ভয়ংকর ট্যাকল করে এখন ক্ষমা চাইছেন ব্রাজিলের রিচার্লিসন

থিয়াগো আলকানতারাকে ভয়ংকর ট্যাকল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখেছেন এভারটনের ব্রাজিলিয়ান তারকা রিচার্লিসন (সাত নম্বর জার্সি)।ছবি: রয়টার্স

মার্সিসাইড ডার্বিতে সব সময়ই উত্তাপ আর ঝাঁজ থাকে। দুই নগর প্রতিদ্বন্দ্বী লিভারপুল আর এভারটনের লড়াই বলে কথা। গুডিসন পার্কে গতকালের ম্যাচটিও এর ব্যতিক্রম ছিল না। প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচটিতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে দুই দল মাঠ ছেড়ে ২-২ গোলের ড্র নিয়ে। এর আগে যথারীতি লিভারপুল-এভারটন ম্যাচ ছড়িয়েছে উত্তেজনা। শেষ মুহূর্তে লিভারপুলের থিয়াগো আলকানতারাকে ভয়ংকর এক ট্যাকল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখে ঝাঁজটা আরও যেন বাড়িয়ে দিয়েছেন এভারটনের ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রিচার্লিসন।

এই ট্যাকল আর লাল কার্ডের ঝাঁজটা রয়ে গেছে ম্যাচ শেষেও। ‘খুব অন্যায় কিছু করেননি বা ট্যাকলটা সরাসরি লাল কার্ড দেখার মতো কিছু ছিল না’—ম্যাচ শেষে এটা প্রমাণ করতে মরিয়া হয়ে ওঠেন রিচার্লিসন। আর এর জন্য তিনি বেছে নেন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম টুইটার। আলকানতারাকে ট্যাকলটা রিচার্লিসন করেছেন সামনে থেকে। নিজের বুট দিয়ে সরাসরি মেরেছেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডারের পায়ে।

বাজে ট্যাকল করে প্রতিপক্ষ লিভারপুলের মিডফিল্ডার আলকানতারার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন রিচার্লিসন।
ছবি: রয়টার্স

অথচ ম্যাচ শেষে রিচার্লিসন ওই ট্যাকলের একটি ছবির স্ক্রিন শট টুইটারে দিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন—এই ট্যাকল এ আর এমন কী! রিচার্লিসনের ছবিটি দেখলে অবশ্য বোঝারও উপায় নেই সত্যি এটি ভয়ংকর এক ট্যাকল ছিল। কিন্তু ছবিটি দেওয়ার পরই লিভারপুল সমর্থকদের তোপের মুখে পড়েন রিচার্লিসন। এক টুইটার ব্যবহারকারী রিচার্লিসনের ওই টুইটে মন্তব্য করেছেন, ‘রিচার্লিসন, তুমি এটা বারবারই করছ।’ এর জবাব দিতে গিয়ে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড লিখেছেন, ‘বারবার? এর আগে আমি কবে এমন ট্যাকল করেছি?’

টুইটারে রিচার্লিসনের এই উত্তর নিয়েও চটেছেন লিভারপুলের সমর্থকেরা। অনেকে তো এটা নিয়ে হাসিঠাট্টাও করেছেন। অবস্থা বেগতিক বুঝতে পেরে টুইটটি সরিয়ে নিয়েছেন তিনি। পরে আরেকটি টুইট করেছেন। যেখানে তিনি পুরো ঘটনার জন্য আলকানতারার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। নিজের ওয়েবসাইটে একটি বিবৃতিও দিয়েছেন রিচার্লিসন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘আমার অতীত যারা জানে, তারা অবশ্যই বুঝতে পারবেন আমি এ রকম সহিংস খেলোয়াড় নই। এটা (আলকানতারাকে করা ট্যাকল) একটা দুর্ঘটনা ছিল। আমি আসলে থিয়াগোকে ব্যথা দিতে চাইনি।’

লাল কার্ড দেখে দলকে বিপদে ফেলে সতীর্থ ও সমর্থকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন এভারটনের ফরোয়ার্ড রিচার্লিসন।
ছবি: রয়টার্স

কীভাবে এটা ঘটেছে তারও একটি ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন রিচার্লিসন, ‘আমি যখন বুঝতে পারলাম দুজনে ধাক্কা খেতে যাচ্ছি, তখন পা তুলে দিই। তখন আমার হাঁটুর সঙ্গে তার পায়ের ধাক্কা লাগে। দুজনের গতি এমন ছিল যে ওই ধাক্কাটা এড়ানো সম্ভব ছিল না।’ ওয়েবসাইটে দেওয়া ওই বিবৃতিতেই আলকানতারার কাছে ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন এভারটনের ব্রাজিলিয়ান তারকা, ‘এর মধ্যেই আমি তার কাছে ক্ষমা চেয়ে বার্তা পাঠিয়েছি। ক্ষমা আমি এখানে সবার সামনেও চাইছি। আশা করছি খুব বেশি লাগেনি তার এবং সবকিছু ঠিক আছে।’

লাল কার্ড দেখে দলেরও ক্ষতি করেছেন রিচার্লিসন। এর জন্য গুডিসন পার্কের সবার কাছেও ক্ষমা চেয়েছেন তিনি, ‘আমি আমার সতীর্থ, ক্লাব আর সমর্থকদের কাছেও ক্ষমা চাইছি। আমি লাল কার্ড দেখায় ম্যাচের শেষের দিকে একজন খেলোয়াড় কমে গেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত যেটা ঘটেছে, সেটা তো আমি বদলাতে পারব না। এখন আমি অনুশীলনে মনোযোগ দিতে পারি। আর পারি সামনে এগিয়ে যেতে।’