ভারতের অষ্টম শিরোপা জয়

ভারতকে আটকাতে পারেনি নেপালছবি: টুইটার

শিরোপার লড়াইয়ে মাঠে নেমেছে দুটি দল। কিন্তু দুই দলের কোচ গ্যালারিতে। বিশ্ব ফুটবলে এমন দৃশ্য কি আগে কখনো দেখা গিয়েছে?

মালে জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে এমন কিছুই দেখা গেল আজ। আগের ম্যাচে লাল কার্ড দেখায় আজ ডাগআউটে দাঁড়াতে পারেননি ভারতের ক্রোয়েশিয়ান কোচ ইগর স্টিমাচ। টুর্নামেন্টে দুটি হলুদ কার্ড দেখায় ডাগআউটে থাকতে পারেননি নেপালের কুয়েতি কোচ আবদুল্লাহ আলমুত্তারিও। গ্যালারি থেকেই দলকে নির্দেশনা দিলেন দুজন। তাতে শেষ হাসি হেসেছেন ১৯৯৮ বিশ্বকাপে তৃতীয় হওয়া ক্রোয়েশিয়া দলের সদস্য স্টিমাচ। নেপালকে ৩-০ গোলে হারিয়ে অষ্টমবারের মতো সাফ জিতল ভারত।

ছেত্রীই করেছেন প্রথম গোল
ছবি: টুইটার

১৩টি সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের মধ্যে আটটি শিরোপাই ভারতের। এই পরিসংখ্যান যে দাপটের কথা বলে, ম্যাচেও সেই দাপট দেখিয়েছে ভারত। ভারতের জয় মানেই যেন অবধারিত অধিনায়ক সুনীল ছেত্রীর গোল। আজও দলকে এগিয়ে দিয়েছেন ৩৭ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার। টুর্নামেন্টে ৫ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা সুনীলই। একটি করে গোল করেছেন সুরেশ সিং ও সাহাল আব্দুল সামাদ। সব কটি গোলই হয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে।

কোনোরকম প্রস্তুতি ছাড়া খেলতে এসে বাংলাদেশের সঙ্গে ড্র করে টুর্নামেন্টের শুরুটা হয়েছিল হতাশাজনক। কিন্তু ধারাবাহিকভাবে কন্ডিশনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিজেদের খেলার উন্নতি করেছে, শিরোপা নিয়ে উল্লাস করেছে ভারত। ফাইনালের জন্যই হয়তো নিজেদের সেরা খেলাটা জমিয়ে রেখেছিলেন সুনীল, মানবীর সিংরা। বৃষ্টিস্নাত মাঠেও পাসিং ফুটবলের ফুল ফুটেছে তাঁদের পায়ে। প্রথমার্ধে ৭২ শতাংশ বলের দখল রেখে ৩০৬টি পাস খেলেছেন তাঁরা। ভারতের শিরোপার পথে বাধা হয়ে না দাঁড়াতে পারলেও কিছুটা দুর্ভাগা নেপাল দলটি। প্রথমার্ধের শুরুতে স্ট্রাইকার নবযুগ শ্রেষ্ঠার প্লেসিং সাইড পোস্টে লেগে ফিরে আসার পর দ্বিতীয়ার্ধে মিডফিল্ডার রোহিত চাদের হেড ক্রসবারে লাগে।

নেপাল পাত্তাই পায়নি আজ
ছবি: টুইটার

দ্বিতীয়ার্ধের ৪৯ মিনিটে গোল পেয়ে যান সুনীল। প্রিতম কোটালের ক্রসে বক্সের মধ্যে মাথা ছুঁয়ে বল জালে জড়ান ভারতীয় অধিনায়ক। তাঁকে মার্ক করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন নেপালের ডিফেন্ডাররা। প্রথমবারের মতো সাফের ফাইনালে খেলতে নামা নেপাল কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই দ্বিতীয় গোল হজম করে। পরের মিনিটেই ২-০ করেন মিডফিল্ডার সুরেশ। ইয়াসিরের কাট ব্যাক থেকে সুরেশের শট প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে দিক বদল হয়ে পোস্টে।
দুই গোল খেয়ে পরিশোধ করার জন্য মরিয়া হয়ে খেলার কথা নেপালের। উল্টো ভারতীয় ফুটবলারদের দাপট দেখে দলের সেরা মিডফিল্ডার রোহিতকেও রক্ষণভাগে নামিয়ে তিন সেন্টারব্যাক করে দেন নেপাল কোচ। তবু রক্ষা হয়নি। বদলি নেমে যোগ করা সময়ে ৩-০ করেছেন বদলি সাহাল। প্রতি–আক্রমণ থেকে বল পেয়ে বক্সে ঢুকে একক প্রচেষ্টায় গোলটি করেন তিনি।
সাফের শিরোপা মানেই ভারত। মালদ্বীপের কাছ থেকে সেই শিরোপা পুনরুদ্ধার করল দলটি।