বড় দলের সামনে কলজে শুকিয়ে যায় বার্সেলোনার?

সেভিয়ার বিপক্ষে পরশু হারের পর হতাশ মেসি।ছবি: রয়টার্স

লিগে আতলেতিকো মাদ্রিদের চেয়ে অনেক পিছিয়ে আছে বার্সেলোনা। চ্যাম্পিয়নস লিগ জিততে পারবে বার্সা, সে আশা স্বয়ং লিওনেল মেসিও করেন না। চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতার মতো স্কোয়াড গড়তে না পারাটাও যে তাঁর বার্সেলোনা ছাড়তে চাওয়ার একটি কারণ ছিল। এ মৌসুমে বার্সেলোনার ট্রফি জেতার সবচেয়ে ভালো সম্ভাবনা স্প্যানিশ কাপ বা কোপা দেল রেতে।

আতলেতিকো ও রিয়াল মাদ্রিদ আগেই বাদ পড়েছে। গত মৌসুমের ফাইনালে ওঠা রিয়াল সোসিয়েদাদও ছিটকে গেছে। বার্সেলোনার স্প্যানিশ কাপের শিরোপা জেতার স্বপ্ন তাই বাড়ছিল। সে স্বপ্নটা কাল একটা ধাক্কা খেয়েছে। সেমিফাইনালের প্রথম লেগে সেভিয়ার মাঠে ২-০ গোলে হেরে গেছে বার্সেলোনা।

এখনো ঘরের মাঠে খেলা বাকি বার্সার। ন্যু ক্যাম্পে বরাবরই প্রতাপশালী বার্সাকে তাই গোনায় না ধরে উপায় নেই। কিন্তু এ মৌসুমে বার্সেলোনা যেমন খেলছে তাতে সংশয় থাকতে পারে বার্সা সমর্থকদেরই। রোনাল্ড কোমানের বার্সেলোনা যে বড় দলের সঙ্গে জেতে না!

শুনলে বাড়াবাড়ি মনে হতে পারে, কিন্তু এ মৌসুমে এটাই সত্য। লিগে রিয়াল মাদ্রিদের (২২ ম্যাচে ৪৬ পয়েন্ট) চেয়ে এক ম্যাচ কম খেলে ৩ পয়েন্ট পিছিয়ে পয়েন্ট তালিকার ৩ নম্বরে থাকলেও তথাকথিত বড় ম্যাচগুলো জিততে পারছে না বার্সেলোনা।

সেভিয়ার বিপক্ষে রক্ষণের দুর্বলতাই ভুগিয়েছে বার্সাকে।
ছবি: রয়টার্স

সেভিয়ার বিপক্ষে পরশু হেরেছে প্রতিপক্ষের মাঠে। আর লিগে এই সেভিয়ার বিপক্ষে নিজেদের মাঠেও বহুকষ্টে ড্র করেছিল বার্সেলোনা। দুই ম্যাচেই মাঠের দুই প্রান্ত ভুগিয়েছে বার্সেলোনাকে। আক্রমণে মেসিরা সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। আর রক্ষণে ডিফেন্ডাররা হাস্যকর সব ভুল করেছেন।

লিগে আতলেতিকোর বিপক্ষেও একই যন্ত্রণা পোহাতে হয়েছে বার্সেলোনাকে। ১-০ গোলে হারা সে ম্যাচে একমাত্র গোলটি ছিল ইয়ানিক কারাসকোর। বেলজিয়ান উইঙ্গারকে গোলটা উপহার দিয়েছেন পিকে।

ঘরের মাঠে আরও দুই বড় ম্যাচে হেরেছে বার্সেলোনা। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে প্রথমে সমানে সমানে লড়লেও বার্সা দ্বিতীয়ার্ধে রক্ষণের ভুলে পিছিয়ে পড়ে। পরে ৩-১ ব্যবধানে হেরেই বসেছে। স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালেও অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের বিপক্ষে সেই রক্ষণের ভুল আর ভোঁতা আক্রমণভাগ একটি শিরোপা পেতে দেয়নি বার্সাকে।

চ্যাম্পিয়নস লিগে ঘরের মাঠে জুভেন্টাসের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছিল বার্সা। ন্যু ক্যাম্পে এসে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর জুভেন্টাস ৩-০ গোলে হারিয়েছে বার্সেলোনাকে। যে হারের কারণে চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্বে দ্বিতীয় হয়ে শেষ ষোলোতে উঠেছে বার্সা, পড়তে হয়েছে নেইমার-এমবাপ্পের পিএসজির সামনে।

ম্যাচ শেষে সেভিয়ার আর্জেন্টাইন খেলোয়াড়দের সঙ্গে মেসির আড্ডা।
ছবি: রয়টার্স

অবশ্য জুভেন্টাসই বার্সেলোনাকে আশা দিচ্ছে। এ মৌসুমে বড় ম্যাচে বার্সার একমাত্র জয়ও যে ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষেই। চ্যাম্পিয়নস লিগে প্রথম লেগে তুরিনে গিয়ে জুভেন্টাসকে ২-০ গোলে হারিয়েছিল বার্সেলোনা। সেদিন অবশ্য রোনালদো মাঠে ছিলেন না, জুভেন্টাসেরও তিনটি গোল বাতিল হয়েছিল।

আগামী সপ্তাহেই আরেকটি বড় ম্যাচ বার্সেলোনার। চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোতে পিএসজির বিপক্ষে প্রথম লেগ বার্সার মাঠে ক্যাম্প ন্যুতে। একটাই সান্ত্বনা দলটির, সে ম্যাচে চোটের কারণে নেইমার খেলছেন না। ফলে জুভেন্টাসের বিপক্ষে তুরিনের ম্যাচের ফলটা ফিরিয়ে আনার আশা করতে পারছে দলটি।