মেসি 'ভালো না থাকলে' আর্জেন্টিনার 'ভোগান্তি'

মেসির প্রশংসায় পঞ্চমুখ সাম্পাওলি।ছবি: টুইটার
মেসির প্রশংসায় পঞ্চমুখ সাম্পাওলি।ছবি: টুইটার

নাইজেরিয়ার বিপক্ষে জয়ের পর মেসির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন আর্জেন্টিনা কোচ হোর্হে সাম্পাওলি

বিশ্বকাপ জিততে চান? দলে লিওনেল মেসি থাকলে আগে তাঁকে ভালো রাখার ব্যবস্থা করুন। মেসিকে ‘ভালো রাখা’ই বিশ্বকাপজয়ের চাবিকাঠি—নাইজেরিয়ার বিপক্ষে জয়ের পর এই বোধোদয় ঘটেছে আর্জেন্টিনা কোচ হোর্হে সাম্পাওলির।

অথচ ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে আর্জেন্টিনার ৩-০ গোলে হারের পর কী বিতর্কটাই না হলো। আর্জেন্টিনা দলে নাকি গৃহদাহ! কোচের কথা কেউ শুনছেন না। কোচ একাদশ ঠিক করার কেউ নয়। নাইজেরিয়ার বিপক্ষে একাদশ গঠনে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার দলের সিনিয়র খেলোয়াড়েরাই নেবেন। এসব বিস্ফোরক খবরে চাউর হয়েছিল সংবাদমাধ্যম। তুষের অনল হয়ে জ্বলতে থাকা আর্জেন্টিনার সেই ড্রেসিংরুমে একপশলা শান্তির বারিধারা এনে দিয়েছে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে জয়। আর সাম্পাওলি নিজেও বুঝতে পেরেছেন, বিশ্বকাপ জিততে হলে তাঁকে কী করতে হবে। কী আবার! মেসিকে ভালো রাখতে হবে।

বিশ্বকাপের শেষ ষোলো নিশ্চিতের পর কথাটা সাম্পাওলি নিজের উদাহরণ টেনেই বলেছেন, ‘লিওকে যে কোচ অনুশীলন করায় সে জানে, তাকে ভালো রাখার চেষ্টা থাকে আশপাশের (দল) সবার। তার ভালো বোধ করাটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি মেসিকে বেশি বেশি পাস দিতে পারি, তাহলে সুযোগ আসবে (বিশ্বকাপ জয়ের)। অন্যথায় ভুগতে হবে।’

সাম্পাওলি আসলে বুঝিয়ে দিয়েছেন, এই বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা ২৫ বছরের শিরোপাখরা (বড় টুর্নামেন্ট) কাটাতে চাইলে মেসিকে ভালো রাখার বিকল্প নেই। তাহলে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে মেসি কি ভালো বোধ করেননি? এ প্রশ্নেরও জবাব দিয়েছেন সাম্পাওলি, ‘আমাদের আছে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়। তাঁর কাছ থেকে উপকৃত হতে হবে বাকিদের। এ কারণেই বলেছিলাম, ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটা ছিল আমাদের মাথাব্যথা, মেসির না।’

আইসল্যান্ডের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে ১-১ গোলে ড্র করেছিল আর্জেন্টিনা। পরের ম্যাচে তো ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে সেই হার, যা গ্রুপ পর্ব থেকে প্রায় ছিটকেই ফেলেছিল লাতিন দলটিকে। নাইজেরিয়ার বিপক্ষে শেষ ম্যাচটা তাই হয়ে দাঁড়ায় বাঁচা–মরার লড়াই। খুব স্বাভাবিকভাবেই এই ম্যাচে জান বাজি রেখে লড়তে হতো মেসিদের এবং সেটাই ঘটেছে। আগের দুই ম্যাচে আর্জেন্টাইন ফুটবলের সৌরভ না মিললেও এই ম্যাচে স্রেফ ম–ম করেছে। এ জন্য শিষ্যদের কৃতিত্বকেই বড় করে দেখছেন সাম্পাওলি।

আর্জেন্টিনার এই কোচ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘পেনাল্টির পর কিছুটা শঙ্কা জেগেছিল। তবে আগেই বলেছি আমার খেলোয়াড়েরা সত্যিকারের লড়াকু। তারা জান বাজি রেখে লড়েছে। অনেক কঠিন একটা কাজ সম্পন্ন করেছে খেলোয়াড়েরা। এখন প্রতিটা ম্যাচই ফাইনাল। ফ্রান্সের মুখোমুখি হওয়ার আগে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার।’

কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে ফ্রান্সের মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা। কাজানে ৩০ জুন শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত আটটায় মাঠে গড়াবে এই হাইভোল্টেজ লড়াই।