মেসিকে এক বছর বসিয়ে রাখতে চায় বার্সেলোনা

২০১৭ সালে চুক্তি নবায়নের পর লিওনেল মেসি ও বার্সা সভাপতি জোসে মারিয়া বার্তোমেউ।এএফপি ফাইল ছবি

লিওনেল মেসির সঙ্গে চুক্তিতে বার্সেলোনার শর্তগুলো কি? এই প্রশ্নের জবাব খুঁজছেন অনেকেই। সেটি যথেষ্ট যুক্তিসংগত। কারণ দুই পক্ষ চুক্তির শর্তের দুই রকম ব্যাখ্যার ওপর দাঁড়িয়ে নিজেদের অবস্থানে অটল। বার্সার দাবি, মেসি ক্লাব ছাড়তে চাইলে তাঁকে বাই আউট ক্লজের পুরো ৭০ কোটি ইউরো দিতে হবে। অন্যদিকে আর্জেন্টাইন তারকার দাবি, শর্ত মেনেই তিনি এখন ফ্রি-এজেন্ট। এই অচলাবস্থা নিরসনে কি করতে পারে দুই পক্ষ?

ইএসপিএন সূত্র মারফত জানিয়েছে, রিলিজ ক্লজ দেওয়া ছাড়াই মেসির বার্সার ছাড়ার পথ করে দিতে যাচ্ছে বার্সা। নড়েচড়ে না বসে আগে পুরোটা শুনুন। শর্তটা ভীষণ কঠিন। মেসি ফ্রি-এজেন্ট হিসেবে বার্সা ছাড়তে পারবেন যদি আগামী মৌসুমে ফুটবল না খেলেন। সহজ কথায় পরের মৌসুমে মেসি কোনো বেতন পাবেন না এবং আগামী গ্রীষ্মের আগে তিনি কোনো দলে যোগ দিতে পারবেন না—তবেই তাঁকে ফ্রি-তে ক্লাব ছাড়ার পথ করে দেবে বার্সা। তখন অবশ্য এমনিতেই মেসির সঙ্গে বার্সার বর্তমান চুক্তির মেয়াদ ফুরোবে। ২০২১ সালের জুনে বার্সার সঙ্গে বর্তমান চুক্তির মেয়াদ ফুরোবে মেসির।

২০১৭ সালে মেসির সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করে বার্সা। শর্ত ছিল, নতুন চুক্তিতে প্রতি মৌসুম শেষে চাইলে ক্লাব ছাড়তে পারবেন তিনি। তবে এ ইচ্ছাটা জানাতে হবে মৌসুম শেষ হওয়ার ২০ দিন আগে। তা না করলে নতুন মৌসুমের জন্য কাতালান ক্লাবটির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হবেন মেসি। আর্জেন্টাইন তারকা নতুন মৌসুমের আগে ক্লাব ছাড়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে দাবি করেন, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে যেহেতু এই মৌসুমটা স্বাভাবিক সময়ে শেষ হয়নি, আরও পিছিয়েছে আর এই পেছানো সময় ধরেই বার্সার শর্তের মধ্যে থেকে সিদ্ধান্তটা নিয়েছেন তিনি। এদিকে বার্সা দাবিটি উড়িয়ে দিয়েছে। ক্লাবের একটি সূত্র ইএসপিএনকে জানায়, মেসির ক্লাব ছাড়ার ইচ্ছা প্রকাশের সময়সীমা শেষ হয়েছে গত জুনে।

মেসির চুক্তির এই শর্ত নাকি নানাভাবে ব্যাখ্যা করা সম্ভব। দুই পক্ষ শেষ পর্যন্ত কোনো মীমাংসায় না এলে বিষয়টি গড়াতে পারে আদালত পর্যন্ত।

কিন্তু মেসির আইনজীবীদের ভিন্নমত। করোনা মহামারির কারণে এবার মৌসুম শেষ হয়েছে দেরিতে। তাই ওই শর্তের মেয়াদও বাড়বে। চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল হয়েছে গত ২৩ আগস্ট। তবে মৌসুম ঠিক কবে শেষ হয়েছে এবং কোন পক্ষ কবে শেষ হয়েছে ধরে নিজেদের অবস্থানে অনড় রয়েছে তা ঠিক নিশ্চিত নয়। সে যাই হোক মেসি নিজেকে ফ্রি-এজেন্ট হিসেবে দেখছেন এবং গত সোমবার ও মঙ্গলবার হাজির হননি বার্সার অনুশীলনে। এদিকে স্কাই স্পোর্টসের প্রতিবেদন সত্য হলে, অনুশীলনে যোগ না দেওয়ায় মেসিকে ‘বিদ্রোহী’ হিসেবে দেখছে বার্সা। তবে স্পেনের সংবাদপত্রগুলোতেও বিভ্রান্তি রয়েছে। সেখানে কিছু সংবাদপত্রের দাবি, মেসির ৭০ কোটি বাই আউট ক্লজের দাবি ভিত্তিহীনও হতে পারে।

লা লিগা কর্তৃপক্ষের কথা শুনে মেসির আইনজীবীরা নিশ্চিতভাবেই হতাশ হয়েছেন। লিগের দাবি, ক্লজ পরিশোধ করেই বার্সা ছাড়তে হবে মেসিকে। এদিকে এ নিয়ে কয়েকজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলেছে ইএসপিএন। মেসির চুক্তির এই শর্ত নাকি নানাভাবে ব্যাখ্যা করা সম্ভব। দুই পক্ষ শেষ পর্যন্ত কোনো মীমাংসায় না এলে বিষয়টি গড়াতে পারে আদালত পর্যন্ত। শেষ খবর হলো মেসির বাবার সঙ্গে বসতে রাজি হয়েছে বার্সা। ইএসপিএন জানিয়েছে, এ মুহূর্তে মেসির সঙ্গে সব বিরোধ ভুলে তাঁকে দুই বছরের জন্য চুক্তি নবায়নের অনুরোধ করতে পারে কাতালান ক্লাবটি।