মামুনুলের গোল এশিয়ার সেরা

মানাং মার্সিয়াংদির বিপক্ষে সেই গোলের পর মামুনুলের উদযাপন। ফাইল ছবি
মানাং মার্সিয়াংদির বিপক্ষে সেই গোলের পর মামুনুলের উদযাপন। ফাইল ছবি

বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য দারুণ এক সুখবর এল মামুনুল ইসলামের হাত ধরে। এএফসি কাপে চলতি সপ্তাহে তাঁর গোল সেরার মর্যাদা পেয়েছে। ৪টি গোল প্রাথমিক তালিকায় রেখে এএফসি ডট কম উন্মুক্ত ভোট চেয়েছিল অনলাইনে। কে হবেন এএফসি কাপের চলতি সপ্তাহের সেরা গোলদাতা? এই প্রশ্নের মীমাংসায় তীব্র লড়াই হয়েছে দুজনের মধ্যে। অনলাইন ভোটে ক্ষণে ক্ষণে চিত্র বদলেছে। কখনো মামুনুল এগিয়ে ছিলেন তো তাঁকে পেছনে ফেলেন সিরিয়ার মোহামেদ আল ওয়াকিদ। শেষ পর্যন্ত জয়ী মামুনুলই।

১৫ হাজার ৫২০ জন ভোট দিয়েছেন। মামুনুলের গোলটি পেয়েছে সর্বোচ্চ ৭৯৯৭ ভোট। মোট ভোটের ৫২ শতাংশ। মোহামেদ আল ওয়াকিদ ৭১৯০, যা ৪৬ শতাংশ। তাজিকিস্তানের দিলশভ ভাসিয়েভের গোল ২৯৯ ভোট, যা ২ শতাংশ। ভারতের স্যামুয়েল লালমুয়ানপুইয়ার গোল পেয়েছে ৩৪ ভোট।

মামুনুল এ গোলটি করেছেন ১৯ জুন বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে এএফসি কাপের ম্যাচে। নেপালের মানাং মার্সিয়াংদির বিপক্ষে ঢাকা আবাহনীর ৫-০ ব্যবধানে জয়ে শেষ গোলটি এই মিডফিল্ডারের। সবাই যখন শেষ বাঁশির অপেক্ষা করছিল, ঠিক তখনই নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষে যোগ করা সময়ে পঞ্চম মিনিটে বক্সের সামান্য বাইরে থেকে বাঁ পায়ের শটে বল পাঠান মার্সিয়াংদির জালে। বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়কের পায়ে এমন গোল আরও আছে। ৬ জুন ঢাকায় এই এএফসি কাপেই ভারতের মিনার্ভা পাঞ্জাবের সঙ্গে দুর্দান্ত গোল করেন। ওই গোলে আবাহনী ২-২ স্কোরলাইন করে মূল্যবান একটি পয়েন্ট ছিনিয়ে নিয়েছে।

তবে মিনার্ভার বিপক্ষে ওই গোলটি এএফসির সেরার তালিকায় আসেনি। যদিও সেটি ছিল আরও দৃষ্টিনন্দন গোল। ২০১৪ সালে ইনচন এশিয়ান গেমস ফুটবলে মামুনুলের গোলটি তো কখনো ভোলা যাবে না। আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রায় ৩৫ গজ দূর থেকে তীব্র শটে গোলটি করেছিলেন মামুনুল। সে গোল এএফসির সপ্তাহসেরা তিনটি গোলের মধ্যে ছিল।

গত মে মাসে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আরেকটি গোল দেখেছে দর্শকেরা। বঙ্গমাতা অনূর্ধ্ব-১৯ নারী আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ ফুটবলের সেমিফাইনালে মঙ্গোলিয়ার জালে দারুণ এক ভলিতে বল পাঠান। তাঁর গোলটি স্থান পেয়েছিল ফিফার দর্শক জরিপে সেরার তালিকায়। এবার এএফসির সপ্তাহসেরা হলো মামুনুল ইসলামের গোল। বাংলাদেশের ফুটবলারদের জন্য এটা নতুন প্রেরণাই। মামুনুলও সেটাই মনে করেন, ‘আমি খুব খুশি যে আমার গোলটি এএফসি কাপে এই সপ্তাহের সেরা গোল হয়েছে। আমরাও ভালো গোল করতে পারি, এই গোল সেটাই প্রমাণ করে। অন্যরাও নিশ্চয়ই আরও ভালো ভালো গোল করতে এখন উজ্জীবিত হবে।’ আবাহনী ও জাতীয় দলের স্ট্রাইকার নাবিব নেওয়াজ জীবন বলছেন, ‘মামুন ভাইয়ের গোল এভাবে এএফসি কাপে সেরা হওয়া মানে আমরা আত্মবিশ্বাস পাব আরও অনেক। আশা করি, সামনে আরও এমন গোল করবে বাংলাদেশের ফুটবলাররা।’

এর আগে ১৯৯৬ সালের আগস্ট মাসে এশিয়ার ‘প্লেয়ার অব দ্য মান্থ’ হয়েছিলেন বাংলাদেশের আলফাজ আহমেদ। ওই মাসে এশিয়ান কাপ উইনার্স কাপে মোহামেডানের হয়ে দুই লেগে ৫ গোল করেন এই স্ট্রাইকার। লাওস ইলেকট্রিসিটি ক্লাবের বিপক্ষে ঢাকায় মোহামেডানের ৮-০ গোলের জয়ে আলফাজ করেছিলেন ৪ গোল।

মামুনুলের গোলটির ভিডিও লিংক: