মরিবার তরে বার্সার ১০ কোটির স্বাদ

আয়লাই মরিবা।
ছবি: টুইটার

প্রথমবার তাঁর ক্লাবের মূল দলে ডাক পাওয়া উপলক্ষে একটা ভিডিও নিজেদের টুইটারে দিয়েছে বার্সেলোনা। সেই ছোট্টটি থেকে ক্লাবের বিভিন্ন বয়সভিত্তিক দল হয়ে তাঁর উঠে আসার গল্পই চিত্রিত ভিডিওতে। সেখানে প্রথমেই দুটি ব্যাপার চোখে পড়ে। এক, বয়সভিত্তিক দলগুলোতে শারীরিক গড়নে, শক্তিতে আয়লাই মরিবার সঙ্গে প্রতিপক্ষ দলের খেলোয়াড়েরা যেন পাত্তাই পেতেন না! আর দুই, দূর থেকে জোরালো শটে মরিবার গোল করার সামর্থ্য।

অনেক বছর হয়তো এই তরুণের প্রতিভার ঝলক দেখতে পাবে বার্সা। কাতালান ক্লাবটির কোচ রোনাল্ড কোমান চাইলে, ম্যাচের পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে, হয়তো আজই হয়ে যেতে পারে সেই যাত্রার সূচনা। গ্রানাদার বিপক্ষে আজ বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১১টায় লিগে গ্রানাদার মাঠে নামবে বার্সা, সে ম্যাচের দলে আছেন আয়লাই মরিবা। শেষ পর্যন্ত বার্সেলোনায় আজ তাঁর অভিষেক হোক বা না হোক, আজ অন্তত প্রথমবার লিওনেল মেসি, আঁতোয়ান গ্রিজমানদের মতো তারকাদের সঙ্গে একই স্কোয়াড লিস্টে থাকা হচ্ছে তাঁর।

গত বছরের ১৯ জানুয়ারি ১৭তম জন্মদিনের কেক কেটেছেন। লাইবেরিয়ান বাবা ও গিনিয়ান মায়ের সন্তান মরিবার জন্ম গিনিতে। কিন্তু বয়সভিত্তিক দলে মরিবা খেলেছেন স্পেনের হয়েই। স্পেন ও গিনি—দুই দেশেরই নাগরিকত্ব আছে। খেলেন মাঝমাঠে। ৬ ফুট ১ ইঞ্চি উচ্চতার এই মিডফিল্ডার শারীরিক গঠন আর ফুটবল পায়ে ঝলকের মিশেল দেখে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ফরাসি মিডফিল্ডার পল পগবার সঙ্গে তাঁর মিল খুঁজে পান অনেকে।

একসময় আসল পগবার জন্য বেশ আগ্রহ ছিল বার্সার। তাঁকে তো পায়নি, তবে নতুন এই ‘পগবা’ বার্সার দৃষ্টিতে কতটা উঁচুতে আছেন, সেটি বলবে তাঁর বর্তমান চুক্তি। ২০১৯ সালে তাঁর চুক্তি শেষ হয়ে আসছিল, তখন ম্যানচেস্টার সিটি ও জুভেন্টাস মরিবাকে নিয়ে যেতে চেয়েছিল। পরে অবশ্য বার্সার সঙ্গেই চুক্তি নবায়ন করেন মরিবা, ২০২২ সাল পর্যন্ত মেয়াদ। বর্তমান সেই চুক্তিতে এখনো মাত্র ১৭ বছর বয়সী মরিবা বছরে বেতন পান ৫ লাখ ইউরো। আর তাঁর রিলিজ ক্লজটা চোখ কপালে তুলে দেওয়ার মতোই! ১০০ মিলিয়ন বা ১০ কোটি ইউরো! অর্থাৎ, বার্সার ইচ্ছার বাইরে কোনো ক্লাব মরিবাকে নিয়ে যেতে চাইলে সে ক্ষেত্রে ১০ কোটি ইউরো খরচ করতে হবে তাদের, বার্সা পাবে ১০ কোটির স্বাদ!

বার্সা একাডেমির তিন জন আজ স্কোয়াডে আছেন।
ছবি: টুইটার

শারীরিকভাবে এতটাই শক্তিশালী ছিলেন মরিবা যে, বয়সভিত্তিক দলগুলোতে তাঁকে বড়দের দলে খেলানো হতো। ১৫ বছর বয়সে থাকার সময়ই মূলত সবার নজরে এসেছেন। রিয়াল মাদ্রিদের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিপক্ষে একটা হ্যাটট্রিক করেছিলেন, যেখানে শেষ গোলটি করেছিলেন মাঝমাঠ থেকে দূরপাল্লার শটে! এর পরের বছরই বার্সার ‘বি’ দলে ডাক পান মরিবা। এই মৌসুমের শুরুতে নজরে আসেন বার্সার মূল দলের কোচ কোমানের। প্রাক-মৌসুম প্রস্তুতিতে মরিবাকে দলের সঙ্গেই রেখেছিলেন কোমান।

বার্সায় মরিবার আসার গল্পটাও অন্য রকম। ১০ বছর বয়সে বার্সার বিখ্যাত যুব প্রকল্প লা মাসিয়ায় তিনি এসেছেন বার্সেলোনারই নগরপ্রতিদ্বন্দ্বী এসপানিওলের যুব প্রকল্প থেকে। সেটা সেই ২০১০ সালের কথা। একটা দশক পর এখন বার্সার মূল দলে অভিষেকের দরজায় দাঁড়িয়ে মরিবা!