর প্রভাব পড়েছে পিএসজির ওপর। ৩৪ ম্যাচে ৭২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দুইয়ে পিএসজি। শীর্ষস্থানীয় লিঁলের সঙ্গে ১ পয়েন্ট ব্যবধানে পিছিয়ে রয়েছে পচেত্তিনোর দল। লিগ আঁ-তে ৮ ম্যাচ হারের প্রভাবটা প্রথম লেগে পড়েছে বলে মনে করেন ওয়েঙ্গার, ‘এটা লিগে ৮ ম্যাচ হারের ফল। ১-১ গোলে থাকতে তারা বুঝেছে, এই মৌসুমে অনেক ম্যাচ হেরেছে, এটাই কাজ করেছে সবার মনে। আত্মবিশ্বাস পড়ে গেছে।’ বুধবার সিটির মাঠে ফিরতি লেগ। চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিতে ওঠার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে সিটির মাঠে ন্যূনতম ২-০ ব্যবধানে জিততে হবে পিএসজিকে। ফরাসি ক্লাবটির মাঠে দুটি ‘অ্যাওয়ে গোল’ করার সুবিধা নিয়ে এমনিতেই এগিয়ে আছে সিটি।