মেসির জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে লোভনীয় প্রস্তাব

বার্সেলোনা তারকা লিওনেল মেসিছবি: টুইটার

ঢোলের বাড়িটা মেসিই দিয়ে রেখেছেন, এখন বাকি কাজটা নাচুনে বুড়িদের।

কদিন আগেই স্প্যানিশ টেলিভিশন চ্যানেল ‘লা সেক্সতা’কে একটি সাক্ষাৎকার দেন মেসি। বলেছেন ক্যারিয়ারের কোনো একপর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারে খেলতে চান।

এমনিতেই মেসির বার্সেলোনা ক্যারিয়ার নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। আগামী মৌসুমে কাতালুনিয়ায় থাকবেন কি না, এ নিয়ে সন্দেহ। এখন পর্যন্ত যে গুঞ্জন, তাতে ম্যানচেস্টার সিটি লোভনীয় এক প্রস্তাব দিয়ে রেখেছে।

সে প্রস্তাবে প্রথম দুই বছর ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে খেলবেন। বাকি দুই বছর খেলতে হবে সিটিরই অন্য এক দল নিউইয়র্ক সিটিতে।

মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) দলগুলোর মধ্যে যে শুধু নিউইয়র্কই লিওনেল মেসিকে চাচ্ছে, এমন নয়। বাজারে আরেকটি গুঞ্জন ছড়াচ্ছে ইন্টার মিয়ামিকে নিয়ে।

ডেভিড বেকহামের দল নাকি মেসি-সুয়ারেজ দুজনকেই চাইছে ২০২২ সালে। আর মেসির জন্য এর চেয়েও লোভনীয় এক প্রস্তাব দিয়ে রেখেছেন স্বদেশি মাতিয়াস আলমেইদা।

ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বেলায় ফুটবলারদের যুক্তরাষ্ট্রে খেলতে যাওয়া নতুন কিছু নয়। পেলে, বেকহাম, রাউল, আন্দ্রেয়া পিরলো, রুনি, ভিয়া, ইব্রাহিমোভিচদের মতো তারকারা আগেই এ পথে হেঁটেছেন।

ইউরোপের ক্লাবে মূল্য হারাচ্ছেন বুঝতে পেরে ক্যারিয়ার–সায়াহ্নে বাড়তি অর্থ কামানোর উপায় হিসেবেই দেখেন সবাই এ লিগকে। তবে মেসিকে অর্থ নয়, অন্য এক লোভ দেখাচ্ছেন ম্যাতিয়াস আলমেইদা।

মেসি ‘লা সেক্সতা’য় অনেক কিছু নিয়েই কথা বলেছেন। তাঁর পূর্বসূরি যে সাক্ষাৎকারটা মনোযোগ দিয়ে দেখেছেন, সেটা বোঝা যাচ্ছে। কারণ, ১৯৯৮ ও ২০০২ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার হয়ে খেলা এই মিডফিল্ডার মেসিকে টোপ দিচ্ছেন স্বাভাবিক পারিবারিক জীবনযাপনের!

নাইনটি মিনিটস ফুটবলের সঙ্গে কথোপকথনে আলমেইদা বলেছেন, ‘জানতে চান, কেন আমার মনে হচ্ছে, এটা দারুণ একটা চিন্তা? কারণ, যুক্তরাষ্ট্র অনেক বড় এক দেশ। আমার ধারণা, এখানে ৩৫ কোটি মানুষ আছে। এখানে তারকারা শান্তিতে রাস্তায় হাঁটতে পারে। সবাই এমন এক জীবন চায়, যেটা নিজের মতো উপভোগ করতে পারে এবং ভিন্নভাবে যাপন করতে পারে।’

এমএলএসের দল সান হোসে আর্থকোয়াকের দায়িত্বে আছেন আলমেইদা। গত দুই বছর এখানেই কাটিয়েছেন। এতটাই ভালো লেগেছে এখানকার জীবনযাপন যে মেক্সিকোর বিখ্যাত ক্লাব ক্রুজ আজুলের কাছ থেকে ডাক পেয়েও যাননি।

যুক্তরাস্ট্রের ফ্লোরিডায় মেসি অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছেন বলে গুঞ্জন চলছে
ছবি: টুইটার

আর মেসিকেও সে টোপই দিচ্ছেন। কারণ, সাক্ষাৎকারে মেসি বলেছিলেন, ‘যে জীবন উপভোগ করতে পারছি, এতে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি। কিন্তু মাঝেমধ্যে একদম সাদাসিধে অখ্যাত কেউ হতে ইচ্ছা করে। মার্কেটে যেতে, সিনেমা দেখতে বা কোনো রেস্তোরাঁয় গিয়ে খেতে ইচ্ছা করে, বিশেষ করে সঙ্গে যখন আমার বাচ্চারা থাকে।’

আলমেইদার ধারণা, স্পেন বা ইউরোপ ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখলেই এ ইচ্ছা পূরণ হবে মেসির। সেভিয়া ও ইন্টার মিলানের সাবেক এই মিডফিল্ডারের যুক্তি, ‘মেসি, তার বাচ্চা, তার স্ত্রী, সবাই অনায়াসে হাঁটতে পারবে, বাইসাইকেল চালাতে পারবে, সে চাইলে সুপারমার্কেটে যেতে পারবে। সে তারকাখ্যাতির প্রভাবে থাকবে না, যেটা তাকে এর দাস বানিয়ে ফেলে। এ কারণেই আমার মনে হয় যুক্তরাষ্ট্র ওর জন্য খুব ভালো হবে।’

শুধু মেসিই নন, তারকাখ্যাতির কারণে যেসব ফুটবলার স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারছেন না, তাঁদের সবাইকেই যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আলমেইদা।

ফুটবল নিয়ে অতিরিক্ত মাতামাতি না থাকায় এ দেশকেই ভালো মনে হচ্ছে এই আর্জেন্টাইনের, ‘যে খেলোয়াড়েরা স্বাভাবিক জীবন চায়, যারা বিখ্যাত বলে সুপারমার্কেটে লাইনের সামনে যেতে চায় না কিংবা ব্যাংকে গিয়েও লাইনের সামনে যেতে ইচ্ছা হয় না, তাদের এখানে আসা উচিত। এভাবে আপনি আবার স্বাভাবিক মানুষ হয়ে উঠতে পারেন। যে খেলোয়াড় আবার স্বাভাবিক বোধ করতে চায়, তাদের উচিত এ লিগকে বেছে নেওয়া।’