‘বড় ভাই’ জিদান চলে যাবেন? বিশ্বাস হয় না বেনজেমার

জিদানকে দলে চান বেনজেমাছবি: রয়টার্স

জিনেদিন জিদান কি ক্লাব ছাড়বেন? নাকি ছাড়বেন না? এই আলোচনায় এখন সরগরম মাদ্রিদ। দুই পক্ষের সমঝোতায় বিচ্ছেদ হতে পারে বলে বেশ কদিন ধরে জানাচ্ছে স্পেন ও ইউরোপের অনেক সংবাদমাধ্যম। অতি উৎসাহী কিছু সংবাদমাধ্যম আবার জিদানের জায়গায় সম্ভাব্য বিকল্পের নামও বলে দিচ্ছে। কিন্তু রিয়াল ব্যাপারটা নিয়ে এখনো চুপচাপ। তবে জিদানকে নিয়ে অস্বস্তির একটা গুমোট বাতাস যে বার্নাব্যুতে, সেটা বোঝাই যায়। এই মৌসুমে রিয়াল কিছুই জেতেনি, থেকেছে শিরোপা-শূন্য। দলের এই ব্যর্থতা জিদানের ভবিষ্যৎ নিয়ে আরও বড় প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে যেন।

সপ্তাহ দুয়েক আগে মার্কা-এএস আর ইএসপিএনের মতো সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিল, জিদান চলে যাচ্ছেন, ড্রেসিংরুমে খেলোয়াড়দের বিদায়ও বলে দিয়েছেন। তখন জিদান অবশ্য বলেছিলেন, লিগ চলাকালে খেলোয়াড়দের তাঁর বিদায় বলার প্রশ্নই ওঠে না!

জিদান থাকবেন না রিয়ালে?
ছবি: রয়টার্স

তবে ভবিষ্যতে যা-ই হোক না কেন, এখন কোচকে রিয়ালের বাইরে দেখতে রাজি নন দলটার ফরাসি স্ট্রাইকার ও এই মৌসুমে রিয়ালের সর্বোচ্চ গোলদাতা করিম বেনজেমা। ফরাসি সংবাদমাধ্যম লেকিপকে গতকাল এক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন অর্ধযুগ পর ফ্রান্স দলে ডাক পাওয়া এই স্ট্রাইকার। সেখানেই উঠে এসেছে জিদানের সম্ভাব্য বিদায়ের প্রসঙ্গটা। জিদান চলে যাবেন, অন্তত এখন এই কথাটা মানতেই রাজি নন অভিজ্ঞ এই স্ট্রাইকার, ‘তিনি এখনো তো রিয়াল মাদ্রিদের কোচ আছেন, তাই নয় কি? আমার মনে হয় না উনি ক্লাব ছাড়বেন। উনি ক্লাব ছেড়ে কোথাও যাবেন না। আপনারা দেখে নিয়েন।’

কোচ নিজেই যদি ক্লাব ছাড়তে চান, সে ক্ষেত্রে বেনজেমাদের যে বিশেষ কিছু করার নেই, সেটা তিনি বেশ ভালোই জানেন, ‘তবে হ্যাঁ, উনি যদি ক্লাব ছাড়তে চান, ছাড়বেন। কিন্তু এখন আমি জিদান ছাড়া রিয়াল মাদ্রিদ কল্পনাও করতে পারছি না।’

আক্রমণভাগে জিদানের সবচেয়ে বড় ভরসা বেনজেমা
ছবি : রয়টার্স

জিদানের বেনজেমা-প্রীতি আজকের নয়। বছরের পর বছর ধরে বেনজেমাকে মূল একাদশে খেলিয়ে যাচ্ছেন। এমনকি বেনজেমার বিকল্প হিসেবে কখনো নতুন কাউকে আনার চেষ্টাও করেননি এই ফরাসি কোচ। এমনকি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, গ্যারেথ বেলের মতো খেলোয়াড় ক্লাব ছেড়ে চলে গেলেও জিদান আস্থা রেখেছেন বেনজেমার ওপরেই। বলা বাহুল্য, বেনজেমা নিজেও সেই আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন ভালোভাবেই।

এবার খালিহাতেই ফিরেছে রিয়াল
ছবি: এএফপি

সব মিলিয়ে এই দুজনের পারস্পরিক সম্পর্কের কথাও উঠে এসেছে লেকিপকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে, ‘জিদান আমার সঙ্গে সব সময় সৎ। উনি আমার আপনজন, অনেক খেয়াল রাখেন। যখন ভালো খেলি, সেটা আমাকে বলেন। খারাপ খেললেও সেটা আমাদের জানিয়ে দেন। অনুশীলনের সময় কিংবা ম্যাচের মধ্যে, উনি কখনো কোনো কিছু লুকান না। সব সময় নিজের মতামত জানিয়ে দেন আমাদের। উনি আমার সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে পছন্দ করেন, আর এটাই আমার পছন্দ। তাঁর এই গুণ আমাকে খেলার সময় আত্মবিশ্বাস দেয়।’

‘উনি আমার কোচ হলেও আসলে বড় ভাইয়ের মতো। তিনি আমাকে সব সময় সমর্থন দিয়েছেন। আমি ভালো খেলি বা না খেলি। যে কারণে আমি প্রতিবছর একটু একটু করে উন্নতি করতে পারি’—বেনজেমার অকপট স্বীকারোক্তি!