মেসির অনুরোধ মেনে লেভাকেও দেওয়া হবে ব্যালন ডি’অর?

সপ্তম ব্যালন ডি’অর জিতেছেন মেসিছবি : রয়টার্স

এ বছরের ব্যালন ডি’অরের মীমাংসা হয়ে গেছে। আর্জেন্টিনাকে কোপা আমেরিকা জেতানোর পথে টুর্নামেন্টজুড়ে আলো ছড়ানো লিওনেল মেসি ক্যারিয়ারে সপ্তমবারের মতো জিতেছেন বর্ষসেরার এই পুরস্কারটা। তবে মেসির কারণেই এখন রবার্ট লেভানডফস্কির ক্যারিয়ারের প্রথম ব্যালন ডি’অরও কি জেতা হয়ে যাবে? গুঞ্জন সত্যি হলে তেমনটা হতেই পারে।

এবার পুরস্কারের দৌড়ে মেসির পেছনে দ্বিতীয় হয়েছেন ‘লেভা’। কিন্তু গত মৌসুমে বায়ার্ন মিউনিখের পোলিশ স্ট্রাইকারেরই যে পুরস্কারটা জেতা উচিত ছিল, এ নিয়ে সংশয় সামান্য। অথচ পুরস্কারটা যে প্রতিষ্ঠান দেয়, সেই ফ্রান্স ফুটবল ম্যাগাজিন কর্তৃপক্ষ করোনার কারণে গত মৌসুমে ব্যালন ডি’অর না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু গত পরশু ব্যালন ডি’অর জয়ের পর বক্তৃতায় মেসির কথার পর লেভাকেও গত মৌসুমের ব্যালন ডি’অর দেওয়ার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করছে ফ্রান্স ফুটবল।

ফ্রান্স ফুটবলের প্রধান সম্পাদক পাসকাল ফেরের কথা শুনে স্বপ্ন দেখতেই পারেন লেভা ও তাঁর ভক্তরা।

পুরস্কারটা লেভাকেই দেওয়া হবে, এমনটা নিশ্চিত করে বলেননি ফেরে। পুরস্কারটা যে দেওয়া হবেই, এমন নিশ্চয়তাও দেননি। শুধু বলেছেন, পুরস্কার মঞ্চে মেসির কথার পর তাঁরা ২০২০ ব্যালন ডি’অর দেওয়ার কথা ভাবছেন। কিন্তু তাতেই লেভার ভক্তরা স্বপ্ন দেখতে পারেন, কারণ গত বছরে যে লেভারই পুরস্কারটা জেতা উচিত ছিল, সেটি প্রায় সবার বিশ্লেষণেই উঠে এসেছে।

লেভাকে হারিয়ে ব্যালন ডি’অর জেতার পর পরশু পুরস্কার মঞ্চে উঠে প্রতিদ্বন্দ্বীর উদ্দেশে মেসি বলেছিলেন, ‘রবার্টকে বলতে চাই, এই পুরস্কারের দৌড়ে তোমার সঙ্গে লড়তে পারা আমার জন্য সম্মানের। ব্যালন ডি’অর জেতা তোমারও প্রাপ্য। গত বছর সবাই এ ব্যাপারে একমত ছিল যে তোমারই জেতা উচিত ছিল।’

এরপর ফ্রান্স ফুটবলকে মেসি অনুরোধ করেন, ‘আমার মনে হয় ফ্রান্স ফুটবলের উচিত তোমাকে তোমার ব্যালন ডি’অর দেওয়া। কারণ, সেটা তোমার প্রাপ্য। আশা করি, ফ্রান্স ফুটবল সেটা তোমাকে দেবে, তোমার ঘরে একটা ব্যালন ডি’অর থাকবে। কারণ, (গত মৌসুমে) তুমি ছাড়া আর কেউ জিততে পারত না! এই পুরস্কারটা তোমার ঘরে থাকা উচিত।’

বিজয়ীর বক্তব্য দিচ্ছেন মেসি
ছবি: রয়টার্স

মেসির কথার সূত্র ধরেই আজ ফ্রান্স ফুটবলের প্রধান সম্পাদক পাসকাল ফেরে বললেন, ‘মেসি খুব সুন্দর, খুব বুদ্ধিদীপ্ত একটা কথা বলেছেন। তবে আমার মনে হয় না আমাদের এ নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এটা (২০২০ সালের ব্যালন ডি’অর দেওয়া) নিয়ে আমরা ভাবতে পারি। পাশাপাশি আমাদের ব্যালন ডি’অরের ইতিহাসের সম্মানও ধরে রাখতে হবে।’

ইতিহাসের সম্মানের কথা কেন আসছে? পুরস্কারটা যে ভোটে নির্ধারিত হয়ে এসেছে সব সময়! গত মৌসুমে ব্যালন ডি’অরটা লেভার প্রাপ্য ছিল, এমনটা অনেকের মনে হতে পারে, কিন্তু ভোটে তো আর সেটা নির্ধারিত হয়ে যায়নি!

সে কারণেই পাসকাল ফেরে বলছেন, ‘...এই পুরস্কারটা সব সময় ভোটে নির্ধারিত হয়েছে। আমরা তো আর নিশ্চিত করে বলতে পারি না যে গত বছর লেভানডফস্কিই ব্যালন ডি’অর জিততেন। আমরা এটা নিশ্চিত করে বলতে পারি না, কারণ এটা ভোটে ঠিক হয়নি। তবে সত্যি বলতে, গত বছর লেভানডফস্কিরই জেতার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি ছিল।’

২০১৮ সালের ব্যালন ডি’অর বিজয়ী মদরিচের সঙ্গে পাসকাল ফেরে
ছবি: টুইটার

ব্যালন ডি’অর নিয়ে প্রতিবছরই অনেক বিতর্ক হয়, এবারও হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত পাসকাল ফেরের কথাটা হয়তো পুরস্কারের কারণে সৃষ্ট বিতর্কের জবাব হয়ে আসবে, ‘ব্যালন ডি’অর একটা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্ধারিত হয়। ১৭০ জন বিচারকের সিদ্ধান্তে মেসির দিকেই ভোটটা গেছে।’

তবে এই ১৭০ জনের মধ্যে তাঁর ‘সেরা’র ভোট যে মেসির বক্সে যায়নি, তা-ও জানিয়ে দিয়েছেন পাসকাল ফেরে, ‘আমি প্রথম পুরস্কারের ভোটটা মেসিকে দিইনি। লেভানডফস্কিকে বেছে নিয়েছিলাম। তবে আমার চোখে এবার মেসিরও ব্যালন ডি’অর জেতা প্রাপ্য ছিল।’

করোনায় অনেক লিগ-টুর্নামেন্ট স্থগিত কিংবা বাতিল হয়ে যাওয়ায় গত বছর ব্যালন ডি’অর দেওয়া হয়নি। তবে ফিফার বর্ষসেরা পুরস্কার ‘ফিফা দ্য বেস্ট’ ঠিকই দেওয়া হয়েছিল, সেখানে পুরস্কার ঠিকই লেভা জিতেছিলেন।