মেসি-রোনালদো হতে চাও? রিয়ালে যাও!

এ দুজনের পর্যায়ে কেউ যেতে পারবেন?ফাইল ছবি: রয়টার্স

জানুয়ারি এসেছে, সে সঙ্গে উড়িয়ে এনেছে একগাদা দলবদলের গুঞ্জন। বছরের শুরুটা হয়েছে বেশ বড় এক দলবদলের গুঞ্জন দিয়ে। হ্যারি কেইনকে নিতে চায় ম্যানচেস্টার সিটি। ক্লাব কিংবদন্তি সের্হিও আগুয়েরো ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে। গ্যাব্রিয়েল জেসুসকে তাঁর উত্তরসূরি ভাবা হলেও ধীরে ধীরে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের ওপর আস্থা হারাচ্ছেন পেপ গার্দিওলা। তাই প্রিমিয়ার লিগের সেরা ফরোয়ার্ডকেই পছন্দ হয়েছে সিটির।

শুধুই একজন নম্বর নাইন নন কেইন। এ মৌসুমে তো পারলে মাঝমাঠে নেমেই খেলছেন। নিজে গোলের পর গোল করছেন, গোলের সুযোগ সৃষ্টি করছেন, দলের খেলা গড়ে দিচ্ছেন। সিটি কোচ গার্দিওলার এমন একজনকে পছন্দ হওয়ারই কথা। কিন্তু টটেনহামের ঘরের ছেলেকে সিটিতে যেতে মানা করছেন টটেনহামের সাবেক অধিনায়ক জোনাথন উডগেট। ২৭ বছর বয়সী স্ট্রাইকারকে উডগেট বলছেন, দল যদি ছাড়তেই হয়, তাহলে রিয়াল মাদ্রিদেই যাও। তাহলেই শুধু ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো বা লিওনেল মেসির পর্যায়ে যেতে পারবেন স্পার্স অধিনায়ক।

এ মৌসুমেও দারুণ ফর্মে আছেন কেইন।
ছবি: রয়টার্স

কেইনের প্রতি বড় দলগুলোর আগ্রহ নতুন কিছু নয়। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে বছরের পর বছর একজন গোল করে যাবেন, আর অন্যদের আগ্রহ জন্মাবে না, এটা ভাবাটাই অস্বাভাবিক। মাঝে কিছুদিন রিয়াল মাদ্রিদও চেয়েছিল এই ফরোয়ার্ডকে। টটেনহামের কাছ থেকে এর আগেও তো তারকা কিনেছে মাদ্রিদের কুলীন দলটি। ২০১২ সালে যোগ দেওয়া লুকা মদরিচ ক্লাব কিংবদন্তি হয়ে খেলছেন এখনো। আর ২০১৩ সালে বিশ্ব রেকর্ড গড়ে গ্যারেথ বেলকেও নিয়ে গিয়েছিল রিয়াল। তাই কেইন ও রিয়ালকে জড়িয়ে দলবদলের গুঞ্জন প্রায় প্রতি দলবদলেই উঠত। কিন্তু গত দুই দলবদলের মৌসুমে সে গুঞ্জন চাপা পড়ে গেছে কিলিয়ান এমবাপ্পের জন্য।

মদরিচ ও বেলের আগেই টটেনহাম ও রিয়ালের জার্সি গায়ে চাপিয়েছেন জোনাথন উডগেট। এই ইংলিশ ডিফেন্ডারের ধারণা, মেসি বা রোনালদোর মতোই ফুটবলীয় দক্ষতা আছে কেইনের। কিন্তু টটেনহামে এখনো কোনো ট্রফি না জেতা কেইনকে কিংবদন্তিদের পর্যায়ে যেতে হলে দলীয় সাফল্য পেতে হবে। আর সেটা করতে হলে তাঁকে যোগ দিতে হবে রিয়াল মাদ্রিদে, ‘যদি রিয়াল মাদ্রিদ কাউকে নিতে আসে, যদি হ্যারি কেইনকে নিতে চায়, তাহলে তার যাওয়াই উচিত। যদি ট্রফি জিততে চায় এবং মেসি, রোনালদো ও এ ধরনের খেলোয়াড়দের পর্যায়ে যেতে চায়, তাহলে ওর দল ছাড়তেই হবে।’

শুধু নয়, দলের খেলায় সব দিক থেকেই অবদান রাখেন কেইন।
ছবি: রয়টার্স

টটেনহামে ১১ বছর কাটিয়ে দিয়েছেন কেইন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো ট্রফি নিয়ে উৎসব করা হয়নি তাঁর। শুধু একবার লিগ কাপ ও একবার চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল খেলার স্বাদই তাঁর প্রাপ্তি। রিয়ালে দুই ও টটেনহামে তিন বছর কাটানো উডগেটের ধারণা, ক্যারিয়ারে কিছু পেতে চাইলে মাদ্রিদের দিকে নজর দেওয়া উচিত কেইনের, ‘স্পার্সে ও লিগ জিতবে বলে মনে হয় না, এবার জিতবে না। আগামী পাঁচ বছরেও না। লিভারপুল ও ম্যানচেস্টার সিটির পর্যায়ে যেতে দলটা সাজাতে অনেক দূর যেতে হবে। ও যদি ইউরোপে ট্রফি জিততে চায়, তাহলে রিয়াল মাদ্রিদেই ভালো সুযোগ পাবে।’

এ মৌসুমে জোসে মরিনিওর অধীনে লিগের শীর্ষ স্থানের জন্য লড়ছে টটেনহাম। মরিনিও প্রতিজ্ঞা করেছেন, কিছু না কিছু তিনি জেতাবেনই তাঁর দলকে। কিন্তু উডগেটের ধারণা, কেইনের যে ক্ষমতা, তাতে আরও ভালো কিছু অপেক্ষা করছে তাঁর জন্য। টটেনহামের হয়ে ৩১১ ম্যাচে ২০৫ গোল করা কেইনকে পরিপূর্ণ একজন প্লে মেকার ভাবেন উডগেট, ‘দিন দিন ওর খেলা ভালো হচ্ছে। হ্যারি কেইন অবিশ্বাস্য একজন নম্বর নাইন। কিন্তু এ মৌসুমে অন্যদের দিয়ে যে পরিমাণ গোল করাচ্ছে, সে দশ নম্বর হিসেবেও খেলতে পারবে। ওর পাসিং এবং গোলকে পেছনে রেখে খেলতে পারার ক্ষমতা মিলিয়ে, অসাধারণ এক ফুটবলার সে। দশ নম্বর হিসেবে ওর খেলা দেখে আমার টেডি শেরিংহামের কথা মনে পড়ে।’

রিয়াল মাদ্রিদে যদি না-ও যান কেইন, তবু হতাশ হবেন না উডগেট। কারণ, তাহলেই বেশ পুরোনো এক রেকর্ড ভাঙতে দেখবেন সাবেক ডিফেন্ডার, ‘আমার চোখে ও প্রিমিয়ার লিগের সেরা স্ট্রাইকার। যখন আগুয়েরো, ভার্ডি ও কেইন সবাই পুরো ছন্দে থাকে, তখনো কেইনই প্রিমিয়ার লিগের সেরা স্ট্রাইকার। সে দিন দিন আরও ভালো হচ্ছে। অ্যালান শিয়ারারের রেকর্ড ভাঙার ভালো সম্ভাবনা আছে ওর।’

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড নিউক্যাসল কিংবদন্তি শিয়ারারের। ২৬০টি গোলের রেকর্ড ভাঙতে এখনো বহুদূর যেতে হবে কেইনকে। স্পার্স অধিনায়কের আজ পর্যন্ত লিগ গোল ১৫৩টি।