মেসিকে কেনার প্রস্তুতি সেরে রাখছে সিটি

আগামী মৌসুমে সিটিতে যাবেন মেসি?ছবি: রয়টার্স

এ মৌসুমে একটুর জন্য হয়নি। মেসি বার্সেলোনা ছাড়তে চাইলেও, সোনার ডিম পাড়া হাঁসকে মুফতে ছাড়তে রাজি হয়নি ক্লাব। আইনি জটিলতার মধ্য দিয়ে যেতে চাননি বলে অনিচ্ছা সত্ত্বেও স্পেনেই রয়ে গেছেন মেসি। ফলে, বহুদিনের স্বপ্ন পূরণ হয়নি ম্যানচেস্টার সিটির। একটুর জন্য মেসিকে পাওয়া হয়নি তাদের।

সিটি অবশ্য হাল ছেড়ে দেয়নি। তারা এখন স্বপ্ন দেখছে ২০২১-কে ঘিরে। মেসি যদি বার্সেলোনার বর্তমান বোর্ডের ওপর রাগ পুষে রাখেন ডিসেম্বর পর্যন্ত, তাহলেই জানুয়ারিতে যেকোনো ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি করতে কোনো বাধা থাকবে না তাঁর। আর সিটি এ আশাতেই আছে। আর মেসিকে দলে জায়গা দেওয়ার জন্য ক্লাবের ওপর যেন আর্থিক চাপ না পড়ে, সেটা এরই মাঝে নিশ্চিত করে রাখছে ক্লাবটি। ম্যানচেস্টার সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ওমর বেরাদা ক্লাবের সমর্থকদের তাই ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী হওয়ার খবর দিতে পারছেন।

একদিকে নিজের ক্লাবে অস্থিরতা, ওদিক সিটিতে গার্দিওলার উপস্থিতি। ক্লাবের অবস্থান, আর্থিক সংগতি ও চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতার তীব্র ক্ষুধা মিলে মেসির সিটিতে যাওয়াটা বেশ যুক্তিযুক্ত সিদ্ধান্ত বলেই মনে হচ্ছিল। কিন্তু বর্তমান পরিচালকদের সঙ্গে বনিবনা না হলেও মামলা করার মতো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি মেসি। রয়ে গেলেও, বার্সেলোনা অধিনায়ক পরিষ্কার বুঝিয়ে দিয়েছেন ২০২১ এর জুনের পর আর নয়। ডিসেম্বরের মধ্যে তিনি নতুন চুক্তি করবেন, এতটা আশা জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউ করছেন বলেও মনে হয় না।

বেরাদা সে সুযোগটাই নেওয়ার পক্ষে। ম্যানচেস্টার ইভিনিং নিউজে বলেছেন, ‘অসাধারণ প্রতিভা তিনি। এমন একজন খেলোয়াড় যিনি যেকোনো ক্লাবেই মাঠে বা মাঠের বাইরে অনেক বড় প্রভাব ফেলতে পারেন। বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়। এ প্রজন্মের সেরা। বিশ্বের যেকোনো ক্লাবই তাঁকে পাওয়ার সম্ভাবনার কথা বিবেচনা করে দেখবে। তিনি সিটিতে খেলার কথা ভাবছেন, এটা বলা হচ্ছিল; এটাই তো বুঝিয়ে দিচ্ছে ক্লাব হিসেবে গত কয়েক বছরে কতটা এগিয়েছে এ দল। একটা প্রজন্মের সেরা খেলোয়াড় আমাদের দলে এসে খেলার কথা চিন্তা করছে।’

মেসির মতো খেলোয়াড়কে পেতে চাইলেই হয় না। সে জন্য ক্লাবের আর্থিক গঠনটাও সাজিয়ে নিতে হয়। বিশ্বের সর্বোচ্চ বেতনভোগী ফুটবলার মেসি। করসহ তাঁর জন্য বছরে ১০ কোটি ইউরো খরচ করতে হবে। ফলে তাঁর অন্তর্ভুক্তি মানেই ক্লাবের আয় এর চেয়েও বেশি বাড়াতে হবে। ফিফার আর্থিক সংগতি নিয়ম নিয়ে অতীতে বিপদে পড়া সিটির জন্য কাজটা বেশ কঠিন। তবে বেরাদা বলছেন, মেসির জন্য পুরো ক্লাবের আর্থিক খোলনলচে পাল্টে নিতেও সমস্যা হবে না তাঁদের, ‘কী হতে পারত (এ গ্রীষ্মের দলবদলে) সেটা কল্পনা করা কঠিন। ওই দুই সপ্তাহে বার্সেলোনায় সবকিছু হচ্ছিল। আগামী মৌসুমে কী হবে, সেটা কল্পনা করাও প্রায় অসম্ভব। মেসি প্রজন্মের সেরা, বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় এবং সাধারণত আমরা যেমন বিনিয়োগ করি তার চেয়ে ব্যতিক্রম। কিন্তু বর্তমান স্কোয়াড নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা করা আছে এবং বর্তমানে যে সম্ভাবনাগুলো আছে, সেগুলো ভেবে রাখা আছে। প্রত্যেক খেলোয়াড়ের জন্য আমরা ভেবে রেখেছি, কারণ অনেক কিছুই ঘটতে পারে। কিন্তু এটাও ঠিক আমাদের সেই আর্থিক শক্তি ও সাংগঠনিক ক্ষমতা আছে (মেসিকে টানার মতো)।’

আবারও মেসির কোচ হতে পারবেন গার্দিওলা?
ছবি: রয়টার্স

এ কারণেই জানুয়ারিতে মেসির সঙ্গে চুক্তি করার সুযোগ পেলে পিছপা হবে না সিটি। যদি দুই পক্ষ রাজি থাকে তবে আর্থিক দিকটা কোনো বাধার কারণ হবে না বলেই ধারণা সিটির প্রধান নির্বাহীর, ‘আমরা তাই এ নিয়ে নিশ্চিন্তে আছি, কারণ আমরা জানি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারব। আমাদের তাড়াহুড়া করে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে হবে না। কারণ সের্হিও আগুয়েরো এবং গ্যাব্রিয়েল জেসুস খুব ভালো করছে। বিশ্বের সেরা স্ট্রাইকারদের মধ্যে তাঁরা দুজন। আর যদি মনে হয় আর কাউকে আনা দরকার, সেটা পরের মৌসুম হোক বা তার পরের মৌসুমে, সঠিক মূল্যে দলবদলের জন্য আর্থিকভাবে সক্ষম আমরা।’