মরিনিওর খোঁচা খেয়ে সাদা পতাকা ওড়ালেন সুলশার

মরিনিওর সঙ্গে ঝামেলা বাড়াতে রাজি নন সুলশার।ছবি: রয়টার্স

ন্যাড়া বেলতলায় কয়বার যায়? বুদ্ধিমান হলে একবারই তাঁর জন্য যথেষ্ট। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কোচ ওলে গুনার সুলশার প্রমাণ করলেন, তিনি বুদ্ধিমানদের দলেই পড়েন। জোসে মরিনিওর সঙ্গে খোঁচাখুঁচির যুদ্ধে নেমে যে আখেরে কোনো লাভ নেই, সেটা বুঝে গিয়েছেন খুব দ্রুত। দেরি না করে শান্তির প্রস্তাব পাঠিয়েছেন টটেনহাম হটস্পার কোচের উদ্দেশ্যে।

আগামী রবিবার ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে মুখোমুখি হবে দুই দল। এর আগে পরিস্থিতি ঘোলাটে হওয়ার বেশ ভালো সুযোগ ছিল। ব্রাইটনের বিপক্ষে ভাগ্যপ্রসূত জয়ের পর মজা করে মরিনিওকে টেনে এনেছিলেন সুলশার। মরিনিও খেপে পাল্টা জবাব দিয়েছিলেন এর। অযথা তর্ক না বাড়ানোর পথে হেঁটে সুলশার বলেছেন, একটু হালকা রসিকতার চেষ্টা করেছিলেন, তাঁর খোঁচাকে গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নেই।

গত সপ্তাহে ইউরোপার বাছাইপর্বের ম্যাচ খেলতে গিয়ে মেসিডোনিয়ান ক্লাবের গোলবার পাঁচ সেন্টিমিটার কম পেয়েছিলেন মরিনিও। সেটা কর্তৃপক্ষকে বলে সরিয়ে নিয়েছিলেন। এ ম্যাচে কদিন পর ব্রাইটনের বিপক্ষে পাঁচবার গোল পোস্ট ও বার বাঁচিয়ে দিয়েছিল ইউনাইটেডকে। জয়ের আনন্দে তাই মরিনিওকে টেনে এনেছিলেন সুলশার, আপনাকে খুশি হতে হবে এখানে গোলপোস্ট মাপার জন্য জোসে নেই!

একদিকে পেনাল্টি থেকে জয় পেয়েছে ইউনাইটেড। ওদিকে শেষ মুহূর্তের পেনাল্টি পয়েন্ট কেড়ে নিয়েছে টটেনহামের। মরিনিও তাই ক্ষেপে গিয়েছিলেন, ‘না, কারণ আমি জানি এখানে গোল পোস্টগুলো ঠিকই আছে। আমার ধারণা ওলে গতকাল এত খুশি ছিল আর দলের জয়ে এতটাই অবাক হয়েছিল যে সে রসিকতা করার চেষ্টা করেছে। আমি বুঝি যে ওর (সুলশার) জন্য গোল পোস্টের আকারটা গুরুত্বপূর্ণ না। ওর জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলো ১৮ গজের বক্স (পেনাল্টি বক্স)। সে কখনো ১৭ গজের বক্সে খেলা মানতে পারবে না। আমার ধারণা সে ২২ গজের বক্সে খেলতে পছন্দ করবে। ওর জন্য এটাই বেশি ভালো হবে।’

আরও পড়ুন
সুলশারের খোঁচা ভালোভাবে নেননি মরিনিও।
ছবি: রয়টার্স

একে তো ক্লাবের সাবেক কোচ হিসেবে ইউনাইটেডের বিপক্ষে খেলতে নামবেন। আর আগের সপ্তাহেই এমন খোঁচাখুঁচি। ফলে রোববার ইউনাইটেডের মাঠের ম্যাচ ঘিরে বাড়তি আগ্রহ থাকছেই। তবে সলতেতে আগুন লাগানোর কোনো চেষ্টা দেখা গেল না বর্তমান ইউনাইটেড কোচের মাঝে। বরং দর্শকবিহীন ফুটবলে হালকা রং ছড়াতে চাইছেন বলেই তাঁর দাবি, ‘বর্তমানে খুব অদ্ভুত এক সময় কাটাচ্ছি আমরা, এবং মাঝেমধ্যে একটু মজা পাওয়ার চেষ্টা করা উচিত। খুবই নির্দোষ কিছু মন্তব্য ছিল সেগুলো। আমার চোখে জোসে খুবই ক্যারিশমাটিক একজন কোচ এবং আপনারা মিডিয়াতে সবাই তাঁর সঙ্গে কথা বলে মজা পান। আমিও তাঁকে দেখে আনন্দ পাই এবং তিনি একজন বিজয়ী। আর আমি তেমন কেউ নই যে যে এসব “মনস্তত্ত্বের লড়াইয়ে” নামতে পছন্দ করে। তাঁর সাফল্য এবং ফুটবলকে যা দিয়েছেন, কোচ হিসেবে আমার সর্বোচ্চ সম্মান পাবেন তিনি।’

মনস্তত্ত্বের লড়াইয়ে নামতে না চাইলেও ম্যাচের আগে মরিনিওর যত প্রশংসা করেছেন সুলশার, সেটাকেই চাইলে ফুটবলের বিখ্যাত ‘মাইন্ড গেম’ বলে চালিয়ে নেওয়া যায়। মরিনিওর প্রশংসা করতে করতেই পেনাল্টি বক্স নিয়ে দেওয়া খোঁচার জবাব দিয়েছেন সুলশার, ‘আমাদের একটু মজা পাওয়ার চেষ্টাও করা উচিত। আর বহুদিন ধরেই জোসে ফুটবলে দারুণ সব মুহূর্ত উপহার দিয়েছেন। কখনো সংবাদ সম্মেলনে অথবা মাঠে। তবে একজন স্ট্রাইকার হিসেবে যতক্ষণ সেখানে জায়গা পাচ্ছি, ততক্ষণ পেনাল্টি বক্স কত বড় সেটা নিয়ে ভাবতাম না। শুধু গোলে শট নেওয়ার কথাই মাথায় থাকত।’