বাবার শেষ ইচ্ছা পূরণ করতে ছবি তুললেন মরিনিওর সঙ্গে

ইগর আলেক্সান্দ্রোভিচ এর সঙ্গে ছবি তুলছেন মরিনিও।ছবি: টটেনহাম টুইটার

ইউরোপা লিগের বাছাইপর্ব খেলতে মেসিডোনিয়ায় গিয়েছে টটেনহাম হটস্পার। আজ রাতে মেসেডোনিয়ার ক্লাব স্কেনদিয়ার বিপক্ষে বাছাইপর্বের তৃতীয় রাউন্ডের ম্যাচ খেলতে নামবে জোসে মরিনিওর দল। এমন এক ম্যাচ নিয়ে খুব বেশি আগ্রহ ছিল না ইউরোপের ফুটবলে। হাজার হলেও গুরুত্বের দিক থেকে এ ম্যাচ শীর্ষ লিগের ম্যাচগুলোর ধারেকাছেও নেই। কিন্তু এমন এক ম্যাচের আগেই সবার ভালোবাসা কুড়িয়ে নিলেন মরিনিও।

গতকাল ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন মরিনিও। ৫৭ বছর বয়সী নিজস্ব ঢংয়ে উত্তর দিচ্ছিলেন সবকিছু। হঠাৎ এক সাংবাদিক চমকে দিলেন তাঁকেও। দীর্ঘ কোচিং ক্যারিয়ারে বরাবর সাংবাদিকদের বাঁকা বাঁকা প্রশ্নের উত্তর দিয়েই অভ্যস্ত মরিনিও। কিন্তু পর্তুগিজ কোচকে চমকে দিয়ে একটা অনুরোধ করে বসেন মেসিডোনিয়ান এক সাংবাদিক।

ইগর আলেক্সান্দ্রোভিচ নামের সে সাংবাদিক মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে মরিনিওকে বলেন, ‘আপনাকে একটা প্রশ্ন করার অনন্য এক সুযোগ পেয়ে গেলাম। আমার বাবার পক্ষ থেকে আপনাকে একটা কথা বলতে চাই। তিনি এখন স্বর্গে আছেন কিন্তু যখন খুব অসুস্থ ছিলেন, তখন আমাকে বলেছিলেন যদি কখনো সুযোগ মেলে তবে আপনার সঙ্গে যেন একটা ছবি তোলার চেষ্টা করি। কারণ উনি সব সময় বলতেন আমাকে নাকি আপনার মতো করে বড় করেছেন তিনি। আপনাকে অনেক শ্রদ্ধা করতেন তিনি। আপনি যদি আপনার সঙ্গে একটা ছবি তোলার সুযোগ দেন তবে আমি সেটা ফ্রেমে বেঁধে তাঁর সমাধিতে রেখে আসব। যদি ম্যাচের (স্কেনদিয়া-টটেনহাম) ফল আপনার পক্ষে যায়, তাহলে কি আমাকে এ সুযোগটা দেবেন?’

এমন আবেগী এক অনুরোধ শুনে মরিনিও জবাব দিতে একদমই সময় নেননি। এমনকি ম্যাচ শেষ হওয়া পর্যন্ত আলেক্সান্দ্রোভিচকে অপেক্ষায়ও রাখেননি, তাঁকে ছবি তোলার আমন্ত্রণ জানিয়ে রেখেছেন তখনই, ‘ আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। ম্যাচের ফলের সঙ্গে এ ছবির কোনো সম্পর্ক নেই। ছবি তুলব আমরা, তুলে ফেলি চলুন। পারলে ম্যাচের আগে আমদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন। নাকি হোটেলে ছবি তোলাটা সহজ হবে। ম্যাচের পর হলে ম্যাচের পরেই তুলুন। ম্যাচে কী হলো না হলো তার সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই।’

এমন এক অনুরোধ শুনে মরিনিও কতটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন সেটাও জানিয়ে দিয়েছেন, আপনার সঙ্গে ছবি তুলতে পারলে আমি আনন্দিত হব। আমাকে এতটা সম্মান করতেন জেনে আপনার বাবার প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। আমি এ সম্মান পাওয়ার উপযুক্ত নই।

ইউরোপা লিগে বাছাইপর্ব খেলতে হচ্ছে মরিনিওকে।
ছবি: রয়টার্স

আলেক্সান্দ্রোভিচের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে একটু পরই। আজ রাতে ম্যাচের পর ছবি তোলার আশা করছিলেন, মরিনিও সে স্বপ্নটা সংবাদ সম্মেলনেই পূরণ করে দিয়েছেন। টটেনহামের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সুবাদে আলেক্সান্দ্রোভিচ ও মরিনিওর ছবিটা দেখে ফেলেছেন এখন সবাই। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, মরিনিওর দিকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন আলেক্সান্দ্রোভিচ। আর বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সবার শুভেচ্ছা নিচ্ছেন টটেনহাম কোচ।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে টটেনহাম সমর্থক তো বটে নিরপেক্ষ ফুটবল দর্শকও মরিনিওর প্রশংসায় মেতেছেন। টটেনহাম সমর্থকেরা তো এমন একজনকে কোচ হিসেবে পেয়ে গর্ববোধ করছেন রীতিমতো।