ব্রাজিলের পরের দুই ম্যাচের দলে নেইমারের সঙ্গে কারা থাকছেন?

পেরুর বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করা নেইমার বাছাইপর্বের শুরু থেকেই ফর্মে আছেন।ছবি: রয়টার্স

দুই ম্যাচ, দুই জয়। পুরো ৬ পয়েন্ট এসেছে। গোল করেছে ৯টি। খেয়েছে দুটি। দলের প্রাণভোমরা নেইমার পেয়েছেন হ্যাটট্রিক। এর চেয়ে ভালোভাবে হয়তো বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব শুরু করতে পারত না ব্রাজিল!

কিন্তু সেটি এখন পেছনের গল্প। সামনে তাকালে আরও বড় দুই পরীক্ষা ব্রাজিলের সামনে। আগামী মাসে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের পরের দুই ম্যাচ, যেখানে প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়ে তারুণ্যে উজ্জ্বল ভেনেজুয়েলা ও সুয়ারেজ-ভালভার্দের উরুগুয়ে। সেই দুই ম্যাচের জন্য আজ ২৩ সদস্যের দল ঘোষণা করেছেন ব্রাজিল কোচ তিতে।

নেইমার তো থাকছেনই, চোট কাটিয়ে দলে ফিরেছেন ম্যানচেস্টার সিটি স্ট্রাইকার গাব্রিয়েল জেসুস। গোলপোস্টে লিভারপুলের মতো ব্রাজিল জাতীয় দলেরও প্রথম পছন্দ আলিসন এখনো চোটমুক্ত নন, তবে ম্যাচের আগে সেরে উঠবেন ভেবে তাঁকেও ডেকেছেন তিতে। আর ডেকেছেন রিয়াল মাদ্রিদের উইঙ্গার ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে।

নিজেদের মাটিতে প্রথম ম্যাচে বলিভিয়াকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের দক্ষিণ আমেরিকান অঞ্চলের বাছাইপর্ব শুরু করে ব্রাজিল। পরের ম্যাচে পেরুর মাঠে গিয়ে ব্রাজিল দেখল নেইমার-ঝলক। দলকে ৪-২ গোলে জেতানোর পথে সেদিন হ্যাটট্রিক করেছিলেন পিএসজি ফরোয়ার্ড। কিন্তু পরের দুই ম্যাচে চ্যালেঞ্জটা ব্রাজিলের জন্য কঠিনই।

১৪ নভেম্বর নিজেদের মাঠে ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে খেলবে তিতের দল, তার তিন দিন পর যাবে উরুগুয়ের মাঠে। ব্রাজিলের দুই প্রতিপক্ষের ফর্ম অবশ্য ভালো নয়। ভেনেজুয়েলা বাছাইপর্বের প্রথম দুই ম্যাচেই হেরেছে। প্রথম ম্যাচে হামেস রদ্রিগেজের কলম্বিয়ার মাটিতে গিয়ে হেরেছে ৩-০ গোলে, এরপর নিজেদের মাঠে প্যারাগুয়ের কাছেও হেরেছে ১-০ গোলে। আর উরুগুয়ে দুই ম্যাচের প্রথমটিতে চিলির বিপক্ষে ২-১ গোলে জিতেছে শেষ মুহূর্তের বিতর্কিত গোলে, পরের ম্যাচে ইকুয়েডরের প্রায় ৩ হাজার মিটার উচ্চতায় গিয়ে হেরেছে ৪-২ গোলে।

কিন্তু উরুগুয়ে তো সব সময়ই দক্ষিণ আমেরিকার বড় দলগুলোর একটি। এই মৌসুমে বার্সেলোনা ছেড়ে আতলেতিকো মাদ্রিদে যোগ দেওয়া লুইস সুয়ারেজ, রিয়াল মাদ্রিদের ফেদে ভালভার্দে, ইন্টার মিলানের দিয়েগো গদিন, জুভেন্টাসের রদ্রিগো বেনতাঙ্কুরের মতো খেলোয়াড়দের নিয়ে সাজানো উরুগুয়ে দলকে হেলায় দেখার সুযোগ নেই।

রিয়ালের ভিনিসিয়ুস প্রথমবারের মতো ব্রাজিলের হয়ে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে ডাক পেলেন।
ছবি: রয়টার্স

আর ভেনেজুয়েলা? ফর্ম দলটার সঙ্গে নেই ঠিকই। তবে রোনাল্ড এরনান্দেস, ইয়ানজেল এরেরা, উইলকার ফারিনিয়েজদের মতো তরুণ প্রতিভার সঙ্গে টমাস রিঙ্কন, দারউইন মাচিসদের মতো অভিজ্ঞদের নিয়ে সাজানো দলটা নিজেদের দিনে গতিময় পাল্টা আক্রমণনির্ভর ফুটবলে ধরাশায়ী করতে পারে যে কোনো দলকেই! গত বছরের মার্চে স্পেনে অনুষ্ঠিত প্রীতি ম্যাচে যেটির প্রমাণ পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। ২০১৮ বিশ্বকাপের পর লিওনেল মেসির ফেরার সে ম্যাচে ভেনেজুয়েলার কাছে ৩-১ গোলে হারে আর্জেন্টিনা।

ভেনেজুয়েলানদের দুর্ভাগ্য, তাদের মূল স্ট্রাইকার চীনের ক্লাব দালিয়ান প্রফেশনালে খেলা সলোমন রনদন বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের আগের দুই ম্যাচে খেলতে পারেননি। করোনাভাইরাসের সময়ে চীন থেকে বাইরে বের হওয়ায় নিয়মনীতিতে কড়াকড়ির কারণে ভেনেজুয়েলায় আসতে পারেননি রনদন। এবার পারবেন কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়।

তা এই দুই ম্যাচের জন্য আগের দুই ম্যাচের দলটাই মূলত রেখে দিয়েছেন ব্রাজিল কোচ তিতে। আগের দুই ম্যাচে ডাক না পেলেও এই দুই ম্যাচের দলে জুভেন্টাস মিডফিল্ডার আর্থুর মেলোকেও ডেকেছেন তিতে।

ব্রাজিল স্কোয়াড:
গোলকিপার: আলিসন (লিভারপুল), এদেরসন (ম্যান সিটি) ও ওয়েভারটন (পালমেইরাস)।
ডিফেন্ডার: থিয়াগো সিলভা (চেলসি), মারকিনিওস (পিএসজি), এদের মিলিতাও (রিয়াল মাদ্রিদ), রদ্রিগো কাইও (ফ্লামেঙ্গো), দানিলো (জুভেন্টাস), গাব্রিয়েল মেনিনো (পালমেইরাস), রেনান লোদি (আতলেতিকো মাদ্রিদ) ও আলেক্স তেলেস (ম্যান ইউনাইটেড)।
মিডফিল্ডার: কাসেমিরো (রিয়াল মাদ্রিদ), ফাবিনিও (লিভারপুল), আর্থুর (জুভেন্টাস) ও দগলাস লুইজ (অ্যাস্টন ভিলা)।
ফরোয়ার্ড: নেইমার (পিএসজি), গাব্রিয়েল জেসুস (ম্যান সিটি), ফিলিপ কুতিনিও (বার্সেলোনা), ভিনিসিয়ুস জুনিয়র (রিয়াল মাদ্রিদ), রবার্তো ফিরমিনো (লিভারপুল), রিচার্লিসন (এভারটন), এভারটন রিবেইরো (ফ্লামেঙ্গো) ও এভারটন (বেনফিকা)।