মেসির বিপক্ষে নামা হচ্ছে না রোনালদোর

এখনই দেখা হচ্ছে না দুজনেরছবি: রয়টার্স

হাজার হাজার ফুটবলপ্রেমীর ইচ্ছা পূরণ হলো না। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো রিয়াল ছেড়ে জুভেন্টাসে যাওয়ার পর যে দ্বৈরথ দেখার জন্য পিপাসার্ত হয়ে ছিল ফুটবলভক্তদের মন, সে পিপাসা এখনই মিটতে দিচ্ছে না করোনাভাইরাস।

আজ চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপপর্বের ম্যাচে লিওনেল মেসির বার্সেলোনা ও রোনালদোর জুভেন্টাস লড়বে। লড়াইয়ে মেসি থাকলেও, থাকছেন না রোনালদো। বেরসিক করোনাভাইরাস এই ম্যাচ থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে পর্তুগিজ তারকাকে।

ম্যাচ শেষে এই হাসি থাকবে তো বার্সার?
ছবি : রয়টার্স

গত আন্তর্জাতিক বিরতিতে করোনায় আক্রান্ত হওয়া রোনালদো যে এই ম্যাচের আগে এমন ঝামেলায় পড়বেন, তা সপ্তাহ দু-এক আগেই বোঝা গিয়েছিল। উয়েফার নিয়ম অনুযায়ী, চ্যাম্পিয়নস লিগ বা ইউরোপা লিগের ম্যাচে খেলতে হলে একজন খেলোয়াড়কে ম্যাচের ৭ দিন আগে করোনা ‘নেগেটিভ’ প্রমাণিত হতে হয়। সে ক্ষেত্রে রোনালদো যদি বার্সেলোনার বিপক্ষে আজ রাতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ম্যাচটা খেলতে চান, তাঁকে করোনা নেগেটিভ প্রমাণিত হতে হতো ২১ অক্টোবরের মধ্যে।

১৩ অক্টোবর করোনা পজিটিভ হওয়া রোনালদোর শরীরে ৮ দিনের মধ্যেই ভাইরাসের উপস্থিতি যে আর থাকবে না, এমনটা হওয়ার সম্ভাবনা কার্যত নেই—সেটা আগেই অনুমান করা হয়েছিল। দ্বিতীয় করোনা পরীক্ষা সে সন্দেহকে বাস্তবে পরিণত করেছে। তাও ক্ষীণ একটা আশা ছিল, ম্যাচ শুরুর অন্তত ৪৮ ঘণ্টা আগে হয়তো করোনা পরীক্ষায় উতরে যাবেন রোনালদো, উয়েফার অনুমতি সাপেক্ষে মেসির বিপক্ষে খেলতেও পারবেন। সেটি হয়নি। আরেকবার মাঠে মেসি-রোনালদো দ্বৈরথ দেখার রোমাঞ্চটা চেপেই রাখতে হচ্ছে আপাতত। অপেক্ষা এখন দ্বিতীয় লেগের। সে লেগে যদি দুজনের দেখা হয়!

পর্তুগিজ তারকা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে থাকার দিনগুলোতে মেসি-রোনালদোর মধ্যে তিনবার দেখা হয়েছিল চ্যাম্পিয়নস লিগে। কিন্তু ২০০৯ সালে রোনালদো ইউনাইটেড ছেড়ে রিয়ালে আসার পর এটি দ্বৈরথে রূপ নেয়। রোনালদো স্পেনে যত দিন ছিলেন, লিগে তো অন্তত দুবার দেখা হতোই, চ্যাম্পিয়নস লিগেও রোনালদো-মেসির দেখা হয়েছিল একবার—২০১১ চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালে।

এর বাইরে কোপা দেল রে, স্প্যানিশ সুপারকোপাতে রিয়াল-বার্সার দেখা হতো মোটামুটি নিয়মিত। ২০১৮ সালে রোনালদো রিয়াল ছেড়ে জুভেন্টাসে চলে যাওয়ার পরপরই এই দ্বৈরথে দীর্ঘ বিরতি পড়ে। এবার চ্যাম্পিয়নস লিগের সৌজন্যে সেই মেসি-রোনালদোর দ্বৈরথের তাও যা একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল, করোনা শেষ করে দিল সেটিও।

রোনালদোহীন জুভেন্টাসের দায়িত্ব নিতে হবে দিবালাকে
ছবি : রয়টার্স

রোনালদোর না থাকার সংবাদটা বার্সা কোচ রোনাল্ড কোমানের কানে মধু ঢালবে, নিশ্চিত। এমনিতেই এল ক্লাসিকো হেরে বসেছেন, রোনালদোর নৈপুণ্যে জুভেন্টাসের কাছে হারলে হয়তো এখনই চাকরি নিয়ে টানাটানি পড়ে যেত তাঁর। রোনালদোহীন জুভেন্টাস এমনিতেই খোঁড়াচ্ছে, লিগে টানা তিন ম্যাচ ড্র করেছে তাঁরা।

চ্যাম্পিয়নস লিগের প্রথম ম্যাচে দিনামো কিয়েভের বিপক্ষে জিতলেও, খুব যে ভালো খেলেছে, তা নয়। রোনালদো ছাড়াও এই ম্যাচে চোটের কারণে খেলবেন না ডিফেন্ডার জর্জো কিয়েল্লিনি, আলেক্স সান্দ্রো ও ম্যাটাইস ডি লিখট। অভিজ্ঞ লিওনার্দো বোনুচ্চিকে তাই দানিলো ও মেরিহ দেমিরালের সঙ্গে সামলাতে হবে রক্ষণভাগ।

ওদিকে ফেরেনৎভারোসের বিপক্ষে বার্সার ৫-০ গোলে জয়ের ম্যাচে একমাত্র নেতিবাচক দিক ছিল লাল কার্ড দেখে ডিফেন্ডার জেরার্ড পিকের মাঠ ছাড়ার ঘটনাটা। এই ম্যাচে তাই পিকে খেলবেন না। উরুগুয়ের তরুণ সেন্টারব্যাক রোনালদ আরাউহো জুটি বাঁধবেন ক্লেমঁ লংলের সঙ্গে। চোটের কারণে নেই কুতিনহো। ফলে মেসি-ফাতির সঙ্গে আক্রমণভাগে আর দুজন কে কে থাকবে, এখনো নিশ্চিত নয়।

সম্ভাব্য একাদশ -
বার্সেলোনা : নেতো ; সার্জি রবের্তো, রোনালদ আরাউহো, ক্লেমঁ লংলে, জর্দি আলবা ; মিরালেম পিয়ানিচ, ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং ; আতোয়ান গ্রিজমান, ফ্রানসিস্কো ত্রিনকাও, আনসু ফাতি ; লিওনেল মেসি।

জুভেন্টাস : ভয়চেখ সেজনি ; দানিলো, লিওনার্দো বোনুচ্চি, মেরিহ দেমিরাল ; হুয়ান কুয়াদ্রাদো, রদ্রিগো বেনতাঙ্কুর, আদ্রিয়েঁ রাবিও, দেয়ান কুলুসেভস্কি ; অ্যারন র‍্যামসি ; আলভারো মোরাতা, পাওলো দিবালা