মেসি যোগ দেওয়ার আগেই পিএসজি ছাড়তে চেয়েছিলেন এমবাপ্পে
লিওনেল মেসিকে সঙ্গী হিসেবে পেয়েছেন এ মৌসুমেই। কিন্তু মেসিকে সঙ্গী পেয়েও পিএসজিতে থাকতে চাননি কিলিয়ান এমবাপ্পে। দলে এমনিতেও নেইমার ছিলেন, এবার মেসির সঙ্গেও আলোটা ভাগাভাগি করতে নাকি রাজি ছিলেন না এমবাপ্পে। তাই বহু চেষ্টা করেছেন রিয়াল মাদ্রিদে যাওয়ার। এমনটাই বলা হচ্ছিল। এত দিন এ ব্যাপারে কোনো কথা বলেননি এমবাপ্পে। অবশেষে সত্যটা জানা যাচ্ছে। তাঁর দলবদলের সে নাটক নিয়ে মুখ খুলেছেন ফ্রেঞ্চ ফরোয়ার্ড।
অনেকটা মেসির পথেই এগিয়েছেন এমবাপ্পে। গত মৌসুমে শত চেষ্টাতেও বার্সেলোনা ছাড়তে পারেননি মেসি। পরে তাঁর সব রাগ–ক্ষোভ গোলডটকমের কাছে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন। এবারের দলবদলে এমবাপ্পেও বহু চেষ্টায় পিএসজি ছাড়তে পারেননি। মেসি আর এমবাপ্পের মধ্যে পার্থক্য হলো মেসির ক্ষোভ ছিল ক্লাব সভাপতির ওপর। আর আরএমসি স্পোর্তের কাছে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ক্লাবের ক্রীড়া পরিচালক লিওনার্দোর দিকে তোপ দেখেছেন এমবাপ্পে।
দলবদলের মৌসুমেই পিএসজির ক্রীড়া পরিচালক লিওনার্দো স্বীকার করে নিয়েছিলেন, এমবাপ্পে দল ছাড়তে চান। রিয়াল মাদ্রিদ তাঁকে পাওয়ার আশায় একটি প্রস্তাব দিয়েছে। যদিও লিওনার্দোর দাবি, এত কম (১৬ কোটি ইউরো) প্রস্তাব দিয়ে রিয়াল আসলে পিএসজির সঙ্গে কৌশলের খেলা খেলছে। দলবদলের মৌসুমে এ নিয়ে এক সপ্তাহ ধরে নাটক চললেও এমবাপ্পে এ ব্যাপারে তখন মুখ খোলেননি।
লিওনার্দো তখন বলেছিলেন, মাত্র এক সপ্তাহ আগে দলবদলের এ চেষ্টায় নেইমারের বিকল্প কোনো খেলোয়াড় আনার সুযোগ পাচ্ছে না পিএসজি। কিন্তু এমবাপ্পে লিওনার্দোর সে দাবিকে মিথ্যা বলেছেন আরএমসির কাছে দেওয়া সাক্ষাৎকারে, ‘আমি চলে যেতে চেয়েছিলাম। কারণ, যেই মুহূর্তে আমি চুক্তি নবায়ন করতে চাইনি, তখনই চেয়েছি ক্লাব যেন দলবদলের অর্থ পায়, যাতে ক্লাব ভালো বিকল্প আনতে পারে।’
এ ব্যাপারে লিওনার্দোর ওপর যে তাঁর ক্ষোভ আছে, সেটা বোঝা গেছে পরের কথাতেই, ‘হ্যাঁ, যেটা ছড়ানো হয়েছে... “সে আগস্টের শেষ সপ্তাহে এসে বলছে”, এ কথা আমার ব্যক্তিগতভাবে একদমই ভালো লাগেনি। কারণ, এটা মিথ্যা কথা। আমি জুলাইয়ের শেষেই বলেছি, আমি ক্লাব ছাড়তে চাই।’
আগামীকাল মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ছয়টায় টিভিতে সম্প্রচারিত হবে এমবাপ্পের এই বিশেষ সাক্ষাৎকার। সেই সাক্ষাৎকারেরই কিছু চুম্বক অংশ আজ ছাপা হয়েছে ফ্রেঞ্চ সংবাদমাধ্যমে। সেখানেই তাঁর দলবদল নিয়ে ছড়ানো মিথ্যার প্রতিবাদ করেছেন, ‘মানুষ বলে, আমি এ পর্যন্ত ছয় বা সাতটি চুক্তি নবায়নের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছি, আমি নাকি লিওনার্দোর সঙ্গে এখন কথাই বলি না। কিন্তু এসব একদম মিথ্যা।’
পিএসজি ছাড়তে চাইলেও নিজের শহরের ক্লাবের প্রতি এখনো ভালোবাসা অটুট এমবাপ্পের। আর এ কারণেই চেয়েছিলেন, এই দলবদলেই তাঁকে বিক্রি করে দিক পিএসজি, ‘এটা এমন এক ক্লাব, যারা আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে। এখানে যে চার বছর কাটিয়েছি, সব সময় আনন্দে ছিলাম এবং এখনো সুখে আছি। আমি বেশ আগেই ঘোষণা দিয়েছি, যাতে ক্লাব সামলে নিতে পারে। আমি চেয়েছিলাম এ দলবদল শেষে সবাই তৃপ্ত থাকুক। সবাই হাতে হাত মিলিয়ে সিদ্ধান্ত নিক, একটা ভালো চুক্তি হোক (কিন্তু তা হয়নি) এবং এটা আমি সম্মান করি। আমি বলেছি, “তোমরা যদি আমাকে ছাড়তে না চাও, আমি থাকব।”’
দলবদল নিয়ে বাজারে চলা গুঞ্জনে যে তাঁর নামে মিথ্যাচার করা হচ্ছে, এ নিয়ে এমবাপ্পে যে বেশ ক্ষুব্ধ, সেটা টের পাওয়া গেছে সাক্ষাৎকারে, ‘আমার সম্পর্কে বলা হয়েছে, “কিলিয়ান এখন তো তুমি সভাপতির (নাসের আল খেলাইফি) সঙ্গেই কথা বল।” আমার অবস্থান পরিষ্কার ছিল। আমি বলেছি, আমি যেতে চাই এবং আমি সেটা বহু আগেই বলেছি।’
ওদিকে লিওনার্দো এখনো এমবাপ্পেকে ধরে রাখার ব্যাপারে আশাবাদী, কদিন আগেই ক্যানাল প্লুসকে বলেছেন, ‘মৌসুম শেষে এমবাপ্পে দল ছাড়বেন, এটা ভাবতেই পারছি না। কিলিয়ান ছাড়া পিএসজির ভবিষ্যতের কথা কেউই ভাবছে না।’