মেসি ১, রোনালদো ২

হারের মুখ থেকে দলকে বাঁচিয়েছেন, রোনালদো এখন কোচের চোখের মণি যেন!ছবি : রয়টার্স

লিগ শিরোপা ধরে রাখার লড়াইয়ে গত রাতে প্রথম প্রতিপক্ষের মাঠে খেলতে গিয়েছিল জুভেন্টাস। প্রতিপক্ষ ছিল রোমা। সে ম্যাচে দু'বার পিছিয়ে পড়ে, দশজনের দল নিয়েও শেষমেশ ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর কল্যাণে ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।

গত মৌসুমের শেষ ম্যাচে এই রোমার বিপক্ষেই ৩-১ গোলে হেরেছিল জুভেন্টাস। তত দিনে অবশ্য লিগ শিরোপা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল জুভেন্টাসের। তাই তারা ম্যাচটি অতটা মনোযোগ দিয়ে খেলেনি—এমন কথাও ছিল।

শুরু থেকেই দুর্দান্ত খেলছিল রোমা।
ছবি : রয়টার্স

এই মৌসুমে দুই দলের প্রথম মোকাবিলায় রোমা জুভেন্টাসকে দেখিয়ে দিল, তারা আসলেই সুযোগ পেলে ভয়ংকর হতে পারে। ফরাসি মিডফিল্ডার জর্ডান ভেরেটু, ইতালির মিডফিল্ডার লরেঞ্জো পেলেগ্রিনি বা আরমেনিয়ার হেনরিক মিখিতারিখানের রসায়ন চোখে পড়েছে বেশ। নিজেদের রক্ষণভাগ আটকে রেখে নিরন্তর প্রেসিংয়ের সাহায্যে হুট করে প্রতি আক্রমণে উঠতে পারলে জুভেন্টাস যে খাবি খায়, চোখে আঙুল দিয়ে আবারও দেখিয়েছে রোমা।

৩০ মিনিটে জর্ডান ভেরেটুর এক শট ডিবক্সের ভেতরে থাকা আরেক ফরাসি মিডফিল্ডার আদ্রিয়াঁ রাবিওর হাতে লাগে, পেনাল্টি পায় রোমা। সেখান থেকে ভেরেটুই এগিয়ে দেন দলকে। প্রথমার্ধের ঠিক আগে একই ভাবে রোমার পেলেগ্রিনির হাতে লাগে বল, পেনাল্টি পায় জুভেন্টাস। ঠান্ডা মাথায় লক্ষ্যভেদ করেন রোনালদো।

লাল কার্ড দেখে জুভেন্টাসের বিপদ আরও বাড়িয়ে দিয়েছিলেন রাবিও।
ছবি : রয়টার্স

সমতায় ফিরেও বেশিক্ষণ স্বস্তিতে থাকেনি জুভেন্টাস। দুর্দান্ত এক প্রতি আক্রমণে মিখিতারিয়ানের পাস থেকে গোল করে দলকে আবারও এগিয়ে দেন ভেরেটু। দ্বিতীয়ার্ধেও একইভাবে খেলা শুরু করে রোমা। ৫৬ মিনিটে স্ট্রাইকার এডিন জেকোর এক শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়, নাহয় তখনই ৩-১ গোলে এগিয়ে যেতে পারত তাঁরা। ৬১ মিনিটে জুভেন্টাসকে বিপদে ফেলে লাল কার্ড দেখেন রাবিও। মিখিতারিয়ানকে পেছন থেকে ট্যাকল করতে গিয়ে উল্টো পায়ে লাথি মেরে বসেন, আগেই হলুদ কার্ড একটা দেখা ছিল, এই ঘটনায় আরেকটা হলুদ কার্ড দেখে মাঠ থেকে বেরিয়ে যান এই ফরাসি মিডফিল্ডার। জুভেন্টাস শিবিরে তখন হারের শঙ্কা।

শঙ্কা থেকে উদ্ধার করেন সেই রোনালদো। রাইটব্যাক দানিলোর মাপা ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে দলকে সমতায় ফেরান পর্তুগিজ তারকা।

মিডফিল্ড থেকে তেমন কোনো সৃষ্টিশীলতা পাচ্ছে না জুভেন্টাস গত মৌসুম থেকেই। এ সমস্যাটা ছিল এই ম্যাচেও। রাবিও, ম্যাকেনি, রামসে—সবাই ভুল পাস দিয়েছেন প্রচুর, খেলা গড়ে দিতে পারেননি। রক্ষণভাগে লিওনার্দো বোনুচ্চি হতাশ করেছেন। প্রতিপক্ষ দল হাই লাইন ডিফেন্সে খেললে আর নিরন্তর প্রেস করলে কীভাবে উদ্ধার পাওয়া যায়, সেটা নিয়ে অনেক কাজ করতে হবে পিরলোকে।

শেষে সেই রোনালদোই ত্রাতা।
ছবি : রয়টার্স

প্রায় একই সময়ে গতকাল মাঠে নেমেছিলেন রোনালদো আর মেসি। পনেরো মিনিট আগেই নেমেছিলেন রোনালদোরা। ওই ম্যাচে মেসি এক গোল করেছেন, তা দেখে রোনালদো দিলেন দুটো। সপ্তাহের লড়াইয়ে তাই রোনালদোই এগিয়ে থাকলেন!