মেসির হাজার দিনের দুঃখ

মেসি এই দুঃখ রাখবেন কোথায়?ছবি: এএফপি

সময়টা লিওনেল মেসির পক্ষে অনেক লম্বাই। হাজার দিন পেরিয়ে গেল, তা–ও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে খরা কাটলই না তাঁর। ‘এল ক্লাসিকো’ দ্বৈরথে ৭ ম্যাচে আর্জেন্টাইন তারকা নিজে তো গোল করতে পারেনইনি, করাতেও পারেননি কোনো গোল। নিজের দুর্দান্ত ক্যারিয়ার, যেখানে সম্ভব–অসম্ভব প্রায় সব রেকর্ডই নিজের করে রেখেছেন, সেখানে রিয়ালের বিপক্ষে এক হাজার দিন ধরে তিনি ব্যর্থ, এমনটা বার্সা সমর্থকদের জন্য হজম করাও তো কষ্টকর ব্যাপার।

কাল রিয়ালের বিপক্ষে মাদ্রিদের আলফ্রেদো দি স্তেফানো স্টেডিয়ামে ২–১ গোলে হেরে গেছে বার্সেলোনা। চলতি মৌসুমে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে লড়াইয়ে এটা বার্সেলোনার দ্বিতীয় হার। দুটি ম্যাচেই আগাগোড়া ব্যর্থ মেসি। কাল গোটা ম্যাচেই তাঁকে নখদন্তহীন বানিয়ে রেখেছিল রিয়ালের রক্ষণ। অথচ রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে তাঁর যত গোল কিংবা গোলে সহায়তা আছে, তাঁর ধারেকাছেও নেই অনেক বড় বড় তারকা। সেই মেসিই যেন গোল করতেই ভুলে গেছেন এই মহারণে!

এমন কিছু ক্যারিয়ারে দেখেননি মেসি।
ছবি: এএফপি

নড়বড়ে রক্ষণ নিয়েই কাল বার্সেলোনার বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল রিয়াল। চোটের কারণে ছিলেন না দলের রক্ষণের ‘হারকিউলিস’ সের্হিও রামোস। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কারণে ছিলেন না রাফায়েল ভারান। কিন্তু মেসিকে বোতলবন্দী করে রাখতে অসুবিধাই হয়নি বাকিদের। গোটা ম্যাচে তিনি সাতটি শট নিয়েছেন। যার দুটি রেখেছিলেন গোলপোস্ট বরাবরই। কিন্তু তিনি কোনোবারই গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়াকে আতঙ্কিত করতে পারেননি। পারেননি রিয়াল–রক্ষণে এতটুকু ফাটল ধরাতে।

মেসি কাল রিয়ালের গোলে ৭টি শট নিয়েও গোল করতে পারেননি।
ছবি: এএফপি

এল ক্লাসিকোতে মেসির গোল না পাওয়ার সঙ্গে আরেকটি ব্যাপার কাকতালীয়ভাবেই জড়িয়ে আছে। তিনি রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে দ্বৈরথে শেষ গোল পেয়েছিলেন ২০১৮ সালে। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো সে বছরই রিয়াল ছেড়ে জুভেন্টাসে যোগ দেন। রোনালদো চলে যাওয়ার পর থেকে মেসির এ লড়াইয়ে গোল–খরার ব্যাপারটি বিশেষ ব্যাপার হিসেবেই চিহ্নিত করা হচ্ছে ফুটবল দুনিয়ায়। যে খেলোয়াড় এক এল ক্লাসিকোতেই রেকর্ডসংখ্যক ২৬টি গোল করেছেন, তিনি সেখানে গোল করা ভুলে যাবেন? এমন নয় যে মেসি ছন্দ হারিয়েছেন। বার্সেলোনার হয়ে অন্য ম্যাচগুলোতে তো ঠিকই মেসি–ঝলক চোখে পড়ছে ফুটবলপ্রেমীদের—রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে খেলা হলেই মেসি ব্যর্থ কেন!

কাল প্রথম থেকেই বার্সেলোনাকে অসহায় মনে হয়েছে। প্রথমার্ধেই তারা পিছিয়ে পড়ে ২–০ গোলে। প্রথমার্ধ বললে বাড়িয়ে বলা হবে, বার্সেলোনা ম্যাচে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বসে প্রথম ৩০ মিনিটের মধ্যেই। করিম বেনজেমা আর টনি ক্রুসের গোলের পর অস্কার মিনগেজার গোলে সম্মান কিছুটা রক্ষা হয় মেসিদের।